ফের তীব্র ভূমিকম্প জাপানে, কেঁপে উঠল বিস্তীর্ণ অঞ্চল, ফের সুনামি সতর্কতা?

বুধবার ফের ভূমিকম্প জাপানে। ছবি: এক্স।

আজকাল ওয়েবডেস্ক: সোমবার ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্প। মঙ্গলবার ৬.৭ মাত্রার কম্পন অনুভূত হয় বলে জানা গিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে। ফের বুধবার। প্রবল কম্পন জাপানে।

বুধবার কম্পন অনুভূত হয় জাপানের পূর্ব আওমোরি এবং হোক্কাইডো প্রিফেকচারে অনুভূত হয়েছিল। ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল ৩০ কিলোমিটার। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৫। জাপানি সিসমিক স্কেলে মাত্রা ৫.৯। যদিও প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য, বুধবারের কম্পনের কারণে কোনও সুনামি সতর্কতা জারি হয়নি। নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা।

 

এর আগে, সোমবারের কম্পনে এক প্রকার বিপর্যস্ত জাপান। সোমবার স্থানীয় সময় রাত সওয়া ১১টায় জাপানের উত্তর ও পূর্বের একটি বড় অংশে ভূমিকম্প আঘাত হানার পর হোক্কাইডো, আওমোরি এবং ইওয়াতে প্রিফেকচারের জন্য সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়।  সোমবার রাতে (স্থানীয় সময়) ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে জাপান উপকূল। জাপানের আবহাওয়া সংস্থা জানায়, ভূমিকম্পের ফলে সুনামি সতর্কাতা জারি করা হয়। উপকূল এলাকায় তিন মিটার উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়েছে। মানুষ আতঙ্কিত। উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছে প্রশাসন।  হাচিনোহে শহরের আওমোরি শহরের একটি হোটেলে বেশ কয়েকজন আহত হন। এই অঞ্চলের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি নিরাপত্তা পরীক্ষা চালাচ্ছেন বলে জানা গিয়েছিল সোমবার মধ্যরাতেই। সোমবারের ভূমিকম্পের পর প্রায় ৯০ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। 

 

ঘটনার পর, সামনে আসে সেখানকার এক বাসিন্দার শেয়ার করা, ভয় ধরানো ভিডিও। তাতে দেখা গিয়েছে, প্রবল কম্পনে রীতিমতো কাঁপছে সেখানকার দেওয়াল, কম্পিউটার পড়ে যাওয়ার জোগাড়। টেবিলের উপরে থাকা কাগজপত্র পড়ে যেতে দেখা গিয়েছে কম্পনের চোটে। কম্পনের পর, প্রধানমন্ত্রী সানে তাকাইচি সাংবাদিকদের বলেন, 'সরকার জরুরি ভিত্তিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের জন্য একটি জরুরি টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে। সঙ্গেই জানান, মানুষের জীবন সবার আগে। প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালাচ্ছে যথাসম্ভব।'

 

মঙ্গলবার জাপানের আবহাওয়া সংস্থা, দেশটির বাসিন্দাদের জন্য সতর্কবার্তা জারি করে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলের কাছাকাছি বসবাসকারীদের এই সপ্তাহ জুড়ে সতর্ক থাকতে বলা হয় তাতে। তাদের প্রয়োজনে সেখান থেকে সরে যেতে হতে পারে এবং স্বল্প সময়ের নোটিশে তাদের বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়ে।

 

জাপান কম্পন প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে মহাকম্পের সতর্কতা জারি করেছিল জাপান সরকার। সে দেশের সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, নানকাই ভূতাত্ত্বিক খাত বরাবর ‘মহাকম্প’-এ কাঁপতে পারে জাপান। এর ফলে রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা হতে পারে ৮.০ বা তারও বেশি। এর ফলে সুনামির সম্ভাবনাও রয়েছে। প্রাণ হারাতে পারেন প্রায় তিন লক্ষ মানুষ। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হতে পারে প্রায় দুই ট্রিলিয়ন ডলার।

গত ১,৪০০ বছর ধরে, নানকাই খাতে প্রতি ১০০ থেকে ২০০ বছরে একবার মহাভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এর মধ্যে সর্বশেষটি ঘটেছিল ১৯৪৬ সালে। ২০১২-১৩ সালেও এই সম্ভাব্য ‘মহাকম্প’ নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল জাপানের সরকার। তখন সম্ভাব্য মৃত্যু সংখ্যা তিন লক্ষ ২৩ হাজার জন বলে জানা যায়।