বলিউড নিয়ে বিস্ফোরক শেহনাজ

‘বিগ বস ১৩’-এর মঞ্চ থেকে যাত্রা শুরু করে আজ নিজের পথ নিজেই তৈরি করছেন শেহনাজ গিল। অভিনেত্রী থেকে প্রযোজক, এই রূপান্তরের গল্পটা কোনও হঠাৎ সিদ্ধান্ত নয়, বরং দীর্ঘ অপেক্ষা, হতাশা আর আত্মবিশ্বাসের ফল। সম্প্রতি নিজের কেরিয়ারের এই টার্নিং পয়েন্ট নিয়েই খোলামেলা কথা বললেন শেহনাজ। ২০১৯ সালে ‘বিগ বস ১৩’-এর মাধ্যমে দেশজুড়ে পরিচিতি পাওয়ার পর শেহনাজ বলিউডে পা রাখেন ‘কিসি কা ভাই কিসি কি জান’ এবং ‘থ্যাঙ্ক ইউ ফর কামিং’-এর মতো ছবিতে। কিন্তু ক্যামেরার সামনে থাকার পরেও কাজ নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না তিনি। সেই অসন্তোষ থেকেই জন্ম নেয় এক বড় সিদ্ধান্ত, নিজেই প্রযোজনা করবেন ছবি। ফল, তাঁর প্রযোজিত প্রথম ছবি ‘ইক কুড়ি’, যা ৩১ অক্টোবর মুক্তি পেয়ে সাফল্যও পায়।

‘বিগ বস ১৯’-এর একটি পর্বে সলমন খানের সামনে শেহনাজ যে মন্তব্যটি করেছিলেন, তা যথেষ্ট আলোড়ন ফেলে। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য ছিল, “আমার উপর কেউ টাকা লাগাচ্ছে না, তাই আমি নিজেই নিজের উপর টাকা লাগিয়েছি।” এই কথার নেপথ্যে যে বাস্তব হতাশা ছিল, তা তিনি পরে এক সাক্ষাৎকারে খোলসা করেন। শেহনাজ জানান, তিনি ভালো গল্প পাচ্ছিলেন না। অনেক ছবিতে তাঁকে শুধুই একটি ‘প্রপ’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। অভিনেত্রী বলেন, প্রায় একই ধরনের গল্প, কোনও নতুনত্ব নেই, কোনও শক্ত বার্তাও নেই, এই ধরনের প্রস্তাবই ঘুরে ফিরে আসছিল। অফার ছিল অনেক, কিন্তু তিনি জানতেন, নিজের উপর লগ্নি করলে সেই কাজটার মানে থাকতে হবে।


সইফের ‘নবাবগিরি’!

বলিউডে ফের চমক, শুটিং শুরুর ঠিক আগমুহূর্তে ছবি ছাড়লেন সইফ আলি খান। পরিচালক স্নেহা তৌরানির আসন্ন ছবিটি নিয়ে সব প্রস্তুতি যখন শেষ, ঠিক তখনই প্রজেক্ট থেকে সরে দাঁড়ালেন অভিনেতা। পরিস্থিতি এতটাই হঠাৎ যে প্রযোজক ও টিমকে কার্যত রাতারাতি নতুন মুখ খুঁজতে বাধ্য হতে হয়েছে।সূত্রের খবর, সইফ ছবিটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে সই করেছিলেন, এমনকি গত ২৭ অক্টোবর ২০২৫-এ অনুষ্ঠিত মহরত অনুষ্ঠানেও উপস্থিত ছিলেন তিনি। শুটিং শুরু হওয়ার কথা ছিল কয়েক দিনের মধ্যেই। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে সিদ্ধান্ত বদলান অভিনেতা। এই প্রসঙ্গে এক ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, “সইফের মনে হচ্ছিল না এটা তাঁর করার মতো ঠিক ছবি।” তবে এত দেরিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়াতেই সমস্যার সূত্রপাত।

