শরীর ফিট রাখতে আজকাল অনেকেই নিয়মিত জিমে যান। সঠিকভাবে ব্যায়াম করলে হৃদ্যন্ত্র সুস্থ থাকে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং স্ট্রেসও কমে। কিন্তু অজান্তেই জিমে কিছু ভুল করলে উল্টো হার্টের উপর মারাত্মক চাপ পড়তে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ভুলগুলো দীর্ঘদিন চললে হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়ে। তাই জিমে যাওয়ার আগে ও ব্যায়াম করার সময় এই বিষয়গুলো জানা খুব জরুরি।
অতিরিক্ত জোরে ব্যায়াম করা: অনেকেই দ্রুত ফল পাওয়ার আশায় প্রথম দিন থেকেই ভারী ওজন তোলা বা টানা কার্ডিও শুরু করেন। এতে শরীর তো প্রস্তুত থাকে না, উল্টো হার্টের গতি হঠাৎ বেড়ে যায়, রক্তচাপ বাড়ে। বিশেষ করে যাঁদের বয়স বেশি বা আগে থেকে কোনও সমস্যা আছে, তাঁদের জন্য এটা খুবই বিপজ্জনক। তাই ধীরে নিজের ক্ষমতা অনুযায়ী ব্যায়াম শুরু করা উচিত।
ওয়ার্ম-আপ না করা: জিমে ঢুকেই অনেকে সরাসরি দৌড়নো বা ভারী এক্সারসাইজ শুরু করেন। এতে পেশি ও হার্ট হঠাৎ চাপের মধ্যে পড়ে। ওয়ার্ম-আপ করলে রক্ত চলাচল ধীরে ধীরে বাড়ে এবং হার্ট ব্যায়ামের জন্য প্রস্তুত হয়। অন্তত ১০–১৫ মিনিট হালকা স্ট্রেচিং বা হাঁটা অবশ্যই দরকার।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম না নেওয়া: প্রতিদিন কঠিন ব্যায়াম করলে শরীর, বিশেষ করে হার্ট, ঠিকমতো বিশ্রাম পায় না। এতে ক্লান্তি জমে, হার্টের কর্মক্ষমতা কমে যেতে পারে। সপ্তাহে অন্তত ১–২ দিন সম্পূর্ণ বিশ্রাম রাখা খুব জরুরি।
জল কম পান করা: ব্যায়ামের সময় শরীর থেকে প্রচুর ঘাম বেরোয়। এতে জল ও প্রয়োজনীয় খনিজ লবণ কমে যায়। এর প্রভাব সরাসরি হার্টের উপর পড়ে। ডিহাইড্রেশন হলে হার্টকে বেশি পরিশ্রম করতে হয়। তাই ব্যায়ামের আগে, মাঝে ও পরে পর্যাপ্ত জল পান করা উচিত।
শরীরের সতর্ক সংকেত উপেক্ষা করা: ব্যায়ামের সময় যদি বুকে ব্যথা, মাথা ঘোরা, শ্বাস নিতে কষ্ট, অস্বাভাবিক হার্টবিট বা অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব হয়, তাহলে সেটাকে হালকাভাবে নেওয়া ঠিক নয়। অনেকেই এসব উপসর্গ উপেক্ষা করে ব্যায়াম চালিয়ে যান, যা বড় বিপদের কারণ হতে পারে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, জিম করা ভাল, কিন্তু সঠিক নিয়ম ও সতর্কতা মেনে না চললে হার্টের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কোনও রকম অস্বস্তি হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
