আজকাল ওয়েবূডেস্ক: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার বদলা 'অপরেশন সিঁদুর'। চলতি বছরের মে মাসে ভারতীয় বাহিনীর 'হামলা'য় কেঁপে গিয়েছিল পাকিস্তান। পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তিতেই তা স্পষ্ট। প্রেসিডেন্ট স্বীকার করেছেন যে, 'অপরেশন সিঁদুর' অভিযানে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছিল। সেই সময়ে তাঁকে একটি বাঙ্কারে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।

শনিবার একটি জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় প্রেসিডেন্ট জারদারি বলেন, তাঁর সামরিক সচিব তাঁকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। সচিব তাঁকে বলেছিলেন যে, যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে, কারণ ভারতীয় বাহিনী জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে ২৬ জন নিরাপরাধ নাগরিক হত্যার বদলা নিচ্ছে। ভারতীয় বাহিনী সুনির্দিষ্ট হামলা চালাচ্ছিল, যা 'অপারেশন সিঁদুর' নামে পরচিত।

জারদারি বলেন, "আমার সামরিক সচিব আমার কাছে এসে বললেন, 'স্যার, যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে। চলুন বাঙ্কারে চলে যাই।'" তবে তিনি সেই পরামর্শ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন বলে জানান পাক প্রেসিডেন্ট।

পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে গড়ে ওঠা নয়'টি জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে ভারত ৭ই মে ভোরের দিকে 'অপারেশন সিন্দুর' অভিযান শুরু করে। ভারতীয় বাহিনীর তরফে এই হামলাগুলোকে সুনির্দিষ্ট ও সীমিত বলে বর্ণনা করা হয়। এই হামলার লক্ষ্য ছিল সন্ত্রাসবাদী পরিকাঠামো দুর্বল করা এবং ভবিষ্যতে আরও হামলা প্রতিরোধ করা।

এই পদক্ষেপের ফলে পরিস্থিতি তীব্রভাবে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, পাকিস্তান সীমান্তজুড়ে গোলাবর্ষণ বাড়িয়ে দেয় এবং ভারত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর এর জবাব দেয়। এই পরিস্থিতি দুই দেশের মধ্যে একটি বৃহত্তর সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল।

প্রেসিডেন্ট জারদারি বলেন, তিনি ঘটনার কয়েক দিন আগেই এই উত্তেজনার আশঙ্কা করেছিলেন, কিন্তু তাঁকে বাঙ্কারে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। তার এই মন্তব্য সংকটের সময় পাকিস্তানের শীর্ষ নেতৃত্বের উদ্বেগের প্রকাশ পেল।

পাকিস্তানের সামরিক অভিযানের ডিআইজি ভারতীয় সেনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয়। ভারত এই প্রস্তাব গ্রহণ করে। তারপর যুদ্ধ পরিস্থিতি প্রশমিত হয়। পরে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্রি পাকিস্তানি পক্ষের এই যোগাযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং বলেন যে- উভয় দেশ স্থল, সমুদ্র ও আকাশে সমস্ত সামরিক অভিযান বন্ধ করতে সম্মত হয়েছে।

ভারতের এই প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপটি ছিল ২২শে এপ্রিলের পহেলগাঁওয়ের সন্ত্রাসবাদী হামলার পর, যার জন্য নয়াদিল্লি আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদকে দায়ী করেছিল এবং এর ফলে সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপের দাবি ওঠে। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগে মে মাসের এই হামলাগুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে অন্যতম গুরুতর সামরিক সংঘাতের ঘটনা ছিল।