আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের বাজারে যদি আপনি লাবুবু পুতুলকে কিনতে চান তাহলে আপনাকে কত টাকা দিতে হবে এই প্রশ্ন এখন সর্বত্র ঘুরছে। যদি এই দাম আপনার কাছে জানা থাকে তাহলে সেখান থেকে আপনি নিজের মতো করে এই পুতুলকে কিনতে পারবেন।
ভারতের বাজারে এক একটি লাবুবু পুতুলের দাম রয়েছে ২ হাজার টাকা। তবে যদি কেউ দামী লাবুবুকে কিনতে চান তাহলে তিনিও কিনতে পারেন। সেখানে আপনাকে দিতে হবে ১২ হাজার টাকা। তবে যদি বিরল লাবাবুকে নিয়ে ঘরে যেতে চান তাহলে আপনাকে দিতে হবে প্রায় ৫৫ হাজার টাকা।
লাবুবুর প্যাকেটটি একটি অতি অসাধারণ মোড়কে থাকবে। এতে হাত দিলেই একটি নরম অনুভব হবে। এই পুতুলের বাক্সে থাকবে একটি কিউ আর কোড যেটি পপ মার্টের অফিশিয়াল সাইটকে বুঝিয়ে দেবে। লাবুবুর প্রতিটি পুতুলে ৯ টি করে ধারালো দাঁত থাকবে। লাবুবুর পুতুলে যে রং থাকবে সেখানে একটা হাল্কা ভাব থাকবে। কোন পুতুলে কোনও কড়া রং থাকবে না।
লাবুবুর পুতুলের রং গোলাপী হবে। যদি এটি কমলা, হলুদ বা লাল রঙের হয় তাহলে সেটি আসল লাবুবু হবে না। প্রতারকরা নানা রঙের লাবুবু বাজারে নিয়ে এসেছে তবে তাতে কোনও কাজ হবে না। আপনাকেই চিনে নিতে হবে আসল লাবুবুকে।
লাবুবুর জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ার পেছনে ‘আনবক্সিং’ ভিডিওগুলোর বড় একটা ভূমিকা আছে। পুতুলটির উৎপাদক চিনা কোম্পানি পপ মার্ট। তাদের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, লাবুবু পাওয়া যায় ‘ব্লাইন্ড বক্স’-এ, অর্থাৎ বাক্সটি খোলার আগে ভেতরে কী আছে, তা থাকে অজানা। এই রহস্য বলুন বা চমকই মূলত আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছে এবং এটাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপকভাবে। জনপ্রিয় হওয়ার আরেকটি কারণ হল, এই পুতুলগুলো প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য একধরনের ‘হ্যাপিনেস জেনারেটর’, মানে মনে সুখ বা আনন্দ তৈরি করে। এসবের মধ্যে আছে একধরনের ‘সেলফ-হিলিং’ প্রভাবও।
এর প্রভাব পড়েছে ব্যবসায়ও। ২০২৪ সালে পপ মার্টের আয় দ্বিগুণের বেশি হয়ে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে শুধু সফট টয় বা প্লাশ ডলের বিক্রি বেড়েছে ১ হাজার ২০০ শতাংশের বেশি! মার্কিন বাজারে প্রতিটি লাবুবু পুতুলের দাম যদিও মাত্র ২০–৩০ ডলারের মধ্যে।
সমস্যা হচ্ছে চাহিদার কারণে এখন আসল লাবুবু পুতুল পাওয়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে মুশকিল। এক লাবুবু সংগ্রাহক বলেছেন, ‘আসল লাবুবু পেতে হলে পপ মার্টের ওয়েবসাইটে যখনই নতুন চালান ছাড়বে, সেখানে লাখ লাখ মানুষের সঙ্গে লড়তে হবে। অথবা সামনাসামনি দোকানে গিয়ে অন্য পাগল গ্রাহকদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করতে হবে।’
লাবুবুর উৎপত্তি চিনের হংকংয়ে। তবে ‘হ্যালো কিটি’ বা অন্যান্য পরিচিত প্লাশ ডলের চরিত্রদের মতো নয়, লাবুবু চরিত্রগুলোকে বর্ণনা করা হয় ‘এলভিশ’ বা জাদুকরি প্রাণী হিসেবে। নর্ডিক পুরাণ অবলম্বনে চিত্রগ্রন্থ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে লাবুবু তৈরি করেছেন শিল্পী কাসিং লুং। বইটি প্রকাশের পর চিনা খেলনা কোম্পানি পপ মার্ট ২০১৯ সালে প্রথম সংগ্রহযোগ্য লাবুবু ফিগার বাজারে আনে।
