আজকাল ওয়েবডেস্ক: শীতকালীন অধিবেশন। উত্তাল হওয়ার কথা ছিল একাধিক ইস্যুতে। হচ্ছেও তাই। তার মাঝেই, সংসদে চলছে নামবিভ্রাট পর্বও। এবার নিজের বক্তব্যের সময়, সংসদ কক্ষে দাঁড়িয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রীর নাম ভুল বললেন বিজেপির সাংসদ, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
নিজের বক্তব্যে বিরোধীদের এসআইআর নিয়ে তীব্র কটাক্ষের মাঝেই বাংলার সাংসদ বলেন, 'আমাদের দেশে এখনও একজন প্রধানমন্ত্রী আছেন তাঁর নাম...'। বিভ্রাট ঘটে মূলত তার পরেই। নরেন্দ্র বলার পর, মুহূর্ত থেমে তিনি বলে বসেন বাজপেয়ী। যদিও আবার পরক্ষণেই সংশোধন করে বলেন, 'নরেন্দ্র মোদি'। স্বাভাবিকভাবেই, সংসদে দাঁড়িয়ে গেরুয়া শিবিরের নেতার মুখেই প্রধানমন্ত্রীর নাম ভুল উচ্চারিত হওয়ায়, চর্চা শুরু।
তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বাংলায় নিজের বক্তব্য রাখছিলেন। সেখানেই আক্রমণ শানাচ্ছিলেন কংগ্রেসের দিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের দিকেও। নিশানায় মমতা ব্যানার্জি থেকে, অভিষেক ব্যানার্জিও। এসআইআর নিয়েও কড়া মন্তব্য করেন। এসবের মাঝেই তাল কাটে, প্রধানমন্ত্রীর নাম ভুল বলায়। সংসদে হাসির রোলও ওঠে মুহূর্তে।
শীতকালীন অধিবেশনেই যদিও জোর চর্চা হয়েছে খোদ মোদির 'বঙ্কিমদা' মন্তব্য নিয়ে। 'বন্দে মাতরম' রচনার ১৫০ বছর পূর্তি। নভেম্বরেই প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, 'বন্দে মাতরম'-এর ১৫০ বছরে, বছরভর নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদযাপন করা হবে তা। সংসদে শীতকালীন অধিবেশনের মাঝে, সোমবার লোকসভায় 'বন্দে মাতরম' নিয়ে বলতে শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, 'এই গান শক্তির মন্ত্র দিয়েছিল। স্বাধীনতা সংগ্রামে গোটা দেশের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছিল বন্দে মাতরম। বন্দে মাতরম বহু প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও অনুপ্রাণিত করবে।'
সোমবার, একটা বড় সময় প্রধানমন্ত্রী বাংলা, বাঙালি নিয়ে কথা বলেছেন। সেখানেই, বাঙালি বঙ্কিমচন্দ্রকে নিয়ে বলার সময়, মোদির কথায় শোনা যায় 'বঙ্কিমদা'। তিনি বলেন, 'বঙ্কিমদা এমন একটা সময় এই গান লিখেছিলেন, যখন ভারতকে নিচু করে দেখানোটাই ফ্যাশন ছিল।' যদিও তাঁর বক্তব্যের মাঝেই ভুল শুধরে দেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়। তিনি মোদির ভাষণ শুধরে দিয়ে বলেন, 'অন্তত বাবু বলুন।' সৌগত রায়ের বক্তব্যের পরেই, প্রধানমন্ত্রী দ্রুত উত্তর দেন, 'আমি বঙ্কিম বাবু বলব। ধন্যবাদ, আমি আপনার অনুভূতিকে সম্মান করি।' এরপর তিনি হালকা স্বরে বলেন, 'আমি আপনাকে দাদা বলতে পারি, তাই না? নাকি এতেও আপনার আপত্তি আছে?'
কেবল 'বঙ্কিমদা' নয়, বাঙালিদের কথা বলতে গিয়ে, মোদি আরও এমন কিছু বলেছেন, যেগুলি নিয়ে বেশ বিতর্ক তৈরি হয়েছে। পুলিনবিহারী দাসের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলে বসেন, পুলিনবিকাশ। আবার বঙ্কিম'এ 'দা' বলে বাধা পেয়ে, মাস্টারদা'র থেকে 'দা' বাদ দিয়েও বসেন।
প্রধানমন্ত্রীর পর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত এদিন বলেন, 'বন্দে মাতরম যখন মহান কবি বঙ্কিম দাস চ্যাটার্জি লিখেছিলেন...'। তাঁর এই বক্তব্যের পরেই তুমুল হইচই শুরু হয়ে যায় লোকসভার অন্দরে। হইচইয়ের মাঝেই দায়সারা ভঙ্গিতে তিনি বলেন, 'বঙ্কিম চ্যাটার্জি, চট্টোপাধ্যায়' বলে, তুমুল হইচইয়ের মাঝেই বাকিদের থামার ইশারা করে, নিজের বক্তব্য বলতে থাকেন। সোমের পর বুধ, ফের নামবিভ্রাট সংসদে। এবারও ভুল করলেন বিজেপির সাংসদই। নাম ভুল বলে বসলেন প্রধানমন্ত্রীর।
