আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি তাদের স্নাতক ভর্তির ফর্মে ভাষা সংক্রান্ত একটি মারাত্মক বিতর্কে জড়িয়েছে। ফর্মের 'মাতৃভাষা' বিভাগে যথাযথ ভাষার পরিবর্তে 'চাম', 'মজদুর', 'দেহাতি', 'মুচি', 'কুর্মি', 'মুসলিম', এমনকি 'বিহারী'-র মতো আপত্তিকর শব্দ অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। অন্যদিকে, উর্দু, মৈথিলী, ভোজপুরী, মগহী বা এমনকি বাংলা ভাষার অনুপস্থিতি নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
বিশেষত ‘মুসলিম’ শব্দটি মাতৃভাষার জায়গায় ব্যবহৃত হওয়াকে ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে প্রবল প্রতিবাদ উঠে এসেছে। বিষয়টি প্রথম প্রকাশ্যে আনেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা ও ডেমোক্র্যাটিক টিচার্স ফ্রন্ট (DTF)-এর সম্পাদক অধ্যাপক আভা দেব হাবিব। তিনি একে ‘ইসলামোফোবিক ও সাম্প্রদায়িক মানসিকতার প্রকাশ’ বলে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন।
শিক্ষার অধিকার নিয়ে কাজ করা অল ইন্ডিয়া ফোরাম ফর রাইট টু এডুকেশন (AIFRTE) কটাক্ষ করে প্রশ্ন তোলে, “এভাবে কি এবার হিন্দিকে বদলে ‘হিন্দু’ ভাষা করা হবে?” ফোরাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে প্রকাশ্য ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানিয়েছে এবং এই ঘটনাকে ‘অজ্ঞতা ও সাম্প্রদায়িকতা’র মিলিত বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছে। এনিয়ে রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াও এসেছে। কংগ্রেস এই ঘটনাকে ‘সুনির্বাচিত ষড়যন্ত্র’ বলে বর্ণনা করেছে, যেখানে বিজেপি এটিকে 'একটি মানবিক ভুল' বলে ব্যাখ্যা দিয়েছে।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চায়নি, তবে সূত্রের খবর, সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং বিতর্কিত শব্দগুলি সরিয়ে ভাষার তালিকায় যথাযথ সংস্কার আনা হবে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষাঙ্গনে ভাষাগত বৈচিত্র্য ও সংবেদনশীলতার প্রশ্ন নতুন করে সামনে উঠে এসেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন অবহেলা কেবলমাত্র প্রশাসনিক গাফিলতি নয়, বরং একটি গভীর সাংস্কৃতিক সংকটের প্রতিফলন বলেই মনে করছেন শিক্ষাবিদরা।
