আজকাল ওয়েবডেস্ক: কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ফের শ্লীলতাহানির অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য। অভিযোগ উঠেছে অ্যানাটমি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ, প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছেন তিনি। ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকাল থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে।
জুনিয়র চিকিৎসকরা লিখিতভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানানোর পর থেকেই ছাত্র-ছাত্রী ও ইন্টার্নদের একাংশ প্রিন্সিপালের দপ্তর ঘেরাও করেন।
একই সঙ্গে অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত চিকিৎসককেও ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, পুরো বিষয়টি নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ—বিশেষত প্রিন্সিপাল ও এমএসভিপি জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করছেন।
কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছে, ঘটনার ব্যাপারে পুলিশ তদন্ত শুরু করবে এবং অপরাধ প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও এখনও পর্যন্ত পুলিশের কাছে আনুষ্ঠানিক লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, এই বিস্ফোরক অভিযোগে মর্মাহত হয়ে বিভাগীয় প্রধান পদত্যাগ করেছেন বলেই হাসপাতাল সূত্রে খবর। তাঁর স্থানে আপাতত মৈত্রেয়ী মণ্ডলকে অ্যানাটমি বিভাগের প্রধানের দায়িত্বে আনা হয়েছে পরবর্তী নির্দেশিকা না পাওয়া পর্যন্ত।
ঘটনায় অশান্তির পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার দিনভর উত্তপ্ত ছিল হাসপাতাল চত্বর। ঘটনার তদন্ত ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের দিকেই এখন নজর সকলের।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটে গত ১৯ নভেম্বর বুধবার কলেজ চলাকালীন। এই ঘটনায় বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসক বলেন, "আমি ছাত্র-ছাত্রীদের সন্তানের মত দেখি। এই ধরনের চিন্তাভাবনা বা মানসিকতা আমার কোন অবস্থাতেই আসে না। আমি ভাবতেও পারি না এমন অভিযোগ কেউ করতে পারে। ছাত্র ছাত্রীরা আমার সকলেই সন্তান তুল্য।"
এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে, এমন কি সিসিটিভি ফুটেজ পর্যন্ত খতিয়ে দেখা হবে। কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল বা কেন ঘটল তার প্রকৃত সত্যি অবশ্যই প্রকাশ্যে আসবে।
অভিযুক্ত চিকিৎসক তিনি চাকরি থেকে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন। তবে বিষয়টি এখনও পুলিশকে জানানো হয়নি, কারণ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের একটি ঐতিহ্য আছে।
এই ঘটনায় থানা পুলিশ হোক তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চায়না। হাসপাতালের নিজস্ব অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি রয়েছে, তারাই পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। তবে অভিযুক্ত চিকিৎসকের পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করা হবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট করে জানায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এই বিষয়ে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ছাত্র সংগঠনের সদস্য শিবম মন্ডল বলেন, সম্প্রতি আমাদের অ্যানাটমি বিভাগে বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ সামনে এসেছে। যদি ক্লাসরুমেই একজন শিক্ষার্থী নিরাপদ না থাকে, তবে কলেজ ক্যাম্পাসে তার নিরাপত্তা কোথায়? এর কয়েক দিন আগেও স্বর্ণময়ী গার্লস’ হোস্টেলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। আমরা এই বিষয়ে একটা ন্যায় বিচার ও অপরাধীর শাস্তির দাবি করছি"।
শিবম আরও বলেন, "আমাদের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের তিনটি দাবি রয়েছে। ঘটনার অবিলম্বে, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে অ্যানাটমি বিভাগের প্রধানকে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে সকল ছাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা কলেজ কর্তৃপক্ষকে সক্রিয়ভাবে নিশ্চিত করতে হবে।"