ছবিটির প্রযোজক রমেশ তৌরানির সঙ্গে সইফের সম্পর্কও দীর্ঘদিনের। ‘ক্যায়া কেহনা’ (২০০০) থেকে শুরু করে ‘রেস’, ‘রেস ২’ এবং ‘ভূত পুলিশ’ (২০২১), একাধিক সফল ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছেন দু’জন। তাই সইফের এই সিদ্ধান্ত শুধু অবাক করার মতো নয়, ব্যক্তিগত স্তরেও ধাক্কা বলেই মনে করছেন ইন্ডাস্ট্রির একটি বড় অংশ।তবে ক্ষত সামলাতে দেরি করেননি তৌরানি। শোনা যাচ্ছে, সাইফের পরিবর্তে ইতিমধ্যেই সানি কৌশালকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। এই ছবির মাধ্যমে পরিচালক স্নেহা তৌরানির সঙ্গে আবার কাজ করতে চলেছেন সানি, এর আগে ২০২০ সালে ‘ভাংড়া পা লে’ ছবিতে এই জুটির কাজ নজর কেড়েছিল।

ইন্ডাস্ট্রির অন্দরমহলের খবর অনুযায়ী, সইফের আচরণে নাকি “গভীরভাবে ক্ষুব্ধ” রমেশ তৌরানি। এমনকি ভবিষ্যতে দু’জনের একসঙ্গে কাজ করার সম্ভাবনাও প্রায় শেষ বলেই মনে করা হচ্ছে। এর ফলে প্রশ্নের মুখে পড়েছে সইফের সম্ভাব্য ‘রেস ৪’ এবং ‘ভূত পুলিশ ২’-এর ভবিষ্যৎ।

 

তরতরিয়ে এগোচ্ছে ‘তেরে ইশক মেঁ’ 

বক্স অফিসে নিজেদের জায়গা শক্ত করেই ধরল আনন্দ এল রাই-ধনুষ জুটি। গত শুক্রবার প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়া ‘তেরে ইশক মেঁ’ মুক্তির আগেই যে প্রত্যাশার পাহাড় তৈরি করেছিল, প্রথম সপ্তাহেই তার বড় অংশের উত্তর দিয়ে দিল ছবিটি। পোক্ত শুরু করার পর  ছন্দ হারায়নি এই রোম্যান্টিক ড্রামা,আর সেটাই এখন ছবিটির সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট।

স্যাকনিল্কের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, মুক্তির ৭ম দিনে (বৃহস্পতিবার) ছবিটি সংগ্রহ করেছে ৪.৮১ কোটি টাকা। আগের দিনের তুলনায় সামান্য কম থাকলেও, সপ্তাহের মাঝামাঝি দিনেও ছবির এই ধরে রাখা কালেকশন নির্মাতাদের স্বস্তি দিচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ছবির এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় একদিনের আয় ১৯ কোটি টাকা, যা এসেছিল প্রথম রবিবারে। মুক্তির সাতদিন শেষে ‘তেরে ইশক মেঁ’-এর মোট আয় দাঁড়িয়েছে ৮২.৬৬ কোটি টাকা। আর এখানেই তৈরি হয়েছে বড় মাইলফলক। এই আয়ের মাধ্যমে ছবিটি ছাড়িয়ে গিয়েছে হৃতিক রোশন ও সইফ আলি খান অভিনীত ‘বিক্রম বেদা’-র  ভারতীয় বক্স অফিসের মোট কালেকশন। ২০২২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সেই ছবিটি মোট আয় করেছিল ৭৮.৯ কোটি টাকা।

আনন্দ এল রাই ও ধনুষ এই নিয়ে তৃতীয়বার একসঙ্গে কাজ করলেন, আর প্রতিবারের মতো এবারও দর্শকের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করতে সফল এই জুটি। প্রথম সপ্তাহে ছবির গল্প, অভিনয় ও সংগীত-সব মিলিয়ে যে ইতিবাচক মুখের কথা তৈরি হয়েছে, সেটাই বক্স অফিসে প্রতিফলিত হচ্ছে বলে মনে করছেন বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা। তবে চ্যালেঞ্জ এখনও বাকি। রণবীর সিংয়ের বড় ছবি ‘ধুরন্ধর’ আগামীকাল প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে। ফলে দ্বিতীয় সপ্তাহে ‘তেরে ইশক মেঁ’ কতটা স্ক্রিন ধরে রাখতে পারে এবং সংগ্রহ কতটা স্থির থাকে, সেদিকে তাকিয়ে থাকবে ইন্ডাস্ট্রি।