আজকাল ওয়েবডেস্ক: হিমাচলে চাঞ্চল্যকর ঘটনা। হিমাচল প্রদেশের কাঙরা জেলার দেহরা এসডিএম অফিসের বাইরে সমাজকর্মীর উপর কেরোসিন ঢেলে, কালি মাখিয়ে এবং জুতোর মালা পরানোর চেষ্টায় অভিযুক্ত আশা দেবী। এহেন আচরণের কারণ জানালেন তিনি। মঙ্গলবার বালাজি হাভেলি হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে তাঁর দাবি, বছর ধরে চলা লাগাতার হেনসস্থা এবং মানসিক কষ্টের জেরেই তিনি শেষ পর্যন্ত এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন।
আশা দেবী জানিয়েছেন, ২০১১ সালে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এরপর তিনি মা বিমলা দেবীর সঙ্গে রাক্করে থাকতে শুরু করেন। সেই সময় থেকেই সসমাজকর্মী জামলা তাঁদের বাড়িতে এসে জেদ ধরতেন, ‘তোমার মেয়েকে আমার সঙ্গে বিয়ে দাও।’ তাঁর মা রাজি না হওয়ায় তিনি তাঁদের উপর চটে যান। পরে তিনি সুনীল নামে এক দলিত পুরুষকে বিয়ে করেন। এরপর পরিস্থিতি আরও বেসামাল হয়ে ওঠে৷ তখন জামলা জাতি তুলে প্রশ্ন করেন, “কেন একজন দলিতকে বিয়ে করলে?”
আশার অভিযোগ, “জামলা আজও আমাদের শান্তিতে থাকতে দেন না। এখনও তিনি চাপ দিচ্ছেন, যেন আমি সুনীলকে ডিভোর্স দিয়ে তাঁকে বিয়ে করি।” তিনি আরও বলেন, এই বছর তাঁর মা বিমলা দেবী তাঁকে জমি দেন। “দেশবন্ধু এতেও আপত্তি জানিয়ে এসডিএম দেহরার কাছে আপিল করেন। এমনকী তিনি এ-ও দাবি করেন যে আমি নাকি বিমলা দেবীর মেয়েই নই,” বলেন আশা দেবী।
যদিও জমির মামলায় রায় আশা দেবীর পক্ষেই এসেছিল, তবুও জামলা ক্রমাগত তাঁকে জ্বালাতন করে চলেছেন বলে অভিযোগ। তিনি স্বীকার করেন, “আর সহ্য করতে পারছিলাম না, তাই রাগের মাথায় এমনটা করেছি।” সমাজকর্মীর সমর্থনে রাস্তায় বিজেপি-আরএসএস।
অন্য দিকে, গত সোমবার জামলার সমর্থনে দেহরাতে বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। প্রবীণ নাগরিক, বিজেপি নেতা, আরএসএস কর্মী-সহ বহু মানুষ জড়ো হয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখান। তাঁরা এসডিএম দেহরার কাছে মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়ার জন্য একটি স্মারকলিপি জমা দেন।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, পুলিশ ও প্রশাসন পক্ষপাতের আশ্রয় নিয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, “সংবাদমাধ্যমে খবর না আসা পর্যন্ত পুলিশ এফআইআর নেয়নি। উল্টে অভিযুক্ত মহিলাকে থানায় খুব খাতির করা হয়েছে।” বিজেপি জেলা সভাপতি অজয় খাট্টা, সাধারণ সম্পাদক সুশীল কালিয়া, বিজেপি নেতা অচল পাঠানিয়া-সহ অনেকে এই বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন। এসপি দেহরা ময়ঙ্ক চৌধুরী আশ্বাস দিয়েছেন, তদন্ত ন্যায্য হবে এবং কেউ অবিচারিত হবেন না।
শুক্রবার দেহরা এসডিএম আদালতে একটি শুনানির সময় আশা দেবী প্রবীণ সমাজকর্মী জামলার উপর কেরোসিন ছোঁড়েন, কালি লেপে দেন এবং জুতোর মালা পরানোর চেষ্টা করেন। পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাক্করের বাসিন্দা জামলা সমাজসেবার জন্য পরিচিত। অতীতে তিনি জনস্বার্থের বিষয়ে অনশনও করেছেন। মামলা এখন জটিল মোড় নিয়েছে। দু’পক্ষই নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার প্রতিটি দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং সব সত্য প্রকাশ্যে আসার পরই পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
