আজকাল ওয়েবডেস্ক: ৮ জুলাই ধুবরি জেলার বিলাসিপাড়া এলাকায় আসাম সরকারের প্রস্তাবিত ৩,৪০০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য প্রায় ২,০০০ মিয়া মুসলিম পরিবারের ঘরবাড়ি বুলডোজারে গুঁড়িয়ে দিল জেলা প্রশাসন। চার দিন আগে, ৪ জুলাই ঘোষণা করে প্রশাসন জানিয়ে দেয় যে এলাকা খালি করতে হবে। ৫ জুলাই থেকেই চপার সার্কেল অফিস থেকে বিভিন্ন গ্রামে উচ্ছেদের নোটিশ টাঙানো হয়।

চিরাকুটা, সান্তোষপুর ও চারুয়াবাখরা জঙ্গল ব্লক-সহ চারটি গ্রামের প্রায় ৫,০০০ বিঘা জমিতে এই উচ্ছেদ চলেছে, যা থেকে অন্তত ১০,০০০ মানুষ ঘরছাড়া হবেন বলে আশঙ্কা। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকল্পটি প্রথমে কোকরাঝারে স্থাপনের কথা থাকলেও স্থানীয়দের প্রতিবাদের মুখে তা মুসলিম অধ্যুষিত বিলাসিপাড়ায় সরিয়ে আনা হয়।

চিরাকুটা গ্রামের বাসিন্দা আজিরান নেসা ক্ষোভে বলেন, “৫০ হাজার টাকা দিয়ে কীভাবে বাঁচব? সরকার তো আমাদের নদীর মধ্যে পাঠাতে চাইছে।” উচ্ছেদের নোটিশ ১৮৮৬ সালের আসাম ল্যান্ড অ্যান্ড রেভিনিউ রেগুলেশনের অধীনে জারি করা হয়। পরিবারপিছু ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ এবং বয়জের আলগা নামক চরাঞ্চলে পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, যেখানে নেই জল, রাস্তা, স্বাস্থ্য বা শিক্ষার পরিকাঠামো।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, প্রকল্প স্থলে আদানি গোষ্ঠীর পরিচালক জিত আদানি ২২ এপ্রিল পরিদর্শনে এসেছিলেন। ২৪ জুন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সফরের পর উচ্ছেদ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। এখন পর্যন্ত ৩,০০০-র বেশি পুলিশ মোতায়েন, ১০০-রও বেশি বুলডোজার দিয়ে অভিযান চলছে। আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশি হামলা হয়েছে; কমপক্ষে তিনজন মহিলা আহত হয়েছেন। শতাধিক পরিবার হাইকোর্টে মামলা করেছেন। শুনানি ২২ জুলাই।

রাইজর দল নেতা ও বিধায়ক অখিল গগৈ এলাকায় গেলে তাঁকে পুলিশ আটক করে অন্য জেলায় ফেলে আসে। গগৈ বলেন, “এই উচ্ছেদ মুসলিম বিদ্বেষমূলক রাজনৈতিক কৌশল।”