আজকাল ওয়েবডেস্ক: চিনের কিছু সুলভ শৌচালয়ে টয়লেট পেপারের অপচয় রোধে এক বিতর্কিত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ‘দ্য মেট্রো’-র রিপোর্ট অনুযায়ী, এখন থেকে ব্যবহারকারীদের টয়লেট পেপার পেতে হলে আগে বিজ্ঞাপন দেখতে হবে। অনলাইনে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, শৌচাগারের ভেন্ডিং মেশিনে থাকা একটি কিউআর কোড স্ক্যান করতে হচ্ছে। এরপর একটি ছোট বিজ্ঞাপন দেখা শেষ হলেই মেশিন থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টিস্যু বেরিয়ে আসছে। তবে বিজ্ঞাপন না দেখে সরাসরি পেপার পেতে চাইলে দিতে হবে ০.৫ ইউয়ান (প্রায় ৫ টাকা)। এই উদ্যোগকে অনেক নেটিজেনই “ডিস্টোপিয়ান” বলে কটাক্ষ করেছেন। তাঁদের দাবি, টয়লেট পেপারের অপব্যবহার ও অতিরিক্ত ব্যবহার বন্ধের নামে সাধারণ মানুষের অসুবিধে বাড়ানো হচ্ছে। বিশেষ করে মোবাইল ফোনের চার্জ ফুরিয়ে গেলে, ইন্টারনেট না থাকলে বা খুচরো টাকা না থাকলে জরুরি পরিস্থিতিতে টিস্যু না পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। উল্লেখ্য, এর আগেও চিন একই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিল।

২০১৭ সালে বেজিংয়ের টেম্পল অফ হেভেন পার্কে ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তির টয়লেট পেপার ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়। সেই মেশিনও নির্দিষ্ট পরিমাণ টিস্যু দিত এবং একই ব্যক্তিকে নতুন করে পেপার পেতে অন্তত ৯ মিনিট অপেক্ষা করতে হত। যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, এই নতুন পদ্ধতি টয়লেট পেপারের অপচয় কমায়। অনেক সাধারণ মানুষ বলছেন, তাঁরা বরং নিজেদের টিস্যু সঙ্গে রাখাই সুবিধাজনক মনে করছেন, অসুবিধা ও লজ্জাজনক পরিস্থিতি এড়াতে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি ব্রেন ইটিং অ্যামিবা নিয়ে সংবাদ শিরোনামে এসেছিল চিন। গত ২২ আগস্ট দক্ষিণ চিনের ফুজিয়ান প্রদেশের এক মহিলা সামাজিক মাধ্যমে জানান, তার পাঁচ বছর বয়সী মেয়ের মৃত্যু হয়েছে প্রাইমারি অ্যামিবিক মেনিঙ্গোএনসেফালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে। মেয়ে আইসিইউতে টানা ৫০ দিনেরও বেশি সময় চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যায়। তিনি জানান, জুন মাসে মেয়ে সাঁতার কাটতে গিয়েছিল এবং দু’বার গরম জলের ঝরনাতেও গিয়েছিল।

২২ জুন থেকে তার মাথাব্যথা, হালকা জ্বর ও বমি শুরু হয়।  ২৭ জুন তাকে এই রোগে আক্রান্ত বলে শনাক্ত করা হয়। এর আগে ১১ আগস্ট আনহুই প্রদেশের আরেক মহিলা জানান, তার ছয় বছরের ছেলে একই সংক্রমণে মারা গেছে। মনে করা হচ্ছে, জুনের মাঝামাঝি সময়ে কিন্ডারগার্টেনে জলের সঙ্গে খেলার সময় অথবা এপ্রিল মাসে নদীর পাড়ে মাছ ধরার সময় সে সংক্রমিত হয়েছিল। চিনের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের জাতীয় পরজীবীবিদ্যা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষক ড. লু ইয়ান জানান, এই রোগ সৃষ্টি হয় তথাকথিত “ব্রেইন-ইটিং” অ্যামিবা দ্বারা। এগুলো এককোষী জীব, যেগুলো গরম জলে যেমন লেক, নদী ও উষ্ণ প্রস্রবণ—তেমনি মাটি ও কাদাতেও বেঁচে থাকে। মানুষ যখন মিঠে জল, অপরিশোধিত সুইমিংপুল বা উষ্ণ প্রস্রবণে সাঁতার কাটে, ডুব দেয় বা খেলে তখন এগুলো নাক বা মুখ দিয়ে শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এরপর এগুলো মস্তিষ্কে পৌঁছে টিস্যু নষ্ট করে মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। প্রাথমিক উপসর্গের মধ্যে রয়েছে ত্বকের ক্ষত, জ্বর, মাথাব্যথা ও বমি।