সংবাদ সংস্থা মুম্বই: কাশ্মীরের পহলগাওঁয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার অভিঘাতে কাঁপছে দেশ। এই রক্তাক্ত ঘটনায় যেখানে অন্তত ২৬ জন নিরীহ পর্যটক প্রাণ হারিয়েছেন, ঠিক সেখানেই জঙ্গিদের রুখে দাঁড়িয়ে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন পেশায় টাট্টু ঘোড়ার সহিস, এক সাধারণ কাশ্মীরি — সৈয়দ আদিল হুসেন শাহ। পর্যটকদের বাঁচাতে জঙ্গিদের হাত থেকে বন্দুক কেড়ে  নিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তিনি। তবে জঙ্গিরা অবশ্য তাঁকেও রেয়াত করেনি। তাঁকেও গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয় তাঁরা! নিহতদের মধ্যে একমাত্র কাশ্মীরি তিনি-ই। আদিলের এই আত্মত্যাগ ছুঁয়েছে প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার হৃদয়ও। আদিলের বীরত্বকে  কুর্নিশ জানিয়ে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখলেন—"এই বর্বরতা আমাদের বিবেককে নাড়িয়ে দিক।”

 

২২ এপ্রিল, জম্মু-কাশ্মীরের পহলগাওঁয়ে ছুটি কাটাতে আসা পর্যটকদের উপর চালানো হয় নির্মম জঙ্গি হামলা। ওই দিনই আদিল, যিনি পর্যটকদের টাট্টুতে চড়িয়ে বিখ্যাত বৈসারনে নিয়ে যেতেন, জঙ্গিদের আটকানোর চেষ্টা করেন। এক পর্যটক, যাঁর বাবাকে এই হামলায় হত্যা করা হয়, এসএমএইচএস হাসপাতালে আদিলের সেই সাহসী লড়াইয়ের কথা জানান তাঁর ভাই সৈয়দ নওশাদকে। তিনটি বুলেট বিদ্ধ করে এই কাশ্মীরিকে হত্যা করে জঙ্গিরা। তবু তিনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা করে গেছেন নিরীহ মানুষদের বাঁচাতে।

 

৩০ বছর বয়সি আদিলকে তাঁর গ্রাম কাশ্মীরের হাপতনার্ডে সমাহিত করা হয়। শত শত মানুষ চোখের জলে বিদায় জানান তাঁকে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ উপস্থিত থেকে বলেন—“জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াই করে অন্যদের বাঁচাতে গিয়েই শহিদ হন আদিল। তাঁর এই আত্মত্যাগ আমরা ভুলব না।”

 

প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ইনস্টাগ্রামে আদিলের ছবির সঙ্গে লেখেন—“পহলগাওঁয়ে যা ঘটেছে তা গর্হিত অন্যায়। পরিবার নিয়ে ভ্রমণে গিয়ে, ভাল সময় কাটাতে গিয়ে নিরীহ মানুষরা মৃত্যু মুখে পড়েছেন। এই হামলা মানবতার গালে কষিয়ে চড়! যারা কাঁদছে, যারা হারিয়েছে, যারা আতঙ্কে আছে—আমার প্রার্থনা তাঁদের সঙ্গেই।”