আজকাল ওয়েবডেস্ক: সেমিফাইনালে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে গোটা ক্রিকেট বিশ্বে হইচই ফেলে দিয়েছেন হরমনপ্রীত কৌররা। সবার মুখে মুখে এখন একটাই নাম জেমিমা রড্রিগেজ। সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে জেমিমা রদ্রিগেজ জীবনের অন্যতম সেরা ইনিংস খেলে ফেললেন। মাত্র ২৫ বছর বয়সে এই ভারতীয় তারকা খেলোয়াড় গড়লেন ইতিহাস।

অপরাজিত ১২৭ রানে ভারতকে ৫ উইকেটে জিতিয়ে দিলেন ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। ১৩৪ বলে ১৪টি চারের সাহায্যে গড়া তাঁর ইনিংসটি শুধু ভারতের জয় নিশ্চিত করেনি, বরং এই ম্যাচটা মহিলাদের একদিনের ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা মুহূর্ত হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকল।

এই জয় তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করলেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরাও। মহিলা দলের এই দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হয়েছেন ভারতের কিংবদন্তি ব্যাটার বিরাট কোহলিও। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দলের অসাধারণ জয়। মেয়েদের চমৎকার রান তাড়া এবং বড় ম্যাচে জেমিমার অনবদ্য ইনিংস। এ এক সত্যিকারের উদাহরণ দৃঢ়তা, বিশ্বাস ও আবেগের। দুর্দান্ত খেলল টিম ইন্ডিয়া।’

এটি ছিল জেমিমার ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতরান এবং বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরি। অধিনায়ক হরমানপ্রীত কৌরের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে তাঁর ১৬৭ রানের পার্টনারশিপই ভারতকে বিশ্বাস জোগায় যে এই পাহাড়প্রমাণ রান তাড়া করেও জেতা সম্ভব।

?ref_src=twsrc%5Etfw">October 31, 2025

এই জয়ের মাধ্যমে ভারত অস্ট্রেলিয়ার টানা ১৫ ম্যাচ জয়ের অপরাজিত থাকার রেকর্ড ভেঙে দিল। তবে ম্যাচের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে, ৩৬তম ওভারে হরমানপ্রীতের আউট হয়ে যাওয়া জেমিমার ওপর বাড়িয়ে দেয় চাপ। কিন্তু সেখানেই তিনি দেখান মানসিক দৃঢ়তার পরিচয়।

জেমিমা বলছেন, ‘প্রভু যিশুকে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। একার পক্ষে আমার আজ অস্ট্রেলিয়াকে হারানো সম্ভবই হতো না। আমার মা, বাবা, কোচ এবং প্রতিটি মানুষকে ধন্যবাদ জানাতে চাই যাঁরা আমার উপরে বিশ্বাস রেখেছিলেন। গত মাস জুড়ে বেশ কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়েছে। অবশেষ স্বপ্ন যেন সত্যি হল।’

লম্বা ইনিংস খেলছিলেন জেমিমা। বাড়তি অ্যাড্রিনালিনও ঝরছিল। মাঝে ক্লান্তি গ্রাস করছিল। কিন্তু হাল ছাড়ার বান্দা নন তিনি। কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য নিজের সঙ্গে কথা বলে চলছিলেন জেমিমা। নিজেকে অভয় দিচ্ছিলেন। ঠোঁট নড়ছিল।

মনেই হচ্ছিল কারও সঙ্গে নীরবে তিনি কথোপকথন করে চলেছেন। কিন্তু শেষের দিকে শক্তি নিঃশেষিত  হয়ে আসছিল। তখন প্রভু যিশুর শরণাপন্ন হচ্ছিলেন জেমিমা। বাইবেলের লাইন মনে মনে উচ্চারণ করে নিজেকে তাতিয়ে যাচ্ছিলেন।

তাঁর হৃদয় বলছিল, আমি অন্ধকারের যাত্রী, প্রভু আলোর দৃষ্টি দাও। পারলে সর্বশক্তিমানই তাঁকে সঠিক দিশা দেখাতে পারবেন। প্রবল চাপের মুখে বাইবেলের লাইন জপে জেমিমা নিজেকে বোঝাচ্ছিলেন, ‘স্থিতধী হও, লড়ে যাও। ঈশ্বর তোমার হয়ে লড়াই করবে।’