আজকাল ওয়েবডেস্ক: পড়শি পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের জের। ভারতে জাফরানের দাম হুহু করে বেড়েছে। একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, উচ্চমানের কাশ্মীরি জাফরানের দাম প্রতি কেজি ৫ লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। যা সর্বোকালের রেকর্ড। পহেলগাঁও হামলার পর একসপ্তাহ কাটতে না কাটতেই কাশ্মীরি জাফরানের দাম কিলো প্রতি ৫০,০০০ - ৭৫,০০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছে। এর ফলে লাল রঙের এই মশলা ৫০ গ্রাম সোনার মতো দামি হয়ে উঠেছে!
পহেলগাঁও হামলার পর প্রতিশোধমূলক কূটনৈতিক পদক্ষেপ হিসেবে কেন্দ্র আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। তারপরই হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সীমান্ত বন্ধের ফলে আফগানিস্তান থেকে জাফরান আমদানি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আফগানিস্তান থেকে ওই পথেই জাফরান এ দেশে আসত, যা দিয়ে ভারতের অভ্যন্তরীণ জাফরানের চাহিদা মেটানো হত।
ভারতে বছরে প্রায় ৫৫ টন জাফরানের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু জম্মু অঞ্চলের উচ্চ উচ্চতায় অবস্থিত পুলওয়ামা, পাম্পোর, বুদগাম, শ্রীনগর এবং কিশতোয়ার-জুড়ে অবস্থিত জাফরান ক্ষেতগুলি থেকে বছরে মাত্র ৬ থেকে ৭ টন জাফরান উৎপাদিত হয়। এই ঘাটতি সাধারণত আফগানিস্তান এবং ইরান থেকে আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয়। যদিও আফগান জাফরানের উজ্জ্বল রঙ এবং সমৃদ্ধ সুগন্ধের জন্য দাম বেশি। তুলনায় ইরানি জাফরান অনেকটাই সস্তা, সাধারণের ধরা-ছোঁয়ার নাগালে।
কিন্তু পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে স্থলপথে বাণিজ্য রুট বন্ধ হওয়ার ফলে আফগান চালান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে সরবরাহ-চাহিদার সূক্ষ্ম ভারসাম্য হ্রাস পেয়েছে। সীমান্ত বন্ধের মাত্র চার দিনের মধ্যে, দাম ১০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল কৃষি পণ্যগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত আফগান জাফরানের দাম দ্রুত অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে।
কাশ্মীরি জাফরান বিশ্বব্যাপী এর গাঢ় লাল রঙের দাগ, তীব্র সুগন্ধ এবং ক্রোসিনের উচ্চ ঘনত্বের জন্য বিখ্যাত। এটি বিশ্বের একমাত্র জাফরান যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৬০০ মিটারের বেশি উচ্চতায় জন্মায়। এর অনন্য বৈশিষ্ট্যের স্বীকৃতিস্বরূপ, কাশ্মীরি জাফরান ২০২০ সালে ভৌগোলিক নির্দেশক (GI) ট্যাগ পেয়েছে।
এখন, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং সীমিত বাণিজ্যের কারণে আফগান জাফরানের দাম আকাশছোঁয়া। এই অবস্থায় কাশ্মীরের জাফরান দ্রুত বাজার ধরতে পারবে বলে আশাবাদী সকলে। যারা একসময় খরচ মেটাতে সংগ্রাম করেছিলেন, তাঁরাই আজ সম্ভাব্য অপ্রত্যাশিত লাভ দেখতে পাচ্ছেন।
