আজকাল ওয়েবডেস্ক: সোনার লোভে বৃদ্ধাকে খুন। ভয়াবহ ঘটনা কর্নাটকে। এক বৃদ্ধাকে খুন করে তাঁর দেহ দু'দিন ধরে নিজের বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিলেন এক মহিলা। পরে তিনি সেই দেহ স্থানীয় এক হ্রদের কাছে ফেলে দিয়ে আসেন। পুলিশ সূত্রে খবর, বেঙ্গালুরুর কাছে আনেকাল তালুকের কুগুরু গ্রামে ঘটেছে এই লোমহর্ষক ঘটনা। খুনের অভিযোগে দীপা নামের ওই মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছে সরজাপুর থানার পুলিশ।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে, নিহত বৃদ্ধার নাম ভদ্রাম্মা (৬৮)। তিনিও এক গ্রামেরই বাসিন্দা ছিলেন। আচমকা গত ৩০ অক্টোবর থেকে ভদ্রাম্মাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরিবারের লোকজন এবং গ্রামবাসীরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোনও হদিশ পাননি। এরপর ৩১ অক্টোবর সরজাপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। পুলিশ খোঁজ শুরু করে। এই ঘটনার বেশ অনেক দিন পর, গত ৬ নভেম্বর পুলিশ জানতে পারে, নিখোঁজ হওয়ার আগে ভদ্রাম্মাকে শেষ বার দীপার বাড়িতে দেখা গিয়েছিল। দীপাও একই গ্রামে থাকতেন। এই খবর পেয়েই পুলিশ দীপা-কে ধরে এনে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
জেরার মুখে শেষ পর্যন্ত দীপা খুনের কথা স্বীকার করেন। তিনি জানান, মিষ্টি 'কাজ্জায়া' দেওয়ার নাম করে ভদ্রাম্মাকে নিজের বাড়িতে ডেকে এনেছিলেন। কারণ জানলে চোখ উঠবে কপালে। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল একটাই- ভদ্রাম্মার গলার সোনার চেন চুরি করা। এর জন্যই তিনি শ্বাসরোধ করে খুন করেন বৃদ্ধাকে।
পুলিশ জানিয়েছে, খুনের পর দীপা মৃতদেহ একটি বড় ব্যাগে ভরে দু'দিন নিজের বাড়িতে লুকিয়ে রাখেন। দেহ পচে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করলে তিনি সেটি অন্য একটি ব্যাগে ভরে ফেলেন। এরপর ছেলেকে ডেকে বলেন, আবর্জনা ফেলতে হবে। মা ও ছেলে মিলে দেহটি দোডাথিম্মাসান্দ্রা হ্রদের কাছে নিয়ে গিয়ে ঝোপের মধ্যে ফেলে দেন।
পুলিশের দাবি, এরপর দীপা বাড়ি ফিরে আসেন। এমন ভাবে রোজকার কাজ করতে থাকেন, যেন কিছুই হয়নি। ভদ্রাম্মার বাড়ির লোকজন খোঁজ নিতে এলে তিনি বলেন যে বৃদ্ধা তো আগেই বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। সরজাপুর পুলিশ সমস্ত তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করে। পরে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় হাসপাতালে। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দীপা-কে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, স্রেফ সোনার লোভেই এই খুন করা হয়েছে। পাশাপাশি দীপার পরিবারের আর কারও এই খুনে হাত ছিল কি না, এবং খোওয়া যাওয়া গয়না উদ্ধার করার জন্য পুলিশ আরও তদন্ত জারি রেখেছে।
অন্যদিকে আর এক হাড়হিম কাণ্ড একই রাজ্যে। ২১ বছরের যুবকের বিরুদ্ধে নিজেরই নাবালিকা বোনকে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করার অভিযোগ। জানা গিয়েছে তাতে তরুণী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে গত ৩০ অক্টোবর। এই ঘটনা জানাজানি হতে চরম শোরগোল।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, তীব্র পিঠের ব্যথা নিয়ে তরুণী জেলা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। প্রসবের আগ পর্যন্ত সে জানতও না যে সে গর্ভবতী। সেই দিন রাতেই সে একটি সন্তানের জন্ম দেয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দেওয়া জবানবন্দিতে সে জানায়, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে তার দাদা এই জঘন্য কাজ শুরু করে। একাধিকবার বারণ করা সত্ত্বেও, অভিযুক্ত যুবক তাকে বিয়ে করে সব দায়িত্ব নেবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়।
নাবালিকার অভিযোগ, সে যখন পরিবারকে সব কথা বিস্তারিত জানাতে চায়, তখন অভিযুক্ত দাদা আত্মহত্যা করার হুমকি দিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করে। পুলিশ সূত্রে খবর, নির্যাতিতার বাবা দ্বিতীয় বিবাহ করেছিলেন। এরপর মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে তাঁরা একসঙ্গেই থাকতেন। তরুণীর বয়ানের ভিত্তিতে, পুলিশ যুবকের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংবিধান (বি এন এস)-এর ৬৪(২)(এম) ধারায় এবং পকসো আইনের বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা রুজু করেছে।
ঘটনার জেরে অভিযুক্ত ২১ বছর বয়সি যুবককে গ্রেপ্তার করে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে (জুডিশিয়াল কাস্টডি) পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্ত জারি রয়েছে৷
