আজকাল ওয়েবডেস্ক: বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের লাহোরে ইজরায়েল-বিরোধী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে পুলিশ এবং তেহরিক-ই-লাব্বাইকের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন বহু মানুষ। শুক্রবার তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি)-এর পরিকল্পনাকৃত 'লাব্বাইক ইয়া আকসা মিলিয়ন মার্চ'-এর আগে পাকিস্তান সরকার ইসলামাবাদ এবং রাওয়ালপিন্ডিতে মোবাইল এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করেছে এবং রাজধানীর প্রবেশ এবং প্রস্থান পথ বন্ধ করে দিয়েছে বলে খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে। উল্লেখ্য, শুক্রবার ইসলামাবাদে মার্কিন দূতাবাসের বাইরে তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তানের ইজরায়েল-বিরোধী বিক্ষোভের কথা জানায়। তার পরেই, পাঞ্জাব পুলিশ টিএলপির প্রধান সাদ হুসেন রিজভিকে গ্রেপ্তার করতে টিএলপির সদর দপ্তরে অভিযান চালায়।
তথ্য, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার মধ্যরাত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দুটি শহরে মোবাইল এবং ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত করার জন্য পাকিস্তান টেলিযোগাযোগ কর্তৃপক্ষকে (পিটিএ) নির্দেশ দিয়েছে। পাঞ্জাব সরকার তাৎক্ষণিকভাবে প্রদেশ জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করেছে, ১০ দিনের জন্য সকল ধরণের বিক্ষোভ, সমাবেশ এবং জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে। প্রাদেশিক স্বরাষ্ট্র বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে জনসমাগমস্থল, রাস্তাঘাট এবং খোলা জায়গায় চার বা ততোধিক লোকের জমায়েত নিষিদ্ধ থাকবে। তবে, নামাজ, বিয়ে, অফিস বা আদালত প্রাঙ্গণে এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানকে কোনও ক্ষেপনাস্ত্র বিক্রি করা হচ্ছে না, জানাল আমেরিকা, কপাল চাপড়াচ্ছে ইসলামাবাদ! ...
রাওয়ালপিন্ডিতে, ১১ অক্টোবর পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে, অন্যদিকে ইসলামাবাদে, সমস্ত প্রধান প্রবেশপথে ব্যারিকেড করা হয়েছে। রেড জোন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, শুধুমাত্র মার্গালা রোড দিয়ে অনুমোদিত কর্মীদের প্রবেশাধিকার সীমিত। টিএলপির গণবিক্ষোভের জন্য ফেডারেল রাজধানী প্রস্তুত থাকায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, পাকিস্তানের সঙ্গে তালিবানদের সম্পর্কের নাটকীয় অবনতির পরই বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল।। উল্লেখ্য, ইসলামাবাদ দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তান তালিবান বা তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)-কে অর্থায়ন এবং অস্ত্র সরবরাহের জন্য আফগানিস্তানকে কাঠগড়ায় তুলেছে। স্থানীয় প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, শহিদ আব্দুল হক স্কোয়ারের কাছে বিমান হামলার লক্ষ্য ছিল টিটিপি প্রধান নূর ওয়ালি মেহসুদকে হত্যা করা। নূর ওয়ালি মেহসুদ ২০১৮ সালে এই সংগঠনের নেতৃত্ব গ্রহণ করেছিলেন।
তবে, মেহসুদের একটি অডিও বার্তায় দাবি করা হয়েছে যে- তিনি নিরাপদে আছেন, তাঁর মৃত্যু বা নিখোঁজের খবর অস্বীকার করা হয়েছে। পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম দাবি করার পর এটি স্পষ্ট হয়েছে, ৯/১১ হামলার পর মেহসুদ আমেরিকার সঙ্গে পাকিস্তানের জোটকে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখেছিলেন, তিনি ইসলামাবাদের জন্য ক্রমাগত মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ আফগান তালিবানদের প্রতি কঠোর সতর্কবার্তা দেওয়ার ২৪ ঘন্টা পরে পাকিস্তানি হামলাটি ঘটেছে।
জাতীয় পরিষদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আসিফ স্পষ্টভাবে বলেছিলেন যে, পাকিস্তানকে লক্ষ্য করে জঙ্গিদের আফগান ভূখণ্ড ব্যবহার অব্যাহত রাখার বিষয়ে পাকিস্তানের ধৈর্যচ্যূতি ঘটেছে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছিলেন, 'যথেষ্ট হয়েছে।'
তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পাকিস্তানি সামরিক কর্মীদের লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে সর্বশেষটি ছিল চলতি মাসের আট তারিখ। বুধবার আফগান সীমান্তের কাছে টিটিপির এক মারাত্মক অতর্কিত হামলায় দুই শীর্ষ কর্মকর্তা-সহ ১১ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হন।
