রোজ নিজেকে কথা দেন যে আজ তাড়াতাড়ি শোবো। কিন্তু কাজের চাপ বা রিলস দেখার নেশায়, রোজই ২-৩ টে বেজে যাচ্ছে? এদিকে সকালে আবার ৬-৭ টার মধ্যে উঠে পড়ছেন? তারপর আবার রোজকার রুটিন.... এই চলছে? তাহলেই সাধু সাবধান! আপনি যদি দিনে ৫-৬ ঘণ্টা ঘুমাচ্ছেন রোজ, তাহলে অজান্তেই আপনি নিজেই নিজের বিপদ ডাকছেন। শরীরে থাবা বসাচ্ছে একাধিক রোগ।

রোজ রোজ কম ঘুমালে যে কেবল টায়ার্ড থাকবেন সেটাই নয়, শরীরে নিশ্চুপে থাবা বসাতে পারে অন্য নানা রোগও। কী? মোটা হয়ে যেতে পারেন, হুহু করে ওজন বাড়তে পারে। এমনকী হতে পারে টাইপ ডায়াবেটিস! 
চিকিৎসকদের মতে দিনে ৭ ঘণ্টার কম ঘুমালে হরমোনের সমস্যা হয়, শরীরের গ্লুকোজ ব্যালেন্স নষ্ট হয়। পুষ্টি কতটা আর কীভাবে শরীরে অ্যাবসর্ব হবে সেটাও গণ্ডগোল হয়ে যায়। এক কথায় বলতে গেলে, শরীরের সমস্ত স্বাভাবিক প্রক্রিয়াই ব্যাহত হয়। 

সম্প্রতি চিকিৎসক কুণাল সুদ ইনস্টাগ্রামে জানিয়েছেন কম ঘুমালে মোটা হওয়া বা ডায়াবেটিসের মতো রোগ শরীরে থাবা বসাতে পারে। কম ঘুমানোর কারণে, ক্লান্তি ভাব তো থাকবেই। এমনকী খিদে কমিয়ে বা বাড়িয়ে দিতে পারে ঘুম কম হলে। 

পর্যাপ্ত ঘুম না হলেই শরীরে গ্লুকোজ কতটা পরিমাণ শুষে নেবে সেটা ঘেঁটে যায়, যার ফলে বেড়ে যায় লিভারের গ্লুকোজ রিলিজ করা, এতে ইনসুলিনের কাজ ব্যাহত হয়। শুধু তাই নয়, প্রদাহ বাড়ায় কম ঘুম। এমনকী খিদেও বাড়িয়ে দেয় অনিদ্রা বা কম ঘুমানো। কম ঘুমালে লেপ্টিনের মাত্রা কমে যায়, আর তার ফলেই থেকে থেকে, বারবার খিদে পায়। বিশেষ করে কার্বোহাইড্রেট বা ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছে হয় এই সময়। যার জেরে ক্যালোরি ইনটেক প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। 

যাঁরা রোজ দিনে ৬ ঘণ্টার কম ঘুমান তাঁদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বাকিদের তুলনায় এঁদের ২৮ শতাংশ বেশি সম্ভাবনা থাকে এই রোগ হওয়ার। এছাড়া ওজন বৃদ্ধির রিস্ক তো আছেই। 

তাই সুস্থ থাকতে, রোগ-বালাইকে দূরে রাখতে সঠিক খাবার-দাবারের পাশাপাশি সঠিক এবং পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ব্যস্ততা, কাজের চাপ, নিজেকে সময় দেওয়ার মাঝেও রোজ ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো আবশ্যক, মত চিকিৎসকদের। একই সঙ্গে রাত জেগে ফোন দেখাপ নেশাতেও লাগাম পরানো উচিত।