২০১১-এ মুক্তি পেয়েছিল ‘২২শে শ্রাবণ’। সেই ছবিতে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় অভিনীত প্রবীর রায়চৌধুরী এতটাই জনপ্রিয় চরিত্র হয়ে যায় যে দীর্ঘ ন’বছর পর ২০২০ সালে যখন ‘২২শে শ্রাবণ’-এর সিক্যুয়েল ‘দ্বিতীয় পুরুষ’ মুক্তি পায়, তখন প্রবীর রায়চৌধুরী না থাকলেও তাঁর উপস্থিতি জানান দিতে হয়েছিল গল্পকার-পরিচালককে। এরপর ২০২৩-এর পুজোতে এই ফ্র্যাঞ্চাইজির তিন নম্বর ছবি অর্থাৎ ‘২২শে শ্রাবণ’-এর প্রিকুয়েল বানিয়েছিলেন পরিচালক। নাম দশম অবতার। বলাই বাহুল্য, বহাল তবিয়তে সে ছবিতে ধরা দিয়েছিল প্রবীর রায়চৌধুরী। তাঁর পাশে আবার পাওয়া গিয়েছিল সৃজিতের ‘ভিঞ্চি দা’ ছবির ‘ইন্সপেক্টর পোদ্দার’-কে। শুরু হয়েছিল বাংলা ছবির প্রথম কপ ইউনিভার্স-এর যাত্রা। দর্শক যে দারুণ খুশ হয়েছিল, তা সে ছবির বক্স অফিস কালেকশন-ই প্রমাণ করে। সে ছবির মুক্তির পরপরই জনতামহলে প্রশ্ন উঠেছিল, কবে আসবে এই ফ্র্যাঞ্চাইজির আগামী অধ্যায়? এতদিনে প্রসেনজিৎ-কে সঙ্গে কাপড়ে সেই জবাব দিলেন সৃজিত। তবে ওই যে সরাসরি নয়। নিজের সৃজিতীয় ছন্দে।

ফেসবুকে একটি ছোট্ট ভিডিও পোস্ট করেছেন প্রসেনজিৎ চট্টপাধ্যায়। সেখানে দেখা যাচ্ছে নিজের বাড়ির বারান্দায় রাখা আরাম কেদারায় একমনে ফোন ঘাঁটছেন প্রসেনজিৎ। আচমকা সেখানে ঝরে গতিতে সৃজিতের প্রবেশ। এসেই রীতিমতো ঝড়ের বেগে প্রসেনজিৎকে 'প্রবীরবাবু' সম্বোধন করে সৃজিত বলতে শুরু করলেন, “প্রবীরবাবু, ‘দশম অবতার’-এর পরের ছবিটা নিয়ে যেটা আমরা বানাবো।...” কথা শেষ হওয়ার আগেই সৃজিতকে থামিয়ে দিয়ে প্রসেনজিৎ ধীর গলায় আদেশ করেন “বসো।" আমতা আমতা করে “কী হল...” বলতে বলতে নির্দেশ মানলেন সৃজিত। তারপরেই সেই অতি পরিচিত সোয়্যাগের সঙ্গে জলদমন্দ্র স্বরে প্রসেনজিৎ বলে উঠলেন। “বাবু নয়, কাকাবাবু!”
শুনে খানিক অবাক হলেও কাঁচুমাঁচু ভঙ্গিতে মেনেন নেন সৃজিত, “হ্যাঁ, ঠিকই তো।” প্রসেনজিৎ ফের বলে ওঠেন, “এখন ‘বিজয়নগরের হীরে’, ওটার পর আবার প্রবীর-এ ফিরব। ঠিক হ্যায়?” সঙ্গে সঙ্গে সৃজিতের মন্তব্য, “আচ্ছা, জানুয়ারির পর তাহলে যোগাযোগ করব।”

সিনেমাপ্রেমী থেকে শুরু করে ‘২২শে শ্রাবণ’ ফ্র্যাঞ্চাইজি-প্রেমীদের কাছে এর থেকেও বড় ও স্পষ্ট কোনও ইঙ্গিতের প্রয়োজন আছে কি?
প্রসঙ্গত, মরুভূমি, বরফ ঢাকা পাহাড় পেরিয়ে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে বছর তিনেক আগে কাকাবাবু গিয়েছিলেন কেনিয়ার জঙ্গলে। ছবির নাম ছিল ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’। আফ্রিকার জঙ্গলের রোমহর্ষক অভিযান নিয়ে তৈরি সে ছবির পর সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘বিজয়নগরের হীরে’ কাহিনি অবলম্বনে আগামী বছরের শুরুতেই বড়পর্দায় কাকাবাবু্র প্রত্যাবর্তন হচ্ছে। সৃজিত মুখোপাধ্যায় সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর কাকাবাবুর নতুন ছবি পরিচালনা দায়িত্ব নিয়েছেন চন্দ্রাশিস।ছবিটি পরিচালনা করছেন চন্দ্রাশিস রায়।
‘নিরন্তর’ ছবির পর আবারও 'বিজয়নগরের হীরে' ছবিতে জুটি বাঁধল পরিচালক-অভিনেতা জুটি, চন্দ্রাশিস এবং প্রসেনজিৎ। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা এই গল্পে কাকাবাবু এবং সন্তু ছাড়াও অভিযানে সঙ্গী হবে জোজো, রিঙ্কু এবং রঞ্জন।এসভিএফ এবং এনআইডিয়াজ ছবিটির প্রযোজনা করেছে। সরস্বতী পুজো তথা নেতাজি জন্মজয়ন্তীর দিন বড়পর্দায় এই ছবির সঙ্গে মুখোমুখি হবে রাজ চক্রবর্তী পরিচালিত ‘হোক কলরব’ এবং উইন্ডোজ প্রোডাকশন হাউজের ‘ভানুপ্রিয়া ভূতের হোটেল’।
