আজকাল ওয়েবডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এইচ-১বি ভিসার জন্য এক লক্ষ ডলার ফি আরোপের সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়তে হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত বহু ভারতীয়কে। আচমকা এই নির্দেশিকায় পরিবার-পরিজন, দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়েছে অনেককেই। মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই ঘোষণার পরই বড় বড় প্রযুক্তি সংস্থা অ্যামাজন ও মাইক্রোসফট বিদেশে থাকা কর্মীদের দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসতে নির্দেশ দেয়। এরপর অনেকেই পরিবার-পরিজনকে মাঝপথে ফেলে, দীর্ঘদিনের পরিকল্পিত অনুষ্ঠান বাতিল করে ছুটতে শুরু করেন বিমানবন্দরের দিকে।
এই পরিস্থিতি ঘিরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এক রেডিট ব্যবহারকারী ‘সারামুচ’। তিনি লিখেছেন, ‘যারা সহানুভূতি দেখাচ্ছেন না, তাদের লজ্জা করা উচিত। আপনাদের তো আমার মাকে কাঁদতে দেখার দরকার ছিল না, তিনি কয়েক মাস পর আমাকে দেখতে যাচ্ছিলেন, কয়েক বছর পর আমাদের একসঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ হয়েছিল। কিন্তু সবকিছুই ভেস্তে গেল।’ এটা তো শুধুমাত্র একটা উদাহরণ। এরকম বহু ঘটনা শোনা যাচ্ছে কান পাতলেই। ওই রেডিট ব্যবহারকারী আরও জানান, ‘এটা অন্যায়। আমরা এর যোগ্য নই। মানসিক চাপ ভীষণ বেড়ে গেছে, পরিবার ভেঙে গেছে, গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত নষ্ট হয়েছে।’
উল্লেখ্য, এই ভিসা নির্দেশিকায় প্রথমে বিভ্রান্তি ছড়ালেও পরে হোয়াইট হাউস স্পষ্ট করে জানায়, দেশে ফেরার সময় এইচ-১বি ভিসাধারীদের থেকে এক লক্ষ ডলারের ফি নেওয়া হবে না। এটা শুধুমাত্র নতুন আবেদনকারীদের জন্য। এতে কিছুটা স্বস্তি মেলে ঠিকই, কিন্তু ততক্ষণে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছে। বহু এইচ-১বি ভিসাধারী জানিয়েছেন, শুক্রবার গভীর রাতে ট্রাম্পের ঘোষণার পর থেকে আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠায় কেটেছে তাদের সময়। কেউ কেউ বিমান ধরতে যাওয়ার মুহূর্তে খবর পেয়ে ভ্রমণ বাতিল করেছেন। এমনকি অনেকে নিজের বিয়ের অনুষ্ঠানও বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন।
এক ব্যক্তি জানান, ‘এটা তো ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার মতোই! কারও যদি বৈধ এইচ-১বি ভিসা থাকে, তবুও তাকে ঢুকতে দেওয়া হবে না, যদি না এক লক্ষ ডলার প্রদানের প্রমাণ থাকে। প্রক্রিয়াটা কী, শর্ত কী, কেউই জানে না। পুরোপুরি আতঙ্কের পরিবেশ।’ অন্য এক ভুক্তভোগী জানান, ‘মানুষজন বোর্ডিং লাইনে দাঁড়িয়ে, কেউ আবার নিজের বিয়েতে যাওয়ার আগের দিন, সবাই হঠাৎ ভ্রমণ বাতিল করছে। কারণ কেউ জানে না আসলে কী ঘটতে চলেছে।’ আমজনতার বক্তব্য, সরকারের স্পষ্ট নির্দেশনার অভাবে বহু পরিবার কার্যত দিশেহারা অবস্থায় পড়ে ছিল, যতক্ষণ না ট্রাম্প প্রশাসনের তরফে পরবর্তী ব্যাখ্যা আসে।
