আজকাল ওয়েবডেস্ক: একই দিনে একই রোগীর দুই রকম রিপোর্ট! ঘটনার জেরে কাঠগোড়ায় বর্ধমানের দুই নামী ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ইইজি রিপোর্ট নিয়ে চরম চাঞ্চল্য। ঘটনার পর জেলাশাসকের নির্দেশে তদন্তে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। অভিযোগ উঠেছে খোসবাগানের দুই নামকরা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে। এহেন ভুল রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে সরব রোগীর পরিবার। ইতিমধ্যেই লিখিত অভিযোগ করেছেন জেলা শাসক ও জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে।
কালনার রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন অভিযোগ করেছেন, তাঁর ভাইঝি সোহানা ইয়াসমিন (২৩) দীর্ঘদিন ধরে স্নায়ুরোগে ভুগছেন। কলকাতার মল্লিকবাজারের একটি স্নায়ু বিশেষজ্ঞ হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসা চলছে তাঁর। চিকিৎসকের পরামর্শে প্রথমে বর্ধমানের খোসবাগানের রামকৃষ্ণ রোডের এক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ইইজি(EEG) করা হয়। সেই রিপোর্টে ‘স্বাভাবিক’ ফল আসে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে চিকিৎসা চললেও অবস্থার উন্নতি হয়নি।
পরবর্তীতে চিকিৎসকের নির্দেশে ফের ইইজি করানো হয়। এ দফায় এবার খোসবাগানের আর বি ঘোষ রোডের অন্য একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করা হয়। আশ্চর্যজনকভাবে সেখানেও রিপোর্ট আসে ‘স্বাভাবিক’। কিন্তু কলকাতার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রিপোর্ট দেখে জানান, এটি ‘ভুয়ো’ এবং এর কোনও চিকিৎসাগত মূল্য নেই। তাঁদের অভিযোগ, “রেখাচিত্র বা গ্রাফ না দেখে ইচ্ছেমতো রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।”
অভিযোগকারী মোয়াজ্জেম হোসেনের দাবি, “প্রথম রিপোর্ট তৈরি হয়েছিল ২৫ ফেব্রুয়ারি, দ্বিতীয় রিপোর্ট ১৬ অক্টোবর। পরে দুই ডায়াগনস্টিক সেন্টারেই যোগাযোগ করি। রামকৃষ্ণ রোডের সেন্টার বিনামূল্যে নতুন রিপোর্ট দেওয়ার আশ্বাস দেয়, তবে আমরা আগ্রহ দেখাইনি। কিন্তু আর বি ঘোষ রোডের সেন্টারের দুই কর্মী আমার বাড়িতে এসে একই তারিখের নতুন রিপোর্ট হাতে দেন, যেখানে ‘অস্বাভাবিক’ লেখা। পুরনো গ্রাফ ব্যবহার করেই নতুন রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।”
এই ঘটনায় জেলাশাসক আয়েষা রানি এ বলেন, “আমি সিএমওএইচকে সরেজমিন পরিদর্শন করে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছি।” ইতিমধ্যে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বলে জানা গিয়েছে।
আর বি ঘোষ রোডের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “রিপোর্ট চিকিৎসক গ্রাফ দেখে দেন, তাই বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।” অভিযুক্ত চিকিৎসক অরুণ আগরওয়াল স্বীকার করেছেন, “ভুল হয়েছিল, পরে সেটা বুঝে সংশোধন করা হয়েছে।”
ঘটনার জেরে রোগীর পরিবারের দাবি, “ভুল রিপোর্টের কারণে চিকিৎসাতেও ভুল হয়েছে।” জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের তদন্তে এখন নজর গোটা জেলার চিকিৎসা মহলের।
