সিনেমার মতো জীবন? নাকি জীবনের মতো সিনেমা? যেখানে অতীত আর বর্তমান মিশে যায় এক ফ্রেমে। বিচ্ছেদের ব্যথা পেরিয়ে সেখানেই জন্ম নেয় আগামীর আশা। হৃতজিৎ রায়চৌধুরি এবং মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের প্রেমের আখ্যান যেন এগুলোই মনে করিয়ে দেয় নতুন করে।
মীনাক্ষীর নাম এক লহমায় মনে না-ও পড়তে পারে। কারণ আগাগোড়াই আলোকবৃত্তের বাইরে থেকেছেন তিনি। তবু একটু অতীতে ফিরে তাকালেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে—তাঁর ব্যক্তিগত জীবনকে ঘিরে কী প্রবল ঝড় উঠেছিল। গায়ক দুর্নিবার সাহার প্রাক্তন স্ত্রী তিনি। ২০২১ সালে ধুমধাম করে বিয়ে করেছিলেন দু’জনে। সাজিয়েছিলেন নতুন সংসার। দুর্নিবারের গান শুনেই প্রথম তাঁকে পছন্দ করেছিলেন মীনাক্ষী। তারপর কথা। সেই আলাপচারিতাই এক সময় গড়িয়েছিল বন্ধুত্বে। বন্ধুত্ব থেকে প্রেম। কিন্তু সেই প্রেম, সেই সংসারও ভেঙে যায় তাসের ঘরের মতো। বিয়ের বছর ঘুরতেই আলাদা হন তাঁরা। বিচ্ছেদ বয়ে নিয়ে আসে একরাশ তিক্ততা।
হালফিলের তারকাদের গতে বাঁধা নিয়ম মেনে প্রাক্তনের সঙ্গে বন্ধুত্ব নয়, বরং একে অপরের থেকে চিরকালের মতো দূরে সরে গিয়েছেন তাঁরা। ২০২৩ সালে দুর্নিবার বিয়ে করেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের আপ্তসহায়ক মোহর ওরফে ঐন্দ্রিলা সেনকে। তাঁদের এক পুত্রসন্তানও আছে।
এবার ফের মীনাক্ষীর নতুন অধ্যায়ে পা রাখার পালা। সঙ্গী হৃতজিৎ কলকাতারই এক নামী প্রযোজনা সংস্থায় চাকরিরত। মূলত ছবির কালার কারেকশনের দায়িত্ব থাকে তাঁর কাঁধে। তবে আরও একটি কারণেও এক সময় ইন্ডাস্ট্রির চর্চার কেন্দ্রে এসেছিলেন তিনি। দুর্নিবারের স্ত্রী মোহরের প্রাক্তন প্রেমিক ছিলেন মীনাক্ষীর স্বামী হৃতজিৎ। কিন্তু বেশ কয়েক বছর আগেই তাঁদের প্রেম ভেঙে যায়। অবশেষে নিজেদের প্রাক্তনের প্রাক্তন সঙ্গীর মাঝেই মনের মানুষ খুঁজে পেলেন মীনাক্ষী এবং হৃতজিৎ। এ যেন বাস্তবকে ছাপিয়ে সিনেমার গল্পকেও হার মানায়।
সূত্রের খবর, বেশ কিছুদিন আগেই নাকি বিয়ে সেরে ফেলেছেন হৃতজিৎ এবং মীনাক্ষী। বৃহস্পতিবার একসঙ্গে একটি রিসেপশনের আয়োজন করেছেন তাঁরা। সেখানেই কাছের মানুষ এবং পরিবারের সঙ্গে আনন্দে মেতে উঠবে নবদম্পতি। তবে জীবনের নতুন অধ্যায় নিয়ে এখনই বিশেষ কিছু বলতে নারাজ মীনাক্ষী। আজকাল ডট ইন-কে তিনি বলেন, “এখনও পুরো প্রক্রিয়াটার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। প্রস্তুতির কারণে খুবই ব্যস্ত। তাই এই মুহূর্তে কিছু বলতে চাই না।”
দুর্নিবারের সময়ে প্রেম–বিয়ের বিষয়টি লুকনোর কোনও চেষ্টা ছিল না, কিন্তু এবার যেন অনেক বেশি সতর্ক মীনাক্ষী। তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর প্রণয়ের কোনও আভাসই নেই। প্রেমিক-প্রেমিকা একে অন্যকে ফলো করেন ঠিকই, তবে প্রকাশ্যে ভালবাসার কোনও ইঙ্গিত রাখেন না। যেন আলোচনার বাইরে, সকলের নজর এড়িয়ে নিভৃতেই নিজেদের সম্পর্ককে লালন করতে চাইছেন তাঁরা।
