আজকাল ওয়েবডেস্ক: বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকা রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ অথবা সাম্প্রতিক ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আরও একটি সংঘর্ষ যে কোনও সময় শুরু হয়ে যেতে পারে। চীন এই অঞ্চলে ক্রমাগত তার সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি করছে। তাইওয়ান প্রণালী, প্রশান্ত মহাসাগর হোক অথবা জাপান সাগর, চীনা নৌবাহিনী এই অঞ্চলে তার প্রভাব বিস্তার করছে। এই কার্যকলাপের কারণে, তাইওয়ান, ফিলিপিন্স, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের মতো আমেরিকার মিত্র দেশগুলির মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। বেজিংয়ের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক খুব একটা ভাল নয় এবং উভয় দেশই একে অপরের সুবিধা নেওয়ার একটি সুযোগও হাতছাড়া করছে না। 

চীনের সামরিক অগ্রগতির পরিপ্রেক্ষিতে, অন্যান্য এশীয় দেশগুলি চীনা আগ্রাসনের মোকাবিলায় তাদের কৌশলগত অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি করছে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি মানচিত্রে দেখানো হয়েছে আমেরিকার মিত্র দেশ জাপান চীনের উপকূলীয় অঞ্চলে পৌঁছতে সক্ষম নতুন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করতে পারে কোন কোন অঞ্চলে সেই সম্পর্কে বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়েছে। যদি জাপান এই অবস্থান থেকে চীনকে আক্রমণ করে, তবে তারা সহজেই চীনা নৌবাহিনীর জাহাজগুলিকে নিশানা করতে পারবে।

বিভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, জাপান চীনের উপকূলরেখার মধ্যে অবস্থিত ঘাঁটিগুলিতে টাইপ ১২ ক্ষেপণাস্ত্রের একটি উন্নত সংস্করণ মোতায়েন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ৬২১ মাইল, যার অর্থ এটি চীনের প্রধান শহরগুলিতে পৌঁছতে সক্ষম এবং গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি ধ্বংস করতে পারে। টাইপ ১২ ক্ষেপণাস্ত্র টোকিওকে তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী চীনকে পাল্টা আক্রমণ করার জন্য বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করবে।

আরও পড়ুন: অভিযোগ, গ্রেপ্তারি, অবশেষে বেকসুর খালাস, ১৭ বছরে কোন খাতে বয়ে গিয়েছে মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলার জল, দেখে নিন

উল্লেখ্য, আমেরিকার প্রতিরক্ষা দ্বীপগুলির প্রথম দ্বীপ হল জাপান। এই কৌশলের অধীনে, তাইওয়ান এবং ফিলিপিন্সের দক্ষিণে অবস্থিত এবং  তাদের জলসীমায় চীনের সামরিক কার্যকলাপ সীমিত করতে পারে। এর মধ্যে পূর্ব এবং দক্ষিণ চীন সাগরের বিতর্কিত এলাকাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিম দ্বীপপুঞ্জ এবং তাইওয়ানের কাছে মার্কিন দ্বীপ শৃঙ্খলগুলির প্রধান লক্ষ্য চীন। যে অঞ্চলগুলি বেজিং বলপ্রয়োগে দখলের হুমকি দিয়ে রেখেছে।

টাইপ ১২ ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নয়ন জাপানের বাইরের দ্বীপের প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করার অব্যাহত প্রচেষ্টা। এছাড়াও, টোকিও তার দু’টি যুদ্ধজাহাজকে প্রস্তুত করছে যাতে সেগুলিতে দ্রুত যুদ্ধবিমান ওঠানামা করতে পারে।

আরও পড়ুন: দীর্ঘ ১৭ বছর তদন্ত করেও কিছু করতে পারল না এনআইএ! ২০০৮ সালে কী হয়েছিল মালেগাঁওয়ে?

এই ঘাঁটিটি জাপানের দক্ষিণতম প্রধান দ্বীপ কিউশুতে অবস্থিত। উল্লেখযোগ্যভাবে, পূর্ব চীন সাগর কিউশুর পশ্চিমে অবস্থিত। মানচিত্র অনুযায়ী, এই ঘাঁটিতে মোতায়েন করা টাইপ ১২-এর মতো ক্ষেপণাস্ত্রগুলি চীনের পূর্ব উপকূলকে নিশানা করতে পারে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে ক্ষেপণাস্ত্রগুলি চলতি আর্থিক বর্ষের মধ্যেই মোতায়েন করা হবে। জাপানের উদ্দেশ্য হল চীনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধকে আরও মজবুত করে তোলা। কারণ, ইতিমধ্যেই  জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিম দ্বীপপুঞ্জের কাছে চীন তার নৌসেনার উপস্থিতি আরও তীব্র করেছে।