আজকাল ওয়েবডেস্ক: মঙ্গলবার মার্কিন বিচার দপ্তর প্রয়াত অর্থলগ্নিকারী ও দণ্ডিত যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টিন সংক্রান্ত তদন্তের সঙ্গে যুক্ত আরও এক দফা নথি প্রকাশ করেছে। এই নতুন নথিতে প্রাক্তন ও বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম উঠে এসেছে এপস্টিনের ব্যক্তিগত জেট বিমানের যাত্রী তালিকার প্রসঙ্গে। তবে বিচার দপ্তর স্পষ্ট করে জানিয়েছে, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কোনও ধরনের অপরাধমূলক অভিযোগ আনা হয়নি।
প্রকাশিত এই দফায় প্রায় ৩০ হাজার পৃষ্ঠার নথি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যার বড় অংশই কালো করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে একাধিক ভিডিও ক্লিপ, যার মধ্যে কিছু নাকি কারাগারের ভেতরে করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০১৯ সালে নিউইয়র্কের একটি জেলে এপস্টিনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। সরকারি ভাবে একে আত্মহত্যা বলা হলেও, তার মৃত্যু ঘিরে বিতর্ক আজও থামেনি।
নতুন প্রকাশিত নথিগুলোর মধ্যে একটি ইমেল বিশেষভাবে নজর কাড়ছে। ২০২০ সালের ৭ জানুয়ারির ওই ইমেলে লেখা রয়েছে, “ডোনাল্ড ট্রাম্প এপস্টিনের ব্যক্তিগত জেটে আগের চেয়েও অনেক বেশি বার ভ্রমণ করেছেন।” সেখানে প্রেরক ও প্রাপকের নাম গোপন রাখা হলেও, ইমেলের নিচে নিউইয়র্কের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্টের এক সহকারী মার্কিন কৌঁসুলির উল্লেখ রয়েছে।
ইমেল অনুযায়ী, ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে ট্রাম্প অন্তত আটটি ফ্লাইটে এপস্টিনের জেটে যাত্রী হিসেবে ছিলেন। এর মধ্যে চারটি ফ্লাইটে তাঁর সঙ্গে ছিলেন ঘিসলেন ম্যাক্সওয়েল—এপস্টিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী, যিনি বর্তমানে যৌন পাচার মামলায় দোষী সাব্যস্ত। ইমেলে আরও বলা হয়েছে, ট্রাম্প নিজের তৎকালীন স্ত্রী মারলা ম্যাপলস, কন্যা টিফানি এবং পুত্র এরিককে সঙ্গে নিয়ে ভ্রমণ করেছিলেন।
১৯৯৩ সালের ফ্লাইটে শুধুমাত্র ট্রাম্প ও এপস্টিন যাত্রী হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিলেন। অন্য একটি ফ্লাইটে এপস্টিন, ট্রাম্প এবং ২০ বছর বয়সী এক ব্যক্তির নাম রয়েছে, যদিও সেই ব্যক্তির পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে। এছাড়া আরও দুটি ফ্লাইটে এমন দুই নারীর উপস্থিতির উল্লেখ রয়েছে, যাঁরা ম্যাক্সওয়েল মামলায় সম্ভাব্য সাক্ষী হতে পারতেন বলে ইমেলে দাবি করা হয়েছে।
তবে নথি প্রকাশের কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিচার দপ্তর জানায়, সদ্য প্রকাশিত কিছু নথিতে ট্রাম্প সম্পর্কে “ভিত্তিহীন ও অতিরঞ্জিত” অভিযোগ রয়েছে, যা ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে এফবিআইয়ের কাছে জমা দেওয়া হয়েছিল।
এই নথিগুলি এমন এক আইনের আওতায় প্রকাশ করা হচ্ছে, যা গত মাসে কংগ্রেসে পাস হয়েছে। যেখানে এপস্টিন সংক্রান্ত সব ফাইল প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর আগেও ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে এক দফা নথি প্রকাশ হয়েছিল, যদিও সেগুলি ব্যাপকভাবে রেড্যাক্টেড থাকায় সমালোচনার মুখে পড়ে। বিশেষত ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে রিপাবলিকান শিবিরে এই বিষয়টি নতুন করে অস্বস্তি তৈরি করেছে।
আগের নথি প্রকাশে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সঙ্গে এপস্টিনের কিছু অপ্রকাশিত ছবি এবং ১৯৯৬ সালের একটি ফৌজদারি অভিযোগের বিবরণ সামনে আসে। ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, এই নথিগুলি তাঁর ও তাঁর দলের “অভূতপূর্ব সাফল্য থেকে নজর ঘোরানোর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।”
