সংবাদ সংস্থা মুম্বই: আজকের যুগে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথাবার্তা যতই গতি পাক না কেন, বলিউড তারকা হৃতিক রোশন সেই আলোচনাকে টানলেন একেবারে বাস্তব মাটিতে। সহজ, সাহসী এবং সংবেদনশীল কথায়। এক সাক্ষাৎকারে হৃতিক জানালেন, মানসিক যন্ত্রণাকে স্বীকার করে নেওয়াটাই সবচেয়ে বড় সাহসের কাজ — আর তার চিকিৎসা করানো মানে মোটেই দুর্বলতা নয়।

“না, আমি নিজে কখনও ডিপ্রেশনে ভুগিনি”, স্পষ্ট গলায় বললেন হৃতিক। “কিন্তু আমি খুব কাছ থেকে সেটা দেখেছি। আর যখন তার জন্য কেউ নিজেকে খাটো করে, নিজেকে দুর্বল ভাবে শুধুমাত্র মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বলে— সেটা দেখে রাগ হয়। কারণ হওয়া উচিত ঠিক উল্টোটা।”

ডিপ্রেশন বা মানসিক সমস্যা সম্পর্কে মানুষের মনে যে লজ্জা বা সংকোচ কাজ করে, সেই ধারণার রীতিমতো জবাব দিলেন হৃতিক। তাঁর মতে, “যখন কিডনির সমস্যা হয়, তখন তো কেউ চুপচাপ থাকেন না। বলেন— ‘আমার কিডনিতে গণ্ডগোল হয়েছে’, ডাক্তারকে ফোন করেন। তাই যদি মানসিক কোনও সমস্যা হয়, যদি নিজের চিন্তাভাবনা ঠিকঠাক না চলে, মন ভাল না থাকে, তখনও তো তাই করা উচিত। ডাক্তারকে ফোন করুন, বন্ধুকে বলুন, মাকে বলুন, বাবাকে বলুন— জানিয়ে দিন, ‘আমি ভাল নেই’। এটা স্বাভাবিক। সাহায্য চাইতে লজ্জা করা উচিত নয়।”

সেই সাক্ষাৎকারে হৃতিক আরও জানিয়েছেন, দীপিকা পাড়ুকোন এবং করণ জোহরের মতো তারকাদের সাহসী পদক্ষেপই সাধারণ মানুষকে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে মুখ খুলতে সাহায্য করেছে। “ওদের মতো তারকারা যখন সামনে এসে বলেন, ‘আমি ডিপ্রেশনে ভুগেছি’, তখনই এই অসুখটা একটা বৈধতা পায়! করণ যখন সেটা বলেন, সেটাই তাঁর আত্মবিশ্বাস। আমার ক্ষেত্রেও যদি কোনওদিন হয়, আমি বলব। এতে লজ্জার কিছু নেই। সবাই তো মানুষ।”

কেরিয়ারের দিক থেকেও হৃতিক দারুণ ব্যস্ত। খুব শিগগিরই তিনি ফিরে আসছেন ‘এজেন্ট কবীর’-এর চরিত্রে ‘ওয়ার ২’-তে, যার পরিচালনায় রয়েছেন ‘ব্রহ্মাস্ত্র’-খ্যাত পরিচালক অয়ন মুখোপাধ্যায়। এই ছবিতে প্রথমবারের মতো বলিউডে পা রাখতে চলেছেন দক্ষিণের সুপারস্টার জুনিয়র এনটিআর। ২০২৫ সালের ১৪ আগস্ট মুক্তি পাবে এই হাই-অকটেন অ্যাকশন ফিল্ম। ইতিমধ্যেই ছবির টিজার ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে।

এখানেই থেমে থাকছেন না হৃতিক। শীঘ্রই শুরু হতে চলেছে তাঁর সুপারহিরো ফ্র্যাঞ্চাইজি কৃষ-এর চতুর্থ ছবি ‘কৃষ ৪’-এর শুটিং। কিন্তু রুপোলি পর্দার বাইরেও হৃতিকের এই স্পষ্ট, সাহসী অবস্থান — মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে — তাঁকে একজন দায়িত্ববান তারকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। যিনি শুধু অ্যাকশন হিরো নন, একজন বাস্তব জীবনের রোল মডেল, যাঁর কথায় উঠে আসে সহানুভূতি, স্পষ্টবাদিতা, আর সমাজের প্রতি আন্তরিক দায়বদ্ধতা।