আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইতিহাস গড়েছেন ভারতীয় বিমান বাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা। দ্বিতীয় ভারতীয় হিসাবে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছেন তিনি।  ইতিমধ্যেই ২৪ ঘন্টার বেশি অতিক্রান্ত। শনিবার শুভাংশুর সঙ্গে কথা বললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তরফে এক্সবার্তায় প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং শুভাংশু শুক্লার হাসিমুখে কথোপকথনের দৃশ্য শেয়ার করা হয়েছে। পিএমও ইন্ডিয়া এক্স-এর একটি পোস্টে লেখা হয়েছে, “প্রধানমন্ত্রী মোদি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকা গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লার সঙ্গে আলাপচারিতা করেছেন।”

?ref_src=twsrc%5Etfw">June 28, 2025

কী কথা হল?

প্রধানমন্ত্রী মোদী ভারতীয় মহাকাশচারীকে বলেন, "আজ, আপনি আমাদের মাতৃভূমি থেকে দূরে, কিন্তু আপনি ভারতীয়দের হৃদয়ের সবচেয়ে কাছের...আপনে নাম মে ভি শুভ হ্যায় অর আপকি যাত্রা নয়ে যুগ কা শুভরম্ভ ভি হ্যায়।"

প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নের উত্তরে মহাকাশচারী বলেন, "এটা আমার একার যাত্রা নয়, আমাদের দেশেরও।" নতুন অভিজ্ঞতাগুলিকে তিনি স্পঞ্জের মতো শুষে নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন শুভাংশু।

এখন পর্যন্ত তিনি কী দেখেছেন তার বর্ণনা জানতে চাইলে ভারতীয় নভশ্চর শুক্লা প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, "কিছুক্ষণ আগে, যখন আমি জানালা দিয়ে বাইরে তাকাচ্ছিলাম, তখন আমরা হাওয়াইয়ের উপর দিয়ে উড়ছিলাম। কক্ষপথ থেকে আমরা দিনে ১৬ বার সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখতে পাই... আমাদের দেশ খুব দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে...।" ভারতীয় মহাকাশচারী বলেন, "এখানে সবকিছুই আলাদা"।

প্রধানমন্ত্রীকে শুভাংশু বলেন, "আমরা এক বছর ধরে প্রশিক্ষণ নিয়েছি এবং বিভিন্ন সিস্টেম সম্পর্কে শিখেছি...কিন্তু এখানে আসার পর সবকিছু বদলে গিয়েছে...এখানে, ছোট ছোট জিনিসও আলাদা কারণ মহাকাশে কোনও মাধ্যাকর্ষণ নেই...এখানে ঘুমানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ...এই পরিবেশের সঙ্গে অভ্যস্ত হতে কিছুটা সময় লাগে।"

শুভাংশু বলেছেন, "মহাকাশ যান থেকে প্রথম দৃশ্য ছিল পৃথিবীর এবং বাইরে থেকে পৃথিবী দেখার পর, প্রথম যে চিন্তা এবং প্রথম জিনিসটি মাথায় এলো- তা হল পৃথিবী সম্পূর্ণরূপে এক দেখায়, বাইরে থেকে কোনও সীমানা দেখা যায় না। যখন আমরা প্রথমবার ভারতকে দেখেছিলাম, তখন আমরা দেখেছি যে ভারত সত্যিই খুব দুর্দান্ত দেখাচ্ছে, মানচিত্রে আমরা যা দেখি তার চেয়ে অনেক বড় দেখাচ্ছে... যখন আমরা বাইরে থেকে পৃথিবীকে দেখি, তখন মনে হয় কোনও সীমানা নেই, কোনও রাষ্ট্র নেই, কোনও দেশ নেই। আমরা সকলেই মানবতার অংশ, এবং পৃথিবী আমাদের একটি বাড়ি, এবং আমরা সকলেই এতে আছি।"

১৯৮৪ সালে রাকেশ শর্মার ৪০ বছর পর শুভাংশু শুক্লাই প্রথম ভারতীয় হিসেবে আইএসএস-এ পা রেখে ইতিহাস রচনা করেন। তিনিই হলেন অ্যাক্সিওম-৪ মিশনের পাইলট। বুধবার ফ্লোরিডার নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে আইএসএস-এ পাঠানো হয়েছে শুভ্রাংশুকে।

আইএসএস থেকে হিন্দিতে দেওয়া ভাষণে, শুক্লা ভারতের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তায় আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন: "আপনাদের ভালোবাসা এবং আশীর্বাদের কারণেই আমি নিরাপদে আইএসএসে পৌঁছেছি। আমার কাঁধে যে তেরঙ্গা পতাকা বহন করছি তা দেখে আমার মনে হয় যেন পুরো দেশ আমার সঙ্গে আছে।"

মহাকাশে শুভাংশু ও তাঁর টিমকে ১৪ দিন ধরে থাকতে হবে। তবে সেখান গিয়ে এবার খানিকটা অসুস্থ বোধ করছেন তিনি। সেখানে গিয়ে তার প্রচুর ঘুম পাচ্ছে তাঁর। নিজের বার্তায় তিনি সেটাই জানিয়েছেন। এবার সেখানে তারা ছোটো শিশুর মতো রয়েছেন যেখানে একজন শিশু নতুনভাবে খেতে এবং হাঁটতে শেখে।

যদিও এই বিষয়টি নিয়ে বেশি চিন্তা করতে বারণ করেছে নাসা। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সকলেই এখন ভরশূণ্য অবস্থায় রয়েছেন। ফলে সেখানে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতেই পারে। তবে কয়েকদিনের মধ্যে গোটা বিষয়টি ভালভাবে মেনে নিতে পারবেন সকলেই।