আজকাল ওয়েবডেস্ক: নেশার ঘোরে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে নিজের চার বছরের সন্তানকে আছড়ে খুন। হাড়হিম ঘটনার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। গত শনিবার রাতে উত্তরপ্রদেশের গুয়ালি গ্রামে এই নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের নাম রামজি বনবাসী। মদ্যপ অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া চলাকালীন নিজের ঘুমন্ত সন্তানকে তুলে নিয়ে বারবার মাটিতে আছড়ে ফেলে সে।

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার মাঝরাতে অভিযুক্ত রামজি নিজের বাড়ি ফেরে। প্রচণ্ড নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সে বাড়িতে ফেরে। জানা গিয়েছে, এই কারণে বাড়ি ঢুকেই স্ত্রীর সঙ্গে তার গোলমাল শুরু হয়। ঝগড়া যখন চরমে, তখন মেজাজ হারিয়ে পাশে ঘুমিয়ে থাকা ছেলে বিকাশের ওপর চড়াও হয় রামজি। তাকে তুলে সজোরে বারকয়েক মাটিতে আছাড় মারে বলে অভিযোগ। এর পরই এলাকা ছেড়ে পালায় অভিযুক্ত। বাড়ির লোকজন শিশুটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

রবিবার এই ঘটনার জেরে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন শিশুটির ঠাকুমা প্রভাবতী দেবী। পুলিশ আধিকারিক মহম্মদ শাকিল খান জানিয়েছেন, অভিযুক্ত রামজিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে খুনের মামলা শুরু হয়েছে। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে। 

প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই আরেক ভহাবহ ঘটনা ঘটে বিহারে। বিহারের মুজফ্ফরপুরে ঘটনাটি ঘটেছে। এক ব্যক্তি তাঁর পাঁচ সন্তানকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেন। ঘটনার জেরে অভিযুক্তের তিন মেয়ে মারা যান। এরপর অভিযুক্ত বাবা নিজেও আত্মঘাতী হন। জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের নাম অমরনাথ রাম। তাঁর বয়স ৩৫ বছর। তিনি তাঁর পাঁচ সন্তান - অনুরাধা (১২), শিবানী (১১), রাধিকা (৭), শিবম (৬) এবং চন্দনকে (৫) দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে খুন করতে চান। ঘটনায় তাঁর তিন মেয়েই মারা গিয়েছে। তবে দুই ছেলে কোনওমতে প্রাণে বেঁচে যায়।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত অমরনাথ প্রথমে তাঁর পাঁচ সন্তানকে একটি ট্রাঙ্কের ওপর দাঁড় করিয়ে সবার গলায় দড়ি পরিয়ে দেন। এরপর তিনি নিজের গলাতেও দড়ি বাঁধেন। অভিযোগ, বাবা ও তিন মেয়ে ঝাঁপ দেন, কিন্তু দুই ছেলে ঝাঁপ দিতে চায়নি।

 দুই ছেলের মধ্যে একজন শিবম। সে ঘটনাটি নিজের চোখে দেখে। সে জানিয়েছে যে কোনওমতে সে নিজের গলার দড়িটি খুলে ফেলেছিল। শিবম জানিয়েছে, "বাবা যখন শৌচাগার থেকে ফিরে এলেন, তখন তিনি একে একে আমাদের গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে দেন। আমি কোনওমতে দড়িটা খুলেছিলাম বলে বেঁচে গিয়েছি।"

খবর অনুযায়ী, দুই ছেলে এখন হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের চিকিৎসা চলছে। কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, গত বছর অমরনাথের স্ত্রী মারা যান। স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকেই তিনি মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছিলেন। গ্রামের লোকজন পুলিশকে আরও বলেছেন, তিনি টাকা-পয়সার অভাবে ভুগছিলেন। ফলত একা পাঁচ-পাঁচটি সন্তানকে বড় করার চাপও নিতে পারছিলেন না।

কেন তিনি এমন কাজ করলেন, তার সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। পুলিশ মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। একইসঙ্গে সবদিক থেকে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তারা আশা করছে, বেঁচে যাওয়া দুই ছেলের বয়ান থেকে ঘটনার সত্যতা যাচাই করা যাবে। ঘটনার জেরে সাকরা থানায় ইতিমধ্যেই একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনার প্রমাণ জোগাড়ের জন্য ফরেন্সিক দলের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।