আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলকে অস্বাভাবিক বলে দাবি করলেন CPI(ML) লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। রবিবার সাংবাদিকদের তিনি অভিযোগ করেন, ভোটের আগে রাজ্য সরকার তিনটি বড় পরীক্ষা চালিয়েছে, যেগুলোর সরাসরি প্রভাব পড়েছে চূড়ান্ত ফলাফলে।

মহাগঠবন্ধনের শরিক CPI(ML) এ বার ২০টি আসনে লড়ে মাত্র ২টিতে জিতেছে। ২০২০ সালে ১৯টিতে লড়ে ১২টি আসন পাওয়া দলটির জন্য এই ফল তাই বড় ধাক্কা।

দীপঙ্করের অভিযোগ, প্রথম পরীক্ষা ছিল মহিলা রোজগার যোজনার প্রথম কিস্তি হিসেবে মহিলাদের অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা ট্রান্সফার করা। তিনি বলেন, ভোট ঘোষণার ঠিক আগে এই টাকা পাঠানো ভারতের নির্বাচনী ইতিহাসে নজিরবিহীন এবং এতে পরিষ্কারভাবে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা হয়েছে।

দ্বিতীয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে তিনি দাবি করেন, SIR প্রক্রিয়ায় প্রায় ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ে, পরে আবার ৩.৫ থেকে ৪ লক্ষ নাম যুক্ত করা হয়। তাঁর মতে, এত বড় মাত্রায় নাম বাদ পড়া নির্বাচনের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলেছে।

তৃতীয় পরীক্ষাটি ছিল একটি বড় কর্পোরেট সংস্থার কাছে অত্যন্ত কম দামে সরকারি জমি হস্তান্তর। দীপঙ্করের অভিযোগ, এই ধরনের পদক্ষেপ ভবিষ্যতে বিহারের সম্পদ কর্পোরেটদের হাতে তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক করে তুলতে পারে। তবে এই বিতর্কজনক সিদ্ধান্তও ভোটারদের মনোভাব বদলাতে পারেনি বলে তিনি মনে করেন।

তিনি আরও বলেন, এই তিনটি পরীক্ষা ভারতের রাজনীতির ভবিষ্যৎ দিক নির্ধারণ করতে পারে। এমন প্রক্রিয়া চলতে থাকলে আর কোনও লেভেল-প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে না। দল আগামী ১৮ থেকে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে ফিডব্যাক এবং জনসংযোগ অভিযান চালাবে।

দীপঙ্কর ২০১০ সালের নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা টেনে বলেন, তখন নীতীশ কুমার উত্থানের শীর্ষে ছিলেন, আর এখন তাঁর সরকার এবং কেন্দ্রে NDA— দু’টির প্রতিই জনমেজাজ অনুকূল নয়।

তিনি ভোট-সিট অনুপাতের সমস্যার কথাও উল্লেখ করেন। তাঁর দাবি, CPI(ML)-এর ভোট শতাংশ ২০২০ সালের প্রায় সমান হলেও আসন সংখ্যা নাটকীয়ভাবে কমে যাওয়া নির্বাচনী ব্যবস্থার গাঠনিক ত্রুটি তুলে ধরে। বিহারের এই নির্বাচনী ফলাফল এবং CPI(ML)-এর অভিযোগে রাজনৈতিক মহলে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে।