আজকাল ওয়েবডেস্ক: আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ পেরোলেই প্রতি বছর একই প্রশ্ন ঘুরে ফিরে আসে কারা আসলে দেরিতে রিটার্ন ফাইল করেন? নিয়মিত বেতনভোগী কর্মীরা, নাকি একাধিক ক্লায়েন্টের সঙ্গে কাজ করা ফ্রিল্যান্সার ও গিগ ওয়ার্কাররা?
তবে কর পেশাদারদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় কিছু আচরণগত প্রবণতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কোনও সরকারি তথ্য না থাকলেও আচরণগত দিক থেকে ইঙ্গিত মেলে। আয়কর দপ্তর এমন কোনও তথ্য প্রকাশ করে না, যেখানে বলা হয়েছে কোন শ্রেণির মানুষ সবচেয়ে বেশি দেরিতে রিটার্ন জমা দেন। তবে অভ্যাসগত আচরণ অনেক কিছু বোঝায়।
বেতনভোগীদের ক্ষেত্রে টিডিএস অনেক সময় স্বস্তি হয়ে দাঁড়ায়। একবার নিয়োগকর্তা কর কেটে নিলে অনেকেরই মনে হয় রিটার্ন ফাইল করা বাধ্যতামূলক নয়। অনেক বেতনভোগী ভাবেন, অতিরিক্ত কর না থাকলে বা কর কাটা হয়ে গেলে আইটিআর জমা দেওয়ার তাড়াহুড়ো নেই। এই ভুল ধারণার ফলে দেরিতে ফাইল করার জরিমানা, ক্ষতির সুযোগ হারানো এবং অতিরিক্ত নজরদারির মতো সমস্যাকে তাঁরা গুরুত্ব দেন না।
অনেকে আবার রিফান্ড পাওয়ার আশায় রিটার্ন জমা দেওয়াকে পিছিয়ে দেন, মনে করেন দেরিতে করলেও বিশেষ ক্ষতি নেই। উপরন্তু, ফর্ম ১৬ দেরিতে পাওয়া বা সংশোধিত ফর্ম ১৬ জুলাইয়ের শেষ দিকে বা পরে হাতে আসাও বেতনভোগীদের দেরিতে রিটার্নে ঠেলে দেয়।
ফ্রিল্যান্সার বা গিগ ওয়ার্কারদের তুলনায় বেতনভোগীরাই বেশি বেলেটেড রিটার্ন ফাইল করেন। একদল মনে করেন টিডিএস কেটে নেওয়া হলে আর কোনও দায় নেই, আবার আরেক দল সেকশন ৮৭এ–এর রিবেটের কারণে রিটার্ন ফাইল করাই প্রয়োজন মনে করেন না।
অন্যদিকে, ফ্রিল্যান্সার ও গিগ ওয়ার্কারদের সমস্যার ধরণ আলাদা। একাধিক ক্লায়েন্ট বা প্ল্যাটফর্ম থেকে বিভিন্ন সময়ে আয় আসায় বছরের শেষে প্রকৃত করযোগ্য আয় নির্ধারণ করাই কঠিন হয়ে পড়ে।
ডকুমেন্টেশনও বড় বাধা। ফর্ম ১৬এ, ইনভয়েস, খরচের হিসেব বা ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট অনেক সময় শেষ তারিখের কাছে গুছিয়ে পাওয়া যায় না। বিশেষ করে নতুন বা তরুণ গিগ ওয়ার্কারদের মধ্যে কর-সচেতনতার অভাবও বড় কারণ।
&t=220s
আয়ের সঠিক হেড নির্বাচন, সেকশন ৪৪এডি বা ৪৪এডিএ–র প্রযোজ্যতা এবং সঠিক আইটিআর ফর্ম বাছাই নিয়েও বিভ্রান্তি থাকে। এমনকি টিডিএস কাটা হলেও বা আয় ৮৭এ রিবেটের সীমার মধ্যে থাকলেও, অনেকেই মনে করেন রিটার্ন ফাইল করা অপ্রয়োজনীয়—যার ফলেই দেরি হয়।
সব মিলিয়ে দেরিতে রিটার্নের পেছনে কোনও একক গোষ্ঠী নয়, বরং ভুল ধারণা, নথিপত্রের জটিলতা এবং কর-সচেতনতার অভাবই প্রধান কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
