আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজ্যে চলছে এসআইআর-এর এনুমারেশন ফর্ম পূরণ। একাধিক জায়গায় কাজ প্রায় শেষের মুখে। এখনও পর্যন্ত, রাজ্যে খসড়া তালিকা থেকে বাদ হতে পারেন কতজন, সেই সংখ্যা সামনে এসেছে। এসবের মাঝেই সামনে এল বিএলও'কে গালিগালাজের অভিযোগ।
ঘটনাস্থল আবার খাস কলকাতা। জানা গিয়েছে, অভিযুক্তর দু'টি ভোটার কার্ড রয়েছে। আগে যে জায়গায় বসবাস করতেন, পরে সেখান থেকে চলে যান অন্যত্র। দু'জায়গাতেই নাকি ভোটার কার্ড করিয়েছিলেন। এবার তিনি দু'জায়গায় ফর্ম জমা দিতে চেয়েছিলেন।
বালিগঞ্জ ১০৫ নম্বর পার্ট ও রাসবিহারি বিধানসভার সাউথ সিটির ২৫৯ পার্টে একইদিনে দু'জায়গাতেই এনুমারেশন ফর্ম জমাও করেন। কিন্তু এই ফর্ম জমাতেই ঘটে বিপত্তি। জানা গিয়েছে, প্রথমে বালিগঞ্জ পরে সাউথ সিটিতে ফর্ম জমা করতে গিয়ে ২৫৯ পার্টের বিএলও মুনমুম দত্তের হাতে ধরা পড়েন তিনি। অভিযোগ, বালিগঞ্জে ফর্ম জমার কথা আবার বেমালুম চেপে গিয়ে, ফর্ম জমা করতে যান সাউথ সিটিতে। বিএলও ফর্ম জমা না নিতে চাইলে শুরু হয় তর্ক-বিতর্ক। তা এক সময়ে পৌঁছে যায় গালিগালাজের স্তরে। অভিযোগ, বিএলও ফর্ম না নিতে চাইলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন তিনি। তারপরেই বিএলও মুনমুন দত্ত যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন৷
অন্যদিকে অভিযুক্তর দাবি, বিএলও তাঁর সঙ্গে দুর্বব্যবহার করেন এবং তাঁর নাম নাম অযথা বাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। দুজায়গার ভোটার তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে, বলেও অভিযুক্ত স্বীকার করে নিয়েছেন। সূত্রের খবর তেমনটাই। তাঁর দাবি সাউথ সিটিতে ফর্ম জমা নেওয়া হলে, বালিগঞ্জ নাম কেটে দিতেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, তবে পুরো অভিযোগ অনলাইনে হয়েছে অভিযোগকারী এখনও থানায় গিয়ে আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেননি। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এখনও কাউকে ডেকে পাঠানো হয়নি বলেই জানিয়েছে পুলিশ। তবে অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
এসআইআর-এর প্রথম পর্বের কাজ শেষের মুখে। এই সময়কালে এসআইআর আতঙ্কে একাধিক সাধারণ মানুষ, বিএলও'র মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যের শাসক দল সুর চড়িয়েছে একাধিকবার। সেসব সঙ্গে নিয়েই চলছে প্রক্রিয়াও।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দপ্তর থেকে বুধবার পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে, পশ্চিমবঙ্গে খসড়া তালিকায় বাদ যাওয়া মোট ভোটার সংখ্যা-
মৃত ভোটার রয়েছেন- ২৪১৪৭৫০ জন।
নিখোঁজ ভোটার- ১১৫৭৮৮৯জন।
ডুপ্লিকেট ভোটার- ১৯৮৯১৪জন।
স্থানান্তরিত ভোটার- ১৯৮৯৯১৪জন।
এমনটাই জানিয়েছে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দপ্তর।
ফর্ম পূরণের ক্ষেত্রে যে বিষয়টি উঠে এসেছে তা হল, বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় বাবা-মা এর নাম নেই, কিন্তু ঠাকুরদা-ঠাকুমা-এর নামের সঙ্গে ম্যাপিং করে এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করেছেন অনেকেই। অনেকক্ষেত্রে বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানের বয়সের ফারাকও চোখে পড়ার মতো। বেশ কিছু ক্ষেত্রে, বানান সংক্রান্ত কারণে সমস্যা দেখা গিয়েছে বলে খবর। কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে, ২০০২-এ হাতে লেখা হত তথ্য এবং লেখা হত বাংলায়। ২০২৫-এ লেখা হচ্ছে ইংরেজিতে এবং ডিজিটালাইজেশন হচ্ছে। সেই কারণে বিরাট ফারাক দেখা দিচ্ছে বানানের ক্ষেত্রে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সয়াহতায় এইসব সমস্যা সমাধান করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
