আজকাল ওয়েবডেস্ক: আধুনিক জীবনযাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যে অসুখগুলি ঘরে ঘরে নিঃশব্দে হানা দিচ্ছে, তার মধ্যে অন্যতম উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন। কর্মক্ষেত্রের বিপুল চাপ, খাদ্যাভ্যাসে অনিয়ম এবং বিশ্রামের অভাব- এই ত্রিফলা আক্রমণে রক্তচাপের কাঁটা ঊর্ধ্বমুখী। চিকিৎসকেরা একে ‘নীরব ঘাতক’ বলেন, কারণ অনেক ক্ষেত্রেই এর নির্দিষ্ট কোনও উপসর্গ থাকে না, অথচ শরীরের ভিতরে হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্ক বা কিডনির মারাত্মক ক্ষতি করে হয়ে যায়।
চিকিৎসকের পরামর্শ এবং ওষুধপত্র এই রোগের মোকাবিলায় প্রধান হাতিয়ার। তবে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, শুধুমাত্র ওষুধের উপর ভরসা না করে জীবনযাত্রায় কিছু সাধারণ পরিবর্তন আনলে এবং রান্নাঘরের সহজলভ্য কয়েকটি উপাদানের সাহায্য নিলে রক্তচাপকে বশে রাখা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: মধুচক্র চালানোয় অভিযুক্ত অভিনেত্রী অনুষ্কা দাস! সেক্স র‍্যাকেট থেকে উদ্ধার বাংলা সিরিয়ালের আরও ২ নায়িকা! তুলকালাম মহারাষ্ট্রে 
১। নুনকে না বলুন: উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের প্রথম এবং প্রধান শর্ত হল লবণ বা সোডিয়াম ক্লোরাইড খাওয়া কমানো। শুধুমাত্র রান্নায় কম নুন দেওয়াই যথেষ্ট নয়, বিপদ লুকিয়ে থাকে বাইরের কেনা খাবারেও। চিপস, নোনতা বিস্কুট, চানাচুর, আচার, পাঁপড় এবং বিভিন্ন ধরনের সস- এই ধরনের খাবারগুলিতে প্রচুর পরিমাণে লবণ থাকে। তাই এগুলি বর্জন করা জরুরি।
২। পটাসিয়ামের সঙ্গে বন্ধুত্ব: শরীরে সোডিয়ামের প্রভাব কমাতে পটাসিয়াম অপরিহার্য। এই খনিজটি রক্তনালীকে শিথিল রাখতে এবং অতিরিক্ত সোডিয়াম শরীর থেকে বার করে দিতে সাহায্য করে। তাই খাদ্যতালিকায় নিয়মিত রাখুন কলা, ডাবের জল, পালং শাক, মিষ্টি আলু, টমেটো এবং বিনসের মতো পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার।
৩। মহৌষধ রসুন: বহু যুগ ধরেই হৃদরোগের সমস্যায় রসুনের ব্যবহার হয়ে আসছে। রসুনের মধ্যে থাকা অ্যালিসিন নামক যৌগ নাইট্রিক অক্সাইডের উৎপাদন বাড়িয়ে রক্তনালীকে প্রসারিত করে। ফলে রক্তচাপ কমে। চিকিৎসকদের একাংশের মতে, প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক কোয়া কাঁচা রসুন চিবিয়ে খেলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় উপকার মিলতে পারে।
৪। শরীরচর্চা আবশ্যক: জিমে গিয়ে ভারী ব্যায়াম করার প্রয়োজন নেই। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট দ্রুতগতিতে হাঁটা, সাঁতার কাটা বা সাইকেল চালানোর মতো অভ্যাস গড়ে তুলুন। নিয়মিত শরীরচর্চা করলে হৃদযন্ত্র শক্তিশালী হয়। হৃদযন্ত্র শক্তিশালী হলে সেটি সহজেই সারা দেহে রক্ত সঞ্চালন করতে পারে, যা ধমনীর উপর চাপ কমায়। ফলে রক্তচাপও কমে যায়।
৫। মানসিক চাপ কমান: দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপের কারণে শরীরে এমন কিছু হরমোন নিঃসৃত হয়, যা সাময়িকভাবে রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। দীর্ঘমেয়াদী ভাবে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত ধ্যান, প্রাণায়াম বা গভীর শ্বাসপ্রশ্বাসের অভ্যাস করুন। পছন্দের গান শোনা বা বই পড়ার মতো শখও মন শান্ত রাখতে পারে।
আরও পড়ুন: মধুচক্র চালানোয় অভিযুক্ত অভিনেত্রী অনুষ্কা দাস! সেক্স র‍্যাকেট থেকে উদ্ধার বাংলা সিরিয়ালের আরও ২ নায়িকা! তুলকালাম মহারাষ্ট্রে 

তবে মনে রাখা জরুরি, এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলি কোনওমতেই চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধের বিকল্প নয়। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনওই রক্তচাপের ওষুধ বন্ধ করা উচিত নয়। জীবনযাত্রায় শৃঙ্খলা, সুষম আহার এবং চিকিৎসকের নিয়মিত পর্যবেক্ষণের ত্রিবেণী সঙ্গমেই এই ‘নীরব ঘাতক’কে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।