কলকাতার বড়বাজারে হাতেনাতে গ্রেপ্তার অভিনেত্রী রূপা দত্ত চুরি ও প্রতারণার অভিযোগে! চুরি হওয়া সোনার গহনা উদ্ধার করল পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। একসময় টেলিভিশনের পরিচিত মুখ ছিলেন তিনি। কিন্তু এখন খবরের শিরোনামে একেবারে ভিন্ন কারণে—চুরি ও প্রতারণার অভিযোগে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতার ব্রাবোর্ন রোডের নন্দরাম মার্কেট এলাকা থেকে অভিনেত্রী রূপা দত্ত (৪২)-কে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। তাঁর কাছ থেকে চুরি হওয়া সোনার গয়না উদ্ধার হয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
ঘটনার সূত্রপাত ১৫ অক্টোবরের বিকেলে। সেইদিন বিকেল ৪:১৫ থেকে ৪:৩০ মিনিটের মধ্যে, আদি বংশতলা লেনের এক দোকানে কেনাকাটার সময় দীপা আগরওয়াল নামে এক মহিলার পার্স উধাও হয়ে যায়। অভিযোগ, পার্সের ভিতরে ছিল—
প্রায় ২০ গ্রাম ওজনের একটি সোনার মঙ্গলসূত্র, ২১ গ্রাম ওজনের বৈষ্ণোদেবীর লকেট-সহ একটি সোনার চেন, দুটি সোনার ব্রেসলেট (ওজন ১৩ ও ৯ গ্রাম এবং নগদ ৪,০০০ টাকা।
অভিযোগ দায়ের হয় পোস্তা থানায় (মামলা নং ১৩০/২৫, তারিখ ১৫.১০.২০২৫, ধারা ৩০৩(২) বি.এন.এস) একাধিক ধারায়। এরপর শুরু হয় তদন্ত। পুলিশ প্রথমেই ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করে এবং ফুটেজ বিভিন্ন সূত্রকে দেখায়। একাধিক সূত্র থেকে পাওয়া গোপন তথ্য এবং প্রযুক্তিগত নজরদারির মাধ্যমে ওয়াচ সেকশনের গোয়েন্দারা জানতে পারেন, বড়বাজার এলাকায় সন্দেহজনকভাবে এক মহিলা ঘুরে বেড়াচ্ছেন, যিনি চুরি-সংক্রান্ত ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন।
আরও পড়ুন: জনৈকা মহিলাকে অশালীন মন্তব্য? নেপথ্যে কী? মুখ খুললেন অভিনেতা ঋজু বিশ্বাস
গোপনে নজরদারি চালিয়ে পুলিশ গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাবোর্ন রোডের সংলগ্ন নন্দরাম মার্কেটের কাছে ওই মহিলাকে পাকড়াও করে। পরে পরিচয় প্রকাশ্যে আসে যে তিনিই অভিনেত্রী রূপা দত্ত।
তাঁর বাড়ি ৬৩বি, গড়িয়া হাট রোড, কলকাতা–১৯ এবং ২৪সি, ধীরেন্দ্রনাথ ঘোষ রোড, কালিঘাট—দুটি ঠিকানাই পুলিশ নথিভুক্ত করেছে। জানা যাচ্ছে, রূপাকে আটক করে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পুলিশ অভিযানের মাধ্যমে গড়িয়া হাটের বাড়ি থেকে চুরি হওয়া সমস্ত সোনার গয়না উদ্ধার করে।
উদ্ধার হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রূপা দত্ত একসময় টেলিভিশন জগতে নিয়মিত কাজ করতেন। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে তিনি এই ধরনের চুরি ও প্রতারণার কাজে জড়িয়ে পড়েছেন। পুলিশের অনুমান, অর্থনৈতিক অনটন এবং ব্যক্তিগত জীবনের টানাপোড়েনই তাঁকে অপরাধের পথে ঠেলে দিয়েছে।
রূপাকে শুক্রবার অর্থাৎ ৩১ অক্টোবর, ২০২৫-এ আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর এবং একই সাথে পুলিশি রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রে আরও খবর, রূপার আগের কার্যকলাপ ও সম্ভাব্য অপরাধ চক্রের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়েও তদন্ত চলছে।
