আজকাল ওয়েবডেস্ক: দশ বছর আগে বাতিল হওয়া জাতীয় বিচারিক নিয়োগ কমিশন (এনজেএসি) আইনকে আবার কার্যকর করার দাবি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বুধবার (২৬ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় আইনজীবী ম্যাথিউজ নেদুমপরা আবারও আবেদন জানান যে বর্তমান কলেজিয়াম ব্যবস্থা পুনর্বিবেচনা করা উচিত এবং এনজেএসি নিয়ে ২০১৫ সালের রায় পুনরায় খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তাঁর অনুরোধ শুনে প্রধান বিচারপতি (সিজেআই) সুর্য কান্ত মন্তব্য করেন, “হ্যাঁ, আমরা দেখব।”

শুনানি চলাকালীন এক পর্যায়ে সিজেআই নেদুমপরাকে উদ্দেশ্য করে মজার ভঙ্গিতে বলেন, “Ab hum Hindi mein jawab denge… jaan boojhkar yeh kar rahe ho tum… hum Hindi me baat karenge.” নেদুমপরা জানান যে তিনি হিন্দি বোঝেন না। এরপর সিজেআই সংক্ষিপ্তভাবে বলেন, “We will consider the plea.”

এনজেএসি ছিল বিচারপতি নিয়োগে সরকারেরও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার একটি সাংবিধানিক কাঠামো। কিন্তু ২০১৫ সালে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ ৪:১ রায়ে এই ব্যবস্থা বাতিল করে দেয় এবং একে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে। সেই রায়ের ফলে আবার কার্যকর হয় পুরনো কলেজিয়াম ব্যবস্থা, যেখানে বিচারপতিরাই বিচারপতি নিয়োগের সুপারিশ করেন। তবে তখনই আদালত মন্তব্য করেছিল যে কলেজিয়াম ব্যবস্থায়ও অনেক ত্রুটি রয়েছে এবং এটি সংস্কারের প্রয়োজন।

গত কয়েক বছরে কলেজিয়াম পদ্ধতি নিয়ে কেন্দ্র ও সুপ্রিম কোর্টের মধ্যে বহুবার টানাপোড়েন দেখা গেছে। কেন্দ্রের অভিযোগ—এই নিয়োগ পদ্ধতি স্বচ্ছ নয়, জবাবদিহি নেই, এবং সরকারি ভূমিকা একেবারেই সীমিত। অন্যদিকে আদালতের যুক্তি—সরকারি হস্তক্ষেপ বাড়লে বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা সংবিধানের ক্ষমতার ভারসাম্যকে প্রশ্নের মুখে ফেলবে।

সুপ্রিম কোর্টের এই মন্তব্য সরাসরি এনজেএসি পুনর্বহালের নির্দেশ নয়, তবে বিচারপতি নিয়োগের পদ্ধতি নিয়ে পুনরুল্লেখিত আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত বলে মনে করা হচ্ছে। এখন আদালত আনুষ্ঠানিকভাবে এই আবেদন তালিকাভুক্ত করবে কি না, সেটিই নজর দেওয়ার মতো বিষয়। যদি মামলাটি পুনরায় খোলা হয়, তাহলে বিচারব্যবস্থা ও নির্বাহী ক্ষমতার ভূমিকা নিয়ে একটি বড় সাংবিধানিক বিতর্ক আবার সামনে আসতে পারে।