আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রেমের ফাঁদ পেতে এক কলেজছাত্রীকে দিনের পর দিন গণধর্ষণ ও ব্ল্যাকমেল। এই ঘটনার অভিযোগে তিন যুবককে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্যে দু’জন কলেজ পড়ুয়া। কর্ণাটকের মাগাদি শহরের এই নৃশংস ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের নাম বিকাশ, প্রশান্ত ও চেতন। ১৯ বছর বয়সি ওই নির্যাতিতা ছাত্রীর সঙ্গে মাস ছয়েক আগে আলাপ হয়েছিল মূল অভিযুক্ত বিকাশের। অভিযোগ, ভালবাসার অভিনয় করে তরুণীকে বন্ধু প্রশান্তর বাড়িতে নিয়ে যেত বিকাশ। সেখানে তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।
তদন্তে জানা গিয়েছে, এই কুকীর্তিতে শামিল ছিল তাদের বন্ধু চেতনও। সে মোবাইলে নানারকম অশ্লীল ও আপত্তিকর মুহূর্তের ছবি এবং ভিডিও তুলে রাখে। শুধু তাই নয়, এরপর সেই গোপন ফুটেজ দেখিয়ে শুরু হয় নতুন করে অত্যাচার। জানা গিয়েছে দিনের পর দিন তরুণীর ছবি-ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করার 'ব্ল্যাকমেল' চলত৷ এই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ওই তরুণীকে তার অনিচ্ছা সত্ত্বেও যখন-তখন দেখা করতে বাধ্য করত তিন অভিযুক্ত।
দিনের পর দিন এই লাঞ্ছনা সহ্য করতে না পেরে গত বুধবার মাগাদি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই ছাত্রী। পুলিশ তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ করে তিন অভিযুক্তকেই গ্রেপ্তার করেছে। জেলার পুলিশ সুপার শ্রীনিবাস গৌড়া জানিয়েছেন, বর্তমানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ জানতে পেরেছে, অভিযুক্তরা সকলেই ওই ছাত্রীর পূর্বপরিচিত। তাদের বয়ান অনুযায়ী পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখা হবে।
অন্যদিকে, কিছুদিন আগেই গুজরাটের রাজকোটে হাড়হিম ঘটনা। মাত্র ছয় বছরের এক শিশুকে যৌন নির্যাতনের চেষ্টা করা হয়। শিশু তাতে বাধা দেওয়ায় তার উপর ভয়ঙ্কর আক্রমণ চালানো হয়। ঘটনা ঘিরে সম্প্রতি দেশব্যাপী চরম উত্তেজনা। ঘটনার জেরে পুলিশ তল্লাশি অভিযান শুরু করে। অবশেষে ৩৫ বছরের এক খেতমজুরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে আতকোট এলাকায়। দাহোদ জেলার একটি গরিব পরিবার সেখানে মাঠে কাজ করত। পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৪ ডিসেম্বর শিশুর বাবা-মা মাঠে কাজ করতে গিয়েছিলেন। শিশুটি তখন একা খেলা করছিল। অভিযোগ, সেই সময় অভিযুক্ত এসে তাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় এবং ধর্ষণের চেষ্টা করে।
শিশুর চিৎকার-চেঁচামেচিতে ভয় পেয়ে অভিযুক্ত তার গোপনাঙ্গে একটি লোহার রড ঢুকিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। এতে তার প্রচণ্ড রক্তপাত শুরু হয়। এরপরই অভিযুক্ত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। দীর্ঘ সময় শিশু নিখোঁজ থাকায় পরিবারের লোকেরা তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে মাঠের কাছেই গুরুতর আহত অবস্থায় মেয়েকে পড়ে থাকতে দেখেন। দ্রুত তাকে রাজকোটের জান্না হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে শিশুর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। আশা করা যায়, আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
রাজকোট গ্রামীণ এলাকার পুলিশ সুপার (এসপি) বিজয়সিংহ গুর্জর জানিয়েছেন, ঘটনার পরই পুলিশ জোরদার তল্লাশি শুরু করে। তারা প্রায় ১০টি দল তৈরি করে। কমপক্ষে ১০০ জন সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। অভিযুক্তকে শনাক্ত করার জন্য পুলিশ শিশু বিশেষজ্ঞদের সামনে প্রায় ১০ জন ব্যক্তিকে শিশুর কাছে নিয়ে আসে।
শিশু অভিযুক্তকে শনাক্ত করে৷ রামসিংহ তেরাসিংহ দাদবেজার নামে এক খেতমজুরকে মূল অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্ত করে। সে মধ্যপ্রদেশের আলীরাজপুর জেলার বাসিন্দা৷ অভিযুক্ত বিবাহিত এবং তিন সন্তানের বাবা। দাদবেজারকে ঘটনাস্থলের পাশের একটি মাঠ থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে এসপি বলেন, তদন্তে এখনও পর্যন্ত অন্য কারও জড়িত থাকার প্রমাণ মেলেনি। তিনি জানান, “এই ঘটনায় শুধু একজন অভিযুক্তই আছে। তাকে পাশের মাঠ থেকেই পাকড়াও করা হয়েছে।” পুলিশ একদিকে শিশুর দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার দিকে নজর রাখছে, অন্যদিকে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ করার কাজও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
