গত শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৫ এ কলকাতা প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত হল একাকী নয়, মাইন্ড সেট ও স্পিচ প্লাস ও ভাষা সংসদের উদ্যোগে একটি সেমিনার। তথাকথিত বিশেষভাবে চিহ্নিত প্রতিবন্ধী শিশুদের ও তাদের বাবা-মায়ের নিয়ে হল সেমিনারটি। এর উদ্দেশ্য ছিল সমাজে নানাভাবে অবহেলিত, বঞ্চিত এই সময় মানুষদের সচেতনতা বৃদ্ধি।  

 

 

এই অনুষ্ঠানের বক্তা হিসেবে ছিলেন ডাক্তার মনোবিদ দেবাঞ্জন পান,ড. স্পিচ থেরাপিস্ট সোমনাথ মুখার্জি, সিনিয়র আইনজীবী দেবযানী সেনগুপ্ত, আইনজীবী ও এই বিষয় নিয়ে কাজ করা কৌশিক গুপ্ত, আইনজীবী মলয় কংসবনিক, শ্রেয়শী চ্যাটার্জি  ও রম্যানি ঘোষাল।

 

 


রম্যানি জানান, তাঁর এই পথ চলা শুরু হয়েছিল ২০০৩ সালে, যখন এক অসহায় মা তাঁর মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী সন্তানকে কে দেখবেন তাঁর অবর্তমানে এই ভাবনা নিয়ে তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন দেখভালের। সেই থেকে তিনি এই সমস্ত বিশেষ মানুষদের পাশে দাঁড়ানর চেষ্টা করে চলেছেন।

 

 


ডাক্তার পান ও মুখার্জি জানান তাঁরা চিকিৎসার দ্বারা সেসব শিশুদের সমাজের মূল স্রোতে আনার চেষ্টা করলেও বহু ক্ষেত্রেই স্কুল, পরিবেশ এবং পথেঘাটে তাদের হেনস্তার শিকার হতে হয়। এমনকী এই কারণে অনেক বাবা-মা সন্তান-সহ আত্মহত্যাও করেছেন লড়াই করতে না পেরে।

 


প্রখ্যাত আইনজীবী ম্যাডাম দেবযানী সেনগুপ্ত ও কৌশিক গুপ্ত এইসব শিশুদের ও তাদের পরিবারের জন্য কি কি আইন রয়েছে সংবিধানে, কীভাবে সেগুলো প্রয়োগ করা যায়, স্কুল, পাড়া, বা জনসমক্ষে তাদের হেনস্তা করলে কোন কোন ধারায় অভিযোগ করা যায়, পাশাপাশি এদের জন্য স্কলারশিপ,  কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প, বিভিন্ন কোর্টে এদের সুবিধা দেওয়ার আবেদন,হাইকোর্টেও তাদের জন্য কোন কোন সুবিধা রয়েছে, প্রয়োজনে কোথা থেকে পেতে পারে আর্থিক সাহায্য, এসব নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেন। 

 

 

আলোচনায় প্রশ্নোত্তর পর্বে উঠে এল নানা বাস্তব সমস্যার কথাও। সকলেই এক সুরে বলেন এটা ব্যক্তিগত সমস্যা না ভেবে এখন সমষ্টিগত সমস্যা হিসাবে ভেবে দলবদ্ধভাবে সচেতনতা বাড়াতে হবে। কারণ এখন অধিকাংশ বাচ্চাই কোনও না কোনও অস্থিরতা ও অসুস্থতায় আক্রান্ত। আইনে অনেক কিছু বদলালোও মানুষের মনকে বদলাতে হবে, তবেই তারাও যে আর পাঁচজনের মতোই তা উপলব্ধি করবে সমাজ।

 

 

 

সবশেষে অনুষ্ঠানে ভাষা সংসদের পক্ষ থেকে বিতস্তা ঘোষাল বিশিষ্ট  অতিথিদের হাতে  উপহার হিসাবে বই ও গাছ তুলে দেন।