আজকাল ওয়েবডেস্ক: ৪১ বছর বয়সি এক ব্যক্তি স্ত্রী-সংক্রান্ত ‘ক্রূরতা’ ও মানসিক যন্ত্রণার অভিযোগ তুলে গুজরাট হাই কোর্টে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেছেন। তাঁর দাবি, স্ত্রী অতিরিক্তভাবে পথকুকুরকে ঘরে রাখতেন এবং তার যত্ন নেওয়ার ভার চাপিয়ে দিতেন, যা তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য নষ্ট করেছে এবং ক্রমে তা ইরেকটাইল ডিসফাংশনের (ED) মতো শারীরিক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ ছাড়া স্ত্রী নানাভাবে তাঁকে অপমান করেছেন বলেও অভিযোগ। স্বামী ভডোদরা ফ্যামিলি কোর্টের আদেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাই কোর্টে আসেন।

দম্পতির বিয়ে হয় ২০০৬ সালে। স্বামীর বক্তব্য, বিবাহিত জীবনের অশান্তি শুরু হয় যখন তাঁর স্ত্রী এলাকার  নিয়ম অমান্য করে একটি পথকুকুরকে তাঁদের ফ্ল্যাটে নিয়ে আসেন। ফ্ল্যাটে  পোষ্য রাখার অনুমতি ছিল না। স্বামীর আপত্তি সত্ত্বেও স্ত্রী পরে আরও কয়েকটি পথকুকুর ঘরে নিয়ে আসেন। অভিযোগ, কুকুরগুলির রান্না, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও খাওয়ানোর দায়িত্ব তাঁর উপরই চাপানো হয়। এমনকি একবার একটি কুকুর বিছানায় ঘুমানোর জন্য জোরাজুরি করতে গিয়ে তাঁকে কামড়েও দেয়।

স্বামীর দাবি, স্ত্রীর পথকুকুরের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি সংসারজীবনে অস্থিরতা সৃষ্টি করে। পরিস্থিতি আরও জটিল হয় যখন স্ত্রী একটি প্রাণী অধিকার সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হন। অভিযোগ অনুযায়ী, স্ত্রী প্রায়ই বিভিন্ন মানুষের বিরুদ্ধে পশু নির্যাতনের অভিযোগে থানায় অভিযোগ জানাতেন এবং স্বামীকে থানায় হাজির হতে বলতেন। স্বামী রাজি না হলে তাঁকে নানাভাবে অপমান ও গালিগালাজ করতেন বলে অভিযোগ।

তাঁর আর্জিতে স্বামী জানিয়েছেন, ক্রমাগত মানসিক চাপের ফলে তাঁর ডায়াবেটিসের মতো শারীরিক সমস্যা তৈরি হয় এবং এর প্রভাবে ইরেকটাইল ডিসফাংশন দেখা দেয়। তিনি জানান, এই মানসিক উদ্বেগ তাঁর পেশাগত জীবনেও প্রভাব ফেলেছিল।

অভিযোগের তালিকায় রয়েছে এক বিস্ময়কর কাণ্ড—২০০৭ সালের ১ এপ্রিল তাঁর জন্মদিনে স্ত্রী একটি ‘প্র্যাঙ্ক’ হিসেবে এক রেডিও জকিকে দিয়ে লাইভ অনুষ্ঠানে ফোন করান। রেডিও জকি ‘জেনি’ নামের এক কাল্পনিক প্রেমিকার পরিচয়ে ফোনে তাঁকে জানান যে, তিনি স্বামীর সঙ্গে গোপন প্রেমের সম্পর্কে রয়েছেন। স্বামীর অভিযোগ, এই ফোনকল তাঁর কর্মস্থল ও এলাকায়  তাকে চরম অপমানের মুখে ফেলেছিল। পরে স্ত্রী জানালেও যে এটি ছিল একটি এপ্রিল ফুলের মজা, কিন্তু এরপর তিনি নাকি হুমকি দেন যে, স্বামী তাঁকে ছেড়ে গেলে মিথ্যা পণ-বিরোধী মামলা করবেন।

চলমান বিবাহ-বিচ্ছেদ মামলায় স্বামীর আইনজীবী আদালতকে জানান যে, স্ত্রী ২ কোটি টাকার এককালীন নিষ্পত্তি দাবি করেছেন। অন্যদিকে স্বামী তাঁর চাকরির অবস্থান ও আয়ের কথা উল্লেখ করে ১৫ লক্ষ টাকার বেশি দিতে নারাজ। স্ত্রীর আইনজীবীর যুক্তি, স্বামী প্রকৃত তথ্য গোপন করছেন এবং তাঁর পরিবারের নামে একাধিক সম্পত্তি রয়েছে, যা তাঁকে আরও যুক্তিসঙ্গত অঙ্ক দিতে সক্ষম করে।

গুজরাট হাই কোর্ট বিষয়টি বিস্তারিত বিবেচনার জন্য শুনানি মুলতবি রেখেছে। মামলার পরবর্তী শুনানি নির্ধারিত হয়েছে ১ ডিসেম্বর।