আজকাল ওয়েবডেস্ক: গাজিয়াবাদে সম্প্রতি এক ভয়াবহ কাণ্ড ঘটেছে। একটি বহুতল আবাসিক ভবনের লবিতে দুটি পোষা জার্মান শেফার্ড কুকুরের তাড়া খেয়ে এক যুবতী সিঁড়ি থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ওই যুবতী লিফটের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ঠিক এমন সময় তাঁর প্রতিবেশীর পোষা দুটি কুকুর হঠাৎ করেই তাঁর দিকে ধেয়ে আসে। আতঙ্কিত হয়ে তিনি দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তড়িঘড়ি করতে গিয়ে সেই সময় তিনি সিঁড়ি থেকে হোঁচট খেয়ে পড়ে যান।

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার পর আহত যুবতীর বাবা এই ঘটনার জেরে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে নন্দগ্রাম থানা পুলিশ প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (Bharatiya Nyaya Sanhita) এর ধারা ২৯১ (প্রাণীর প্রতি অবহেলাজনিত আচরণ) অনুযায়ী এফআইআর দায়ের করেছে।

আহত যুবতীর পরিবারের সদস্যের দাবি, তিনি প্রতিদিনের মতো অফিসে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। ঠিক সেই সময়ই এই ঘটনা ঘটে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, কুকুর দুটির আচরণে আতঙ্কিত হয়ে যুবতী দৌড়ে পালাতে গিয়ে সিঁড়ি থেকে হোঁচট খেয়ে পড়ে যান। এর ফলে তিনি শরীরের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ আঘাতও পান।

এই ঘটনার ভিডিও সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে নেটিজেনদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অনেকেই কুকুরের মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনের দাবি জানিয়েছেন। একজন মন্তব্যকারী ঘটনার জেরে লেখেন, 'কুকুর কামড়ানো বা আক্রমণের মতো ঘটনায় মালিকদের সরাসরি দায়ী করে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ। তা না হলে কেউই দায়িত্বশীল হবে না।'

আরেকজন আবার লেখেন, 'যখন কুকুর থাকে, তখন কেন বাইরের কাউকে বাড়ির ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়? কিংবা সাধারণ জায়গায় কুকুরকে অবাধে ঘোরাঘুরি করতে দেওয়া হয় কেন? পুরো ঘটনা পরিষ্কার করে বলা উচিৎ- যুবতী কি তাঁদের ব্যক্তিগত জায়গায় প্রবেশ করেছিল, নাকি কুকুরগুলোই কমন এরিয়ায় ছিল?'

আরও পড়ুনঃপুলিশকর্মীকে লাঠি পেটা, চোখে মরিচের গুঁড়ো ছোড়া! দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছতেই ঘটল বিপত্তি ... 

প্রসঙ্গত, ১১ আগস্ট শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয় দিল্লি-এনসিআরের সব পথ কুকুরকে রাস্তা থেকে সরিয়ে নিতে হবে বাধ্যতামূলক ভাবে। এমনকি, এই কার্যক্রমে বাধা দিলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের। উল্লেখ্য, গত কয়েক মাসে দিল্লিতে কুকুরের কামড়ের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এবং রেবিস আক্রান্ত হয়ে একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটায় এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ১১ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি জে বি পারদেওয়ালা এবং আর মহাদেবনের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। বেঞ্চ জানিয়েছে, কেন্দ্র ছাড়া অন্য কোনও পক্ষের তরফে শুনানি হবে না। বেঞ্চের বক্তব্য, ‘আমরা এই কাজ আমাদের জন্য করছি না, এটি জনস্বার্থে। তাই এখানে কোনও আবেগের স্থান নেই। দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে’। আদালতের বেঞ্চের স্পষ্ট বার্তা, ‘সব জায়গা থেকে কুকুরকে তুলে নিয়ে গিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। আপাতত নিয়ম-কানুন ভুলে যান’।
 
এর আগে আমিকাস কুরাই গৌরব আগরওয়ালা সুপারিশ করেছিলেন কীভাবে পথ কুকুর সমস্যার সমাধান করা যায়। কিন্তু আদালতের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘কুকুরদের গৃহপালিত করার ব্যাপার আপাতত বিবেচনা করা হচ্ছে না। তাতে পরে তাদের আবার ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে’। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, ‘দিল্লিতে একটি আলাদা জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে যেখানে কুকুরদের স্থানান্তর করা হবে। কিন্তু পশু অধিকারকর্মীদের আপিলের কারণে প্রকল্প আটকে গেছে। 

একই সঙ্গে সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, প্রকাশ্য রাস্তায় আর পথকুকুরদের খাওয়ানো যাবে না। পথকুকুরদের খাওয়ানোর জন্য আলাদা, নির্দিষ্ট জায়গা তৈরি করতে হবে।