আজকাল ওয়েবডেস্ক: ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষ থেকে ২০২৪-২৫ পর্যন্ত গত দশ বছরে ভারতের সরকারি ক্ষেত্রের ব্যাঙ্কগুলি (PSBs) মোট ১২,০৮,৮২৮ কোটি টাকার ঋণ মকুব করেছে বলে রাজ্যসভায় জানাল কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। ২২ জুলাই, রাজ্যসভায় এক লিখিত উত্তরে অর্থ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী এই তথ্য পেশ করেন। তিনি জানান, শুধুমাত্র গত পাঁচ অর্থবর্ষ (২০২০-২১ থেকে ২০২৪-২৫) মিলিয়ে মকুবের পরিমাণ ৫.৮২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। মন্ত্রী স্পষ্টভাবে জানান, ব্যাঙ্কের “ঋণ মুক্তি” বা write-off একটি হিসাবনিকাশ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া, এটি কোনওভাবেই ঋণগ্রহীতার জন্য ঋণ মকুব নয়। অর্থাৎ, এতে ঋণগ্রহীতারা দায়মুক্ত হন না।

আরও পড়ুন: অনিল আম্বানির সংস্থাগুলির উপর ইডির হানা: প্রায় ৩,০০০ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে তদন্ত

চৌধুরী বলেন, “ঋণগ্রহীতারা ঋণ পরিশোধের জন্য দায়বদ্ধ থাকেন এবং ব্যাঙ্কগুলি এই অর্থ আদায়ে তাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়।" রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশিকা অনুযায়ী, যেসব অনাদায়ী ঋণের জন্য পূর্ণ প্রভিশন করা হয়েছে, সেগুলি চার বছর পরে হিসাব থেকে বাদ দেওয়া যায়। মন্ত্রী আরও জানান, ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ১,৬২৯ জন ঋণগ্রহীতাকে 'ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি' (wilful defaulter) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের উপর মোট ঋণভার ১.৬২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। এই খেলাপিদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের জন্য ব্যাঙ্কগুলি SARFAESI আইন ও দেউলিয়া বিধি (IBC)-র আওতায় ব্যবস্থা নিচ্ছে। পাশাপাশি, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের (PMLA) আওতায় প্রায় ১৫,০০০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ২০০৬ মুম্বই ট্রেন বিস্ফোরণ মামলা: ১২ জনের বম্বে হাইকোর্টের বেকসুর খালাস স্থগিত করল সুপ্রিম কোর্ট, তবে পুনরায় গ্রেপ্তারের নির্দেশ নয়

তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে ১২টি সরকারি ব্যাঙ্কের মধ্যে ১০টি ব্যাঙ্কে ঋণ মকুবের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। তবে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (SBI) এবং ক্যানারা ব্যাঙ্কে বিশেষ করে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে মকুবের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিন আরেকটি প্রশ্নের উত্তরে অর্থ মন্ত্রক জানায়, গত পাঁচ বছরে সরকারি ব্যাঙ্কগুলি প্রায় ১.৫ লক্ষ কর্মী নিয়োগ করেছে। বর্তমানে আরও ৪৮,৫৭০টি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। এই তথ্য প্রকাশের পর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনার ঝড় উঠেছে। বিরোধীদের মতে, জনগণের টাকায় পরিচালিত ব্যাঙ্কগুলিতে এভাবে ঋণ মকুবের ঘটনা প্রমাণ করে কর্পোরেট ঋণ খেলাপিদের প্রতি সরকারের উদার মনোভাব।