আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিল্লি বিস্ফোরণ কাণ্ডের ক্ষত এখনও মোছেনি। এবার বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার হল উত্তরাখণ্ডে। তাও আবার এক স্কুলের বাইরে। এই রাজ্যেই এক স্কুলের বাইরে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১৬১টি জিলেটিন স্টিক। এবার স্কুলেও বিস্ফোরণের পরিকল্পনা ছিল কিনা, তা ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, উত্তরাখণ্ডের আলমোরাতে ঘটনাটি ঘটেছে। এই জেলার দাবারা গ্রামে এক সরকারি স্কুলের বাইরে থেকে শতাধিক জিলেটিন স্টিক উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। ওই স্কুলের প্রিন্সিপাল সুভাষ সিং জানিয়েছেন, সেদিন বিকেলে স্কুলের কয়েকজন পড়ুয়া বাইরে খেলাধুলা করছিল। ঝোঁপের মধ্যে সন্দেহজনক কিছু দেখেই খবর দেয় তারা।
স্কুল কর্তৃপক্ষের থেকে খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে তড়িঘড়ি পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। দ্রুত চলে আসে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ও ডগ স্কোয়াড। মোট ১৬১টি বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। যার মোট ওজন ২০ কেজি। অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভারতীয় বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। চারটি দল গঠন করে জোরকদমে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, নভেম্বরের শুরুতে সোমবার সন্ধে ৬টা ৫২ মিনিট নাগাদ লালকেল্লার কাছে নেতাজি সুভাষ মার্গে ট্র্যাফিক সিগন্যালে একটি সাদা হুন্ডাই আই২০ দাঁড়িয়ে ছিল। লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের এক নম্বর গেটের কাছে সেই গাড়িতেই বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে। গাড়িটি সোমবার ভোরে দিল্লিতে প্রবেশ করে। অনেকক্ষণ নানা জায়গায় ঘুরে বেড়ানোর পর সুনেহরি মসজিদের কাছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার্ক করে রাখা হয়। সেখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর এটি চাঁদনি চকে চলে যায়। এরপরেই মেট্রো স্টেশনের কাছে এটি বিস্ফোরিত হয়।
দিল্লি বিস্ফোরণের আগে গত ১২ দিন হরিয়ানার ফরিদাবাদে আল-ফালাহ মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরেই গাড়িটি দাঁড়িয়েছিল। প্যানিকের জেরে ১০ নভেম্বর সকালে সেই গাড়িটি নিয়েই ফরিদাবাদ থেকে দিল্লিতে চলে আসে উমর। গত ২৯ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত গাড়িটি ওই কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে ছিল। ফরিদাবাদে বিস্ফোরক উদ্ধারের পর মুজাম্মিল ও আদিলের গ্রেপ্তারির পরেই আতঙ্কিত হয়ে গাড়িটি নিয়ে উমর বেরিয়ে পড়ে। সুনেহরি মসজিদের কাছে পার্ক করার আগে গাড়িটিকে ময়ূর বিহার ও কনট প্লেসের কাছেও দেখা গেছে।
সোমবার সন্ধ্যায় কেঁপে উঠেছিল লালকেল্লা মেট্রো স্টেশন চত্বর। সোমবার পর্যন্ত আটজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল। মঙ্গলবার মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ে। দিল্লি বিস্ফোরণে এখনও পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত অবস্থায় এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২০ জন।
দিল্লি বিস্ফোরণের তদন্তে নেমে আরও এক সন্দেহভাজন যুবককে গ্রেপ্তার করল গোয়েন্দারা। শনিবার পুলওয়ামা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে জম্মু ও কাশ্মীরের স্পেশাল অপারেশনস গ্রুপ এবং সে রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা। জানা গিয়েছে, তার সঙ্গে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের সরাসরি যোগ রয়েছে।
দিল্লি বিস্ফোরণের তদন্তে নেমে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) দেশজুড়ে একাধিক জায়গায় তল্লাশি ও ধরপাকড় শুরু করেছে। তদন্তে নেমে শ্রীনগর-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একাধিক চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা বেশিরভাগই কাশ্মীরের। শুধু তাই নয়, বিস্ফোরণের দুই ষড়যন্ত্রী-সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে এনআইএ। পাশাপাশি, তদন্তকারীদের স্ক্যানারে রয়েছে হরিয়ানার ফরিদাবাদের আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ও। একে একে সামনে আসছে দেশে ছড়িয়ে থাকা জইশ-ই-মহম্মদের ‘হোয়াইট কলার টেরর’-এর ভয়াবহ তথ্য।
