আজকাল ওয়েবডেস্ক: 'তিন ভাষা নীতি' বিতর্কের মাঝেই তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনের সমালোচনায় মুখর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নতুন পাম্বান রেল সেতু উদ্বোধনের পর রামেশ্বরমে এক জনসভায় ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই তিনি মন্তব্য করেন যে, তিনি নিয়মিত তামিলনাড়ুর নেতাদের কাছ থেকে চিঠি পান, কিন্তু কেউ তামিলে স্বাক্ষর করেন না।
নিজের মাতৃভাষা গ্রহণ এবং প্রচারের উপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, "মাঝে মাঝে, আমি তামিলনাড়ুর কয়েকজন নেতার কাছ থেকে চিঠি পেলে অবাক হই। তাঁদের কেউ তামিলে স্বাক্ষর করেন না। আমরা যদি তামিলের জন্য সত্যিই গর্বিত হই, তাহলে আমি সবাইকে অন্তত তামিলে স্বাক্ষর করার অনুরোধ করব।"
এই অনুষ্ঠানেই প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাপী তামিল ভাষা ও সংস্কৃতির প্রচারে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রচেষ্টার কথাও তুলে ধরেন। বলেন, "আমরা তামিল ভাষা এবং তামিল ঐতিহ্য বিশ্বের প্রতিটি কোণে পৌঁছানোর জন্য নিরন্তর কাজ করছি।"
সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে থাকা ছাত্রদের সুবিধায় মাতৃভাষা তামিলে মেডিক্যাল পাঠ্যক্রম চালু করার জন্য তামিলনাড়ু সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। গত ১০ বছরে কেন্দ্রের উদ্যোগে তামিলনাড়ুতে ১১টি নতুন মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হয়েছে বলেও দাবি করেছেন মোদি।
ডিএমকে-নেতৃত্বাধীন তামিলনাড়ু সরকারের অভিযোগ, কেন্দ্র জোর করে 'তিন ভাষা নীতি' হিন্দি ভাষা আরোপ করছে। আঞ্চলিক ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যকে হিন্দির মাধ্যমে দুর্বল করার চেষ্টা বলেও তোপা দাগা হয়েছে। যা নিয়ে তামিলনাড়ুর সাসক দল ডিএমকে এবং বিজেপির মধ্যে তীব্র বাকযুদ্ধ চলে। এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর কটাক্ষ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতির অন্তর্গত 'তিন ভাষা নীতি'তে বলা হয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের তিনটি ভাষা (ইংরেজি, হিন্দি এবং স্থানীয় ভাষা) বাধ্যতামূলক ভাবে শিখতে হবে। অথচ তামিলনাড়ু-সহ দক্ষিণ ভারতের অধিকাংশ রাজ্যেই দু'টি ভাষা (ইংরেজি এবং স্থানীয় ভাষা) শিক্ষা বাধ্যতামূলক। এর পরেই হিন্দি আগ্রাসনের অভিযোগে সরব হন ডিএমকে নেতৃত্ব। সংসদেও সেই উত্তাপ পৌঁছয়। সরব ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্যাটালিনও। বাজেটের লোগো থেকে ভারতীয় মুদ্রার প্রতীকচিহ্ন 'রুপি'-র বদলে তামিল শব্দ রুবাই-এর আদ্যক্ষর 'রু' বসিয়ে প্রতিবাদ জানায় তামিলনাড়ু সরকার।