আমাদের শরীর কোনও সমস্যার আগে অনেক সময়ই ছোট ছোট সংকেত দিতে শুরু করে। কিন্তু আমরা সেগুলোকে তেমন গুরুত্ব দিই না। হৃদযন্ত্র দুর্বল হওয়ার ক্ষেত্রেও ঠিক এমনটাই হয়। বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন হার্টের সমস্যা মানেই হঠাৎ বুকে ব্যথা বা হার্ট অ্যাটাক। বাস্তবে হৃদযন্ত্র ধীরে ধীরে দুর্বল হলে শুরুতে কিছু সাধারণ লক্ষণ দেখা দেয়, যা সহজেই চোখ এড়িয়ে যায়।
চিকিৎসকদের মতে, হার্ট ফেইলিওর এমন একটি অবস্থা যেখানে হৃদযন্ত্র শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত পাম্প করতে পারে না। এর প্রভাব পড়ে ফুসফুস, কিডনি ও শরীরের অন্যান্য অঙ্গে।
১. অল্প কাজেই ক্লান্ত হয়ে পড়াঃ আগে যেসব কাজ অনায়াসে করতে পারতেন, সেগুলো হঠাৎ কঠিন লাগতে শুরু করেছে? সামান্য হাঁটাহাঁটি, বাজার করা বা সিঁড়ি ভাঙলেই ক্লান্ত লাগছে? অনেকেই এটিকে বয়স বা দুর্বলতা বলে এড়িয়ে যান। যা হৃদযন্ত্র দুর্বল হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হতে পারে।
২. পা ও গোড়ালি ফুলে যাওয়াঃ দিনের শেষে পা, গোড়ালি বা পায়ের পাতা ফুলে যাচ্ছে কি? জুতো হঠাৎ টাইট লাগছে? হৃদযন্ত্র ঠিকমতো রক্ত পাম্প করতে না পারলে শরীরে জল জমতে শুরু করে। এই অতিরিক্ত জল সবচেয়ে আগে জমে পা ও গোড়ালিতে।
৩. শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়াঃ হাঁটার সময় বা সামান্য কাজ করলেই যদি হাঁপিয়ে যান, তাহলে সতর্ক হওয়া দরকার। অনেক ক্ষেত্রে শুয়ে থাকলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, রাতে হঠাৎ শ্বাসকষ্টে ঘুম ভেঙে যায়। ফুসফুসে জল জমলে এমন সমস্যা দেখা দেয়।
৪. হঠাৎ ওজন বেড়ে যাওয়াঃ খাবারের অভ্যাস একই থাকলেও যদি কয়েক দিনের মধ্যে ওজন বেড়ে যায়, তাহলে তা ফ্যাট নয়, বরং শরীরে জমে থাকা জল হতে পারে। এটি হৃদযন্ত্র দুর্বল হওয়ার একটি নীরব সংকেত।
৫. রাতে ঘন ঘন প্রস্রাবঃ অনেকেই ভাবেন বয়স বাড়লে রাতে প্রস্রাবের সমস্যা স্বাভাবিক। কিন্তু হৃদযন্ত্র দুর্বল হলে শরীরের তরল ভারসাম্য নষ্ট হয়, যার ফলে রাতে বারবার প্রস্রাব পেতে পারে।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন? যদি এই ধরনের লক্ষণগুলো খেয়াল করেন তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। সময়মতো চিকিৎসা শুরু হলে হৃদযন্ত্রের ক্ষতি অনেকটাই কমানো সম্ভব। মনে রাখবেন, শরীর কখনও অকারণে সংকেত দেয় না। ছোট লক্ষণগুলোই বড় বিপদের আগাম বার্তা হতে পারে।
&t=102s