বলিউড তারকাদের নিয়ে জনপ্রিয় ইউটিউবার ধ্রুব রাঠীর ‘নকল সৌন্দর্য’ নিয়ে নতুন ভিডিও প্রকাশের পর থেকেই নেটদুনিয়ায় তুমুল জল্পনা, জাহ্নবী কাপুর কি তবে এবার ধ্রুবর নিশানায়? কারণ এই ভিডিও মুক্তি পাওয়ার ঠিক আগেই বাংলাদেশের ময়মনসিংহে হিন্দু যুবক দীপু চন্দ্র দাসের হত্যাকাণ্ড ঘিরে প্রতিবেশী দেশজুড়ে যখন উত্তেজনা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়া শুরু হয়েছে, আর ঠিক তখনই মুখ খুলেছেন বলিউড অভিনেত্রী জাহ্নবী কাপুর। সামাজিক মাধ্যমে এক নাতিদীর্ঘ পোস্ট করে এই নির্মম ঘটনাকে ‘বর্বরতা’ বলে আখ্যা দিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন মানবতা ও নীরবতার রাজনীতিকে। আর তারপর এই সময়েই ধ্রুব-র আলোচিত ভিডিও প্রকাশ! ব্যাপারটা দেখে নেটপাড়ার একাংশের দাবি, জাহ্নবীকে উদ্দেশ্য করেই কটাক্ষ করেছেন ইউটিউবার। তবে এই অভিযোগকে সরাসরি উড়িয়ে দিয়ে ধ্রুব রাঠী স্পষ্ট বললেন, “লোকজন নিজের মাথাটাকে কাজে লাগাচ্ছে  না।”

 


গত ২৫ ডিসেম্বর ধ্রুব রাঠী প্রকাশ করেন তাঁর নতুন ইউটিউব ভিডিও ‘দ্য ফেক বিউটি অফ বলিউড সেলিব্রেটিজ’।  যেই ভিডিওতে তিনি দাবি করেন, জাহ্নবী কাপুর, বিপাশা বসু, শ্রুতি হাসান, দীপিকা পাড়ুকোন, শিল্পা শেঠি, কাজল থেকে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া সহ অনেকে বলি অভিনেত্রী-ই নাকি প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে নিজের লুক বদলেছেন। আর এই ভিডিও প্রকাশের পরই নানা জায়গায় শুরু হয় কানাঘুষো, এ কি তবে জাহ্নবীর বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মন্তব্যের পালটা জবাব?

 

শনিবার ধ্রুব নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও শেয়ার করে এই জল্পনার জবাব দেন। তাতে তাঁর সোজাসাপটা মন্তব্য, “ঈশ্বর তো বুদ্ধি দিয়েছেন, সেটা ব্যবহারও করতে শিখুন। যেদিন জাহ্নবী পোস্ট করেছেন, ঠিক সেদিনই আমি আধ ঘণ্টার মধ্যে এই ভিডিও সমাজমাধ্যমে আপলোড করেছি। এত বড় ভিডিও কি একদিনেই রিসার্চ করে, শুট করে, এডিট করে আপলোড করা সম্ভব?” পাশাপাশি তিনি জানান, তিনিও বাংলাদেশের হিন্দুদের প্রসঙ্গে ভিডিও করেছেন, তাই সে প্রসঙ্গে “পরোক্ষে কারও দিকে কটাক্ষ” করার প্রশ্নই ওঠে না! 

 

ধ্রুব রাঠী আরও বলেন, তাঁর ভিডিওর মূল উদ্দেশ্য বলিউডের প্লাস্টিক সার্জারি কালচার আর তার সামাজিক প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা। “পুরো ভিডিওতেই আমি জাহ্নবীকে একবারও প্রশ্ন করিনি,” যুক্তি তাঁর। ইউটিউবের থাম্বনেইল বদলানোর অভিযোগ নিয়েও তিনি জানান, তাঁর সব ভিডিওতেই নাকি একাধিক থাম্বনেইল  রাখেন।

?ref_src=twsrc%5Etfw">December 27, 2025

 

 

 

 

এদিকে জাহ্নবী কাপুর বাংলাদেশে দীপু চন্দ্র দাসের হত্যাকে “বর্বরতা” বলে উল্লেখ করে ধিক্কার জানিয়ে তাঁর নোটে লেখেন, “বাংলাদেশে যা ঘটছে তা নিছক কোনো ঘটনা নয়, এটি নির্মম হত্যাকাণ্ড এবং একক ঘটনা হিসেবে দেখার ভুল করবেন না। যে কেউ যদি এখনও বিষয়টি না জেনে থাকেন, তবে জেনে নিন। ভিডিও দেখুন, প্রশ্ন তুলুন। আর এতকিছুর পরও যদি কারও মনে ক্ষোভ না জাগে, তবে এই নির্লিপ্ততাই আমাদের ধ্বংস করবে।” তিনি আরও জানান, আমরা অনেক সময় দূর দেশের মানবিক সংকট নিয়ে কথা বলি, অথচ নিজের আশপাশে ঘটে যাওয়া নির্মমতা নিয়ে চুপ থাকি! এটাই সবচেয়ে বড় ভণ্ডামি। শুধু নিন্দা নয়, অভিনেত্রী স্পষ্ট করে বলেন, “যে কোনও ধরনের চরমপন্থাকেই আজকে প্রশ্ন করার সময় এসেছে। নইলে একসময় আমরা নিজেরাই মানবতা কী, সেটাই ভুলে যাব। নিজেদের নিরাপদ মনে করা অদৃশ্য রেখার মধ্যে আবদ্ধ না থেকে সত্যিটা বুঝতে হবে, জানতে হবে এবং নিরীহ মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।”

 

 

 

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের ময়মনসিংহে ২৫ বছর বয়সি দীপু চন্দ্র দাসের উপর গণপিটুনি ও নৃশংস হত্যার অভিযোগে দেশে যেমন ক্ষোভ ছড়িয়েছে, তেমনই আন্তর্জাতিক মহলেও উঠেছে প্রশ্ন। অভিযোগ, ‘ধর্ম অবমাননা’-র অভিযোগের জেরে তাঁকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয় এবং পরে তাঁর দেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে সড়ক যোগাযোগ পর্যন্ত থমকে যায়। এই ঘটনায় সংখ্যালঘু নিরাপত্তা নিয়ে ফের নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।এই ঘটনায় সংখ্যালঘু নিরাপত্তা নিয়ে ফের নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

 

 

সোশ্যাল মিডিয়ার এই গোটা বিষয়টি নিয়ে উত্তাপ এখনও কমেনি। তবে ধ্রুব রাঠীর দাবি স্পষ্ট, তাঁর ভিডিওর লক্ষ্য জাহ্নবী নন, বরং বলিউডের ‘সৌন্দর্য্যের সংস্কৃতি’ আর সেই নিয়েই আলোচনায় থাকতে চান তিনি।