আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিপাত। আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর (IMD)। সূত্রে খবর, রবিবার পূর্ব উত্তর প্রদেশের বেশ কয়েকটি জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি পূর্ব ও পশ্চিম উভয় উত্তর প্রদেশেই কমলা সতর্কতা জারি রয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বর্ষার নিম্নচাপ উত্তর দিকে সরে গিয়ে এখন লখনউ, কানপুর, অযোধ্যা ও শামলির মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাশাপাশি, বিহারের কাছে উত্তর-পূর্ব উত্তর প্রদেশের উপর একটি ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করছে, যা বৃষ্টির তীব্রতা আরও বাড়িয়ে তুলছে। একইসঙ্গে কানপুরে টানা বৃষ্টিতে ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা গিয়েছে। গভীর রাতে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট নদীতে পরিণত হয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, গোবিন্দ নগর ও কিদওয়াই নগর এলাকাগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানকার ছবিতে দেখা গিয়েছে, গাড়ি ডুবে আছে এবং মানুষ কোমর থেকে বুকসমান জল পেরিয়ে চলাচল করছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জরুরি পরিষেবা দলগুলি এলাকায় জল নিষ্কাশন এবং নাগরিকদের সহায়তা করার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে।
বৃষ্টির প্রভাবে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হওয়ায় লখনউ জেলার জেলা শাসক বিশাখ জি আইয়ার সোমবার ক্লাস ১ থেকে ১২ পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ বিহারে রাম জানকী মঠের মহন্তের রহস্যমৃত্যু! মৃতদেহ ঘিরে চাঞ্চল্য, তদন্তে পুলিশ......
আরেকদিকে, অযোধ্যায়ও ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সরযূ নদী তীরে উপচে পড়েছে এবং নিম্নাঞ্চল জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। জালওয়ানপুরার মতো এলাকা হাঁটুসমান জলে ডুবে গিয়েছে। দেখা যাচ্ছে সেখানে বাসিন্দারা জলমগ্ন রাস্তায় চলাচল করছেন। বারাণসীতে গঙ্গা নদীর জলস্তর বিপদসীমা ৭১.২৬ মিটার অতিক্রম করেছে। এর ফলে শহরের ৮৪টি ঘাট সম্পূর্ণভাবে ডুবে রয়েছে। আরও জানা গিয়েছে, ২৪টির বেশি ওয়ার্ড ও ৩২টি গ্রামের উপর জল ঢুকে পড়েছে। প্রায় ৬,৫০০ বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ঘুরতে গিয়ে প্রাণ হারাল বিহারের যুবক, নেপালের বাগমতীতে মৃতদেহ ঘিরে তীব্র শোরগোল, জানুন...
প্রয়াগরাজেও প্রবল বৃষ্টির কারণে বন্যার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে গঙ্গার জলস্তর বিপদসীমা অতিক্রম করেছে এবং শহরের বিভিন্ন অংশ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বজ্রপাত, ডুবে যাওয়া, সাপের কামড় এবং অন্যান্য বন্যাজনিত কারণে কমপক্ষে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। কানপুর নগর, লক্ষ্ণৌ, আগ্রা, ওরাইয়া, চিত্রকূট, বালিয়া, বান্দা, গাজীপুর, মির্জাপুর, প্রয়াগরাজ, বারাণসী, চন্দৌলি, জলাউন, কানপুর দেহাত, হামিরপুর, ইটাওয়া ও ফতেহপুরসহ মোট ১৭টি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
বর্তমানে বিপর্যয় মোকাবিলায় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (NDRF), রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (SDRF) এবং প্রাদেশিক সশস্ত্র কনস্টেবুলারি (PAC)-র টিম মোতায়েন করা হয়েছে। তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্য চালাচ্ছেন।
