আজকাল ওয়েবডেস্ক: ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলায় এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে। সোমবার স্কুলে পাঁচ মিনিট দেরিতে পৌঁছনোর অপরাধে ২০০ বার সিটআপ করানোর নির্দেশ দেওয়া হয় চার ছাত্রীকে। পরবর্তীতে তারা বমি করতে শুরু করে এবং সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। বর্তমানে ওই ছাত্রীরা জামশেদপুরের এমজিএম হাসপাতালে আইসিইউ-তে চিকিৎসাধীন। ঘটনাটি ঘটেছে পতমদা ব্লকের বাগুন্ডার কস্তুরবা গান্ধী বালিকা বিদ্যালয়ে। জানা গিয়েছে, দ্বাদশ শ্রেণীর চার পড়ুয়াকে এই শাস্তি দিয়েছেন এক শিক্ষক। অভিযোগ, পাঁচ মিনিট দেরিতে স্কুলে আসার জন্য ২০০ বার সিটআপ মারতে বলেন তিনি। ছাত্রীদের পরিবারের সদস্যরা জানান, শাস্তির পর ছাত্রীদের বমি শুরু হয় এবং তারা অজ্ঞান হয়ে যায়। প্রথমে তাদের মাচা কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়, তারপর সেখান থেকে জামশেদপুর এমজিএম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

জেলা শিক্ষা আধিকারিক মনোজ কুমার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানান, তিনি এই ঘটনার তদন্ত করবেন এবং দোষী প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিন হাসপাতাল পরিদর্শনে যান ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার বিধায়ক মঙ্গল কালিন্দি। তিনি জানান, চারজনের মধ্যে দু’জন ছাত্রী ওই শাস্তির সময় উপোস করেছিল। কারণ সেদিন শ্রাবণ মাসের পবিত্র সোমবার পড়েছিল। তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পড়ুয়াদের বিশেষ যত্ন নেওয়ার নির্দেশ দেন। যদিও ছাত্রীরা বর্তমানে স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। প্রসঙ্গত, কস্তুরবা গান্ধী বালিকা বিদ্যালয়ের ব্যান্ড দল এই বছরের প্রজাতন্ত্র দিবস প্যারেডে পারফর্ম করে প্রশংসা কুড়িয়েছিল। এমন একটি বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সঙ্গে এমন ঘটনার প্রকাশ্যে আসায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে জেলা শিক্ষা মহলে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি তেলেঙ্গানার এক বিদ্যালয়ের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ৬০ ছাত্রী।

আরও পড়ুন: কোটি টাকার হিরে পেপারওয়েট হিসেবে ব্যবহার করেতেন এই ভারতীয় ব্যক্তি, কোথায় এখন সেই অমূল্য রতন?

সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে শিক্ষামহলে। জানা যায়, তেলেঙ্গানার উয়্যালাওয়াড়া অঞ্চলে ওই আবাসিক বিদ্যালয়টি অবস্থিত। জানা গিয়েছে শনিবার রাতের খাবার খাওয়ার পর মোট ৬৪ জন ছাত্রী পরপর বমি, অসম্ভব পেট ব্যথা ও ডায়রিয়ার মতো উপসর্গ নিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি হয়। জানাজানি হতে অভিভাবকরা বিক্ষোভ করা শুরু করেন।  স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অসুস্থ ছাত্রীদের নাগারকর্ণুল জেলার সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসা শেষে ৫০ জন ছাত্রীকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি ছাত্রীরাও চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাঁদের অবস্থাও ধীরে ধীরে স্থিতিশীল দিকে এগোচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ছাত্রীরা যে দই খেয়েছিল তা সম্পূর্ণরূপে ফারমেন্টেড ছিল না। সম্ভবত এটিই অসুস্থতার পেছনে মূল কারণ হতে পারে বলে ধরা হচ্ছে। যদিও, নিশ্চিতভাবে এখনও কিছু বলা যায়নি। এই ঘটনার পর বাকি তদন্ত শুরু হয়েছে। পাশপাশি বিদ্যালয়ের খাবার ও পানীয় জলের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: নামের বানানে ছোট্ট ভুল, পুলিশের দোষে সাদাসিধে প্রৌঢ়ের জীবনে ঝড়, ১৭ বছর অপরাধী হয়েই কাটালেন!