আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের বৃহত্তম ই-কমার্স সংস্থাগুলি এবার উৎসব-বিক্রয় শুরু হওয়ার বিষয়ে বিভ্রান্ত। প্রতি বছরের মতো, এবারও ফ্লিপকার্টের 'বিগ বিলিয়ন ডেজ' এবং অ্যামাজনের 'গ্রেট ইন্ডিয়ান ফেস্টিভ্যাল সেল' সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শুরু হওয়ার কথা, তবে জিএসটি কাউন্সিলের সভা বসবে আগামী সেপ্টেম্বরের তিন বা চার তারিখ। সেই সভায় জিএসটি স্ল্যাব পরিমার্জন নিয়ে পর্যালোচনা হবে। আপাতত এই দুই সংস্থাই তাই সেই সভার দিকেই তাকিয়ে রয়েছে।

উৎসবের মরশুম ই-কমার্স সংস্থাগুলির জন্য বছরের সবচেয়ে বড় উপলক্ষ। ফ্লিপকার্ট এবং অ্যামাজনের মতো সংস্থাগুলি এই সময়ে বিশাল ছাড়ের মাধ্যমে গ্রাহকদের আকর্ষণ করে। তবে এবার সমস্যা হল সরকার তেসরা বা চৌঠা সেপ্টেম্বর জিএসটি স্ল্যাবে পরিবর্তনের কথা বিবেচনা করতে পারে। ২৮ শতাংশ কর কমানোর জল্পনা চলছে, বিশেষ করে বৃহৎ ইলেকট্রনিক এবং আসবাবপত্র পণ্যের উপর। করের হার কমানো হলে গ্রাহকরা কম দামে পণ্য কিনতে পারবেন এবং সংস্থাগুলির বিক্রয় বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সংস্থাগুলির দু'টি কৌশল
রিপোর্ট অনুসারে, একটি বড় ই-কমার্স সংস্থা সরকারের সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ রেখেছে। জিএসটি নিয়ে যাতে বিক্রয় পরিকল্পনা প্রভাবিত না হয় সেই সম্পর্কে সতর্ক তারা। তাদের বিশ্বাস, কর কমানোর বিলম্বের ফলে দামি পণ্য বিক্রি ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত প্রভাবিত হতে পারে। অন্যদিকে, আরেকটি বড় সংস্থা সরকারের সঙ্গে সরাসরি কথা না বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা বলছে, কর কমানো না হলে তারা অনেক বেশি ছাড় দিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করবে।

গ্রাহকদের অপেক্ষা এবং আশা
দ্বিধাগ্রস্ত গ্রাহকরাও। অনেকেই বর্তমানে কেনাকাটা বন্ধ করে দিচ্ছেন। তাদের লক্ষ্য, জিএসটি কমানো হলে যাতে তারা কম দামে পণ্য কিনতে পারেন সেদিকেই। ডাটাম ইন্টেলিজেন্সের প্রতিষ্ঠাতা সতীশ মীনার মতে, মানুষ বড় ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করছে ও বর্তমানে কেনাকাটা স্থগিত রেখেছে।

উৎসবের ব্যবসায় সম্ভাব্য প্রভাব
উৎসবের মরশুমে ব্যবসা প্রতি বছর দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ২০২৪ সালে, এই সংখ্যা ১ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছেছিল। আশা করা হচ্ছে যে, ২০২৫ সালের বিক্রয় প্রায় ১.২ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছে যাবে। যা গত বারের চেয়ে ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। তবে, সময়মতো কর কমানোর সিদ্ধান্ত না নেওয়া হলে, ব্যবসার এই বৃদ্ধি মাত্র পাঁচ থেকে সাত শতাংশে নেমে আসতে পারে।

সরকারের অবস্থান এবং সতর্কীকরণ
সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, জিএসটি কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত সম্মিলিতভাবে নেওয়া হবে। এছাড়াও, জনগণকে সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া গুজবের উপর ভিত্তি করে তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত না নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

কোম্পানিগুলির দ্বিগুণ প্রস্তুতি
বর্তমানে, ই-কমার্স কোম্পানিগুলি দু'টি ভিন্ন পরিকল্পনা তৈরি করছে। যদি কর কমানো হয়, তাহলে বিক্রয়ের তারিখ কিছুটা বাড়ানো হবে এবং দাম পরিবর্তন করা হবে। অন্যদিকে, যদি করের কোনও পরিবর্তন না হয়, তাহলে সংস্থাগুলি সময়মতো উৎসব বিক্রয় শুরু করবে। উৎসবের আসল আনন্দ কেবল ছাড়ের উপর নির্ভর করে না, বরং সরকারের সিদ্ধান্তের উপরও নির্ভরশীল।

আরও পড়ুন- মিউচুয়াল ফান্ডে একবার বিনিয়োগ করেই হতে পারেন কোটিপতি, জেনে নিন এই ছক