এস.এস. রাজামৌলির নির্মিত ‘বাহুবলী’ বিশ্ব আরও একবার ইতিহাস গড়ল। পরিচালক রাজামৌলি তাঁর জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি ‘বাহুবলী: দ্য বিগিনিং’ ও ‘বাহুবলী: দ্য কনক্লুশন’এর সংযুক্ত এবং প্রযুক্তিগতভাবে আরও উন্নত সংস্করণ হিসাবে ‘বাহুবলী: দ্য এপিক’ মুক্তি দিয়েছেন ৩১ অক্টোবর। মুক্তির আগেই অগ্রিম বুকিং থেকে বিশ্বব্যাপী ১০ কোটিরও বেশি আয় করে ছবিটি প্রমাণ করে দেয়, ভক্তদের উন্মাদনা আগের মতোই তুঙ্গে।

ইন্ডাস্ট্রি ট্র্যাকার স্যাকনিল্কের তথ্য অনুযায়ী, ‘বাহুবলী: দ্য এপিক’  ভারতে মুক্তির প্রথম দিনেই ১০ কোটিরও বেশি আয় করেছে, যা পুনর্মুক্তি পাওয়া ছবির ক্ষেত্রে এক ঐতিহাসিক রেকর্ড। এটি বিজয়ের ‘ঘিল্লি’ ও মহেশ বাবুর ‘খলেজা’-র রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। এমনকি সদ্য মুক্তি পাওয়া প্রদীপ রঙ্গনাথনের ‘ডিউড’ এবং ‘লোকাহ: চ্যাপ্টার ১’কেও পিছনে ফেলেছে।

তেলুগু ভাষাভাষী অঞ্চলে ছবিটির গড় ৬৩% অকুপ্যান্সি রেকর্ড হয়েছে। শুধু হায়দরাবাদেই ৪২৬টি শোয়ে প্রায় ৬৯.২৫% দর্শক উপস্থিতি ছিল, যা প্রমাণ করে যে রাজামৌলির এই সৃষ্টি এখনও দর্শকের মনে রাজত্ব করছে। প্রায় হাজার শোয়ে রাতের শোগুলিতে প্রায় সব আসন ভরে গিয়েছিল।

দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও দুর্দান্ত প্রতিক্রিয়া পেয়েছে ‘বাহুবলী: দ্য এপিক’। ১,১৫০টি সিনেমা হলে নতুন করে মুক্তি পেয়েছে ছবিটি। এর মধ্যে আমেরিকায় ৪০০টি, ইউকে এবং আয়ারল্যান্ডে ২১০টি পর্দায় চলছে। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দর্শকরাও ছবিটি ঘিরে উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

এস.এস. রাজামৌলির পরিচালিত এই মাস্টারকাট সংস্করণে আগের মতোই দেখা গিয়েছে প্রভাস, রানা দাগুবতী, অনুষ্কা শেট্টি, তমান্না ভাটিয়া, সত্যরাজ, নাসার এবং রাম্যা কৃষ্ণনকে।  ‘বাহুবলী: দ্য এপিক’ পুনর্মুক্তির মাধ্যমে আবারও প্রমাণ করল, ভারতীয় সিনেমায় রাজামৌলির নাম আজও সাফল্যের সমার্থক।

‘বাহুবলী: দ্য এপিক’ শুধু আগের গল্পের পুনরাবৃত্তি নয়, বরং তা সম্পূর্ণ নতুনভাবে সাজানো হয়েছে উন্নত সিজিআই, রিমাস্টারড সাউন্ড ডিজাইন ও কালার গ্রেডিংয়ের মাধ্যমে। যুদ্ধের দৃশ্যগুলো আরও  বাস্তবসম্মত, জীবন্ত। দর্শকদের একাংশের মতে, “এই সংস্করণটা থিয়েটারে না দেখলে বাহুবলীকে পুরোপুরি বোঝা যায় না।”

প্রায় চার ঘণ্টার এই ‘এপিক কাট’-এ রাজামৌলি আগের দুই অধ্যায়ের ঘটনাগুলিকে একসঙ্গে বুনেছেন এক অনবদ্য দক্ষতায়।
অমরেন্দ্র বাহুবলীর (প্রভাস) উত্থান, বল্লালদেব (রানা দাগুবতী)-এর ঈর্ষা ও রাজমাতা শিবগামীর (রাম্যা কৃষ্ণন)-এর দৃঢতা— প্রতিটি দৃশ্যই আরও আবেগঘন ও তীক্ষ্ণ হয়েছে নতুন সম্পাদনায়। তমান্নার অবন্তিকা চরিত্রটিও এবার আরও গভীর আবেগে ফুটে উঠেছে পর্দায়। অনেকেই বলছেন, পুরনো কাহিনিকেও রাজামৌলি যেন একেবারে নতুন প্রাণ দিয়েছেন।