আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজধানী দিল্লির বায়ুদূষণ ফের ভয়ঙ্কর মাত্রায় পৌঁছেছে। তার ওপর সোমবারের বিস্ফোরণের জেরে রাজধানী জুড়ে চাঞ্চল্য।

কেন্দ্রীয় সরকার মঙ্গলবার দিল্লি-এনসিআর জুড়ে কার্যকর করল গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যানের (GRAP) তৃতীয় ধাপ। জানা গিয়েছে, এদিন সকালে শহরের AQI ছুঁয়েছে ৪২৫। যা ‘অতি বিপজ্জনক’ পর্যায়ের মধ্যে পড়ে।

সোমবারও দিল্লির গড় AQI ছিল ৩৬২, অর্থাৎ মাত্র একদিনের ব্যবধানে দূষণের মাত্রা আরও তীব্র হয়েছে। মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, শান্ত বাতাস, স্থিতিশীল আবহাওয়া ও দূষণ জমে থাকার ফলে রাজধানীর আকাশে বাতাসের মান আরও খারাপ হচ্ছে।

ফলে দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োগ করা হয়েছে তৃতীয় ধাপের বিধিনিষেধ। নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, দিল্লি ও এনসিআর অঞ্চলে অপ্রয়োজনীয় নির্মাণ ও ভাঙাচোরা কাজ পুরোপুরি বন্ধ থাকবে।

পাথর ভাঙা এবং খনন কার্যও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে BS-III পেট্রোল এবং BS-IV ডিজেল গাড়ি রাস্তায় নামানো যাবে না। তবে প্রতিবন্ধী নাগরিকদের জন্য এই নিয়মে ছাড় থাকবে।

স্কুলের ক্ষেত্রেও আনা হয়েছে পরিবর্তন। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সমস্ত স্কুলকে হাইব্রিড শিক্ষাব্যবস্থা চালু করতে বলা হয়েছে, যাতে অভিভাবকরা চাইলে অনলাইন ক্লাসের বিকল্প বেছে নিতে পারেন।

উল্লেখ্য, শীতকালে দিল্লি ও তার আশপাশে দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সময় দূষণের প্রধান কারণ গাড়ির ধোঁয়া, পার্শ্ববর্তী রাজ্যে খড় পোড়ানো, আতসবাজির ধোঁয়া এবং প্রতিকূল আবহাওয়া।

এই সমস্ত কারণে বাতাসে দূষিত কণার ঘনত্ব ভয়ানকভাবে বেড়ে যায়। GRAP বা গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান মূলত দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলে দূষণ নিয়ন্ত্রণে একটি ধাপভিত্তিক ব্যবস্থা।

এতে বায়ুর মান অনুযায়ী চারটি পর্যায় নির্ধারণ করা হয়— প্রথম ধাপ ‘Poor’ (AQI ২০১-৩০০), দ্বিতীয় ধাপ ‘Very Poor’ (AQI ৩০১-৪০০), তৃতীয় ধাপ ‘Severe’ (AQI ৪০১-৪৫০) এবং চতুর্থ ধাপ ‘Severe Plus’ (AQI ৪৫০-এর উপরে)।

জানা গিয়েছে, যতদিন না বায়ুর AQI-তে উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখা যাচ্ছে ততদিন এই তৃতীয় ধাপের কঠোর বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে । কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে, এই ব্যবস্থা না নিলে রাজধানীর বাতাস আরও বিপজ্জনক হতে পারে এবং জনস্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।