আজকাল ওয়েবডেস্ক: পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবিকে শনিবার তোশাখানা-২ দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে এক বিশেষ আদালত। এছাড়াও তাঁদের এক একজনকে ১ কোটি ৬৪ লাখ পাক অর্থ জরিমানাও দিতে হবে। ২০২১ সালে সৌদি আরবের যুবরাজের দেওয়া রাষ্ট্রীয় উপহার নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ ছিল। সেই সংক্রান্ত মামলাতেই এই সাজা ঘোষণা করা হয়েছে।
রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে অনুষ্ঠিত এক শুনানিতে বিশেষ বিচারক শাহরুখ আরজুমান্দ এই রায় ঘোষণা করেন। ইমরান খান বর্তমানে সেখানেই বন্দি আছেন।
ইমরান খান ও বুশরা বিবিকে পাকিস্তান দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারা অনুযায়ী অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের জন্য ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের বিভিন্ন ধারায় সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
পাক সংবাদপত্র 'দ্য ডন'-এর হাতে আসা রায়ের একটি অনুলিপিতে বলা হয়েছে, "এই আদালত সাজা দেওয়ার সময় ইমরান আহমেদ খান নিয়াজির বয়স এবং বুশরা ইমরান খানের নারী হওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করেছে। উল্লিখিত দু'টি বিষয় বিবেচনা করেই কম শাস্তি দিয়ে নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা হয়েছে।"
এই রায়ের পর ইমরান খান ও বুশরা বিবির আইনজীবীরা বলেছেন, তাঁরা বিশেষ আদালতের নির্দেশকে হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করবেন।
চলতি বছরের অক্টোবরে ইমরান খান ও বুশরা বিবি এই মামলার সব অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগকে সাজানো এবং পাক রাজনীতি তাঁদের অপ্রাসঙ্গিক করার লক্ষ্যেই এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ বলে দাবি করেন।
২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে থাকা ইমরান খান ১৯০ মিলিয়ন ইউরোর একটি দুর্নীতি মামলায় ১৪ বছরের সাজা ভোগ করছেন এবং ২০২৩ সালের ৯ মে বিক্ষোভের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বিচারাধীন মামলারও মুখোমুখি হচ্ছেন। বুশরা বিবিও একই দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের সাজা ভোগ করছেন।
কারাগারে ইমরান খানের প্রতি দুর্ব্যবহারের জন্য পাকিস্তান সরকারের ক্রমবর্ধমান সমালোচনার মধ্যেই এই সর্বশেষ সাজা ঘোষণা করা হল। এমনকী জাতিসঙ্ঘও তাঁকে অবিলম্বে কারাবাস থেকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে খানের ছেলে কাসিম খান ও সুলাইমান ইসা খান বাবার কারাগারের পরিস্থিতি নিয়ে গুরুতর অভিযোগ করেন। তাঁরা দাবি করেছেন যে, বাবাকে (ইমরান খান) দুই বছর ধরে নির্জন কারাবাসে রাখা হয়েছে। তাঁদের আশঙ্কা যে, আর হয়তো কখওই বাবার সঙ্গে দেখা করা যাবে না।
