সুজান খানের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর একটা লম্বা সময় নাকি ‘সিঙ্গল’ ছিলেন হৃতিক রোশন। এরপর কয়েক বছর আগে তাঁর জীবনে আসেন সাবা আজাদ। গায়িকা, বাচিকশিল্পী ও অভিনেত্রী সাবার সঙ্গে হৃতিকের রসায়নের প্রচুর নিদর্শন রয়েছে সমাজমাধ্যমে। তবে খ্যাতনামী ব্যক্তিত্বের প্রেমিকা হওয়ার মাসুল বিভিন্ন সময়ে গুনতে হয়েছে তাঁকে। ট্রোলিংয়ের পাশাপাশি তাঁর প্রতিভা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে নেটপাড়ার বাসিন্দারা। তবে সেসবকে পাত্তা দিতে নারাজ সাবা-হৃতিক দু'জনেইসব মিলিয়ে তাঁরা যে 'হ্যাপি ফ্যামিলি' তা বলাই যায়। তবে এবারে যা হল তাই দেখে কেউ বিস্ময় প্রকাশ করেছেন, কেউ বা ভুরু তুলেছেন আর কেউ শব্দ করে হাসছেন। 

বলিউডে হৃতিক রোশনকে ভক্তরা চেনেন ‘গ্রিক গড’ বলে। কিন্তু এবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু তাঁর লুক, অ্যাকশন কিংবা ড্যান্স নয়, বরং রিয়েল এস্টেট খাতের চুক্তি। খবর, তাঁর মুম্বইয়ের পশ্চিম আন্ধেরির সমুদ্রমুখী বিলাসবহুল ফ্ল্যাটটি মাসিক ৭৫ হাজার টাকায় ভাড়া দিয়েছেন অভিনেতা। আর এই ফ্ল্যাটের নতুন ভাড়াটে আর কেউ নন, হৃতিকের প্রেমিকা সাবা গ্রেওয়াল (আজাদ)।

বাড়ির কাগজপত্রে দেখা যাচ্ছে—

লোকেশন: জুহু-ভারসোভা লিঙ্ক রোডের মন্নত অ্যাপার্টমেন্টস (বর্তমান)

আয়তন: বিশাল ১২,০০০ বর্গফুট

ডিপোজিট: ১.২৫ লাখ

তারিখ: ৪ আগস্ট, ২০২৫ থেকে কার্যকর

এখানেই মজার জায়গাটা। স্থানীয় দালালদের মতে, ওই একই এলাকায় সাধারণ ৩-বিএইচকে (১,০০০–১,৩০০ বর্গফুট) ফ্ল্যাটের মাসিক ভাড়া দাঁড়ায় ১ থেকে ২ লাখ। আর সেখানে হৃতিকের মতো তারকার ১২,০০০ বর্গফুট ফ্ল্যাট গিয়েছে মাত্র ৭৫ হাজারে!

 

আরও পড়ুন: ‘তারকা-সন্তানদের মতো সুবিধে পাইনি’ ফের বিস্ফোরক সঞ্জয়-কন্যা, করলেন শাহরুখকে নিয়েও বড় মন্তব্য!

পুরোনো কেনাবেচা আর নতুন প্রশ্ন। 

২০২০ সালে হৃতিক এক ধাক্কায় কিনেছিলেন এই বিল্ডিংয়ের তিন তলা—১৮ তলা, আর ১৯-২০ তলার ডুপ্লেক্স। মোট খরচ হয়েছিল প্রায় ৯৭.৫ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে একই বিল্ডিংয়ে একটি ৩,৬০০ বর্গফুট ফ্ল্যাট ভাড়া গিয়েছিল মাসে ৬ লাখ টাকায়। তাহলে হৃতিকের এত বড় ফ্ল্যাট এত কম ভাড়ায় কেন? এটাই এখন নেটপাড়ার বড় প্রশ্ন। অনেকে বলছেন—“প্রেমের খাতিরে বাজারদর ভুলে গেছেন হৃতিক।” কেউ আবার দেখছেন এটাকে ট্যাক্স প্ল্যানিং।

ট্যাক্স বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টিতে এই বিষয়টা কেমন?  মুম্বইয়ের চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট আদিত্য জান্ট্যে জানিয়েছেন— “সাধারণভাবে দু’টির বেশি সেলফ-অকুপাইড প্রপার্টির ক্ষেত্রে নোশনাল রেন্ট ট্যাক্স বসে। তাই ফাঁকা না রেখে ভাড়া দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।” তবে তিনি এ-ও যোগ করেন—এই চুক্তি ঠিক কোন কাঠামোয় হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।

রোশন পরিবারের সম্পত্তি লেনদেনের ইতিহাসের দিকে একবার চোখ ফেরানো যাক। 

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে হৃতিক ভাড়া নিয়েছিলেন গোরেগাঁওয়ে ২,৭২৭ বর্গফুট কমার্শিয়াল স্পেস—ভাড়া মাসে ৫.৬২ লাখ টাকায়।

ফেব্রুয়ারিতে পুণের খারাডিতে ৯,২০৯ বর্গফুট স্পেস-এর ভাড়া নবায়ন করেন ৬.০৮ লাখ টাকা মাসে।

এর আগেই, ২০২৫-এর মে মাসে, বাবা রাকেশ রোশনের সঙ্গে মিলে অন্ধেরির তিনটি ফ্ল্যাট বিক্রি করেছিলেন ৬.৭৫ কোটি টাকায়।

যা-ই হোক, হৃতিকের এই ভাড়া চুক্তি বলিউড-বাজারে বেশ হইচই ফেলে দিয়েছে। একদিকে বাজারদরের তুলনায় অস্বাভাবিক কম ভাড়া, অন্যদিকে প্রেমিকার সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক—দুটো মিলেই চর্চা তুঙ্গে।

সোশ্যাল মিডিয়ার ভাষায়—“হৃতিক এবার প্রমাণ করলেন, প্রেম থাকলে বিলাসবহুল ফ্ল্যাটও ভাড়ায় নামতে পারে ‘সাশ্রয়ী রেটে’।”

অন্যদিকে, প্রেম নিয়ে কোনওদিনই রাখঢাক করেননি হৃতিক। তিনি বলিউডের 'গ্রিক গড'। ভারতীয় সিনেমা জগতের অন্যতম সুপারস্টার। যাকে বড়পর্দায় দেখে অনুপ্রাণিত হন লাখ লাখ দর্শক। এবার সেই হৃতিক রোশনই বাস্তব জীবনে অনন্য নিদর্শন রাখলেন ভক্তদের সামনে। যা এখন নেট দুনিয়ায় রীতিমতো চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেখা গিয়েছে, সম্প্রতি আম্বানিদের একটি অনুষ্ঠানে প্রেমিকা সাবা আজাদের জুতো হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন হৃতিক! যদিও এই ভিডিওটি বেশকিছু বছর আগের। তবুও নতুন করে এই ভিডিও দেখে চর্চা শুরু হয়েছে নেটিজেনদের মধ্যে।