আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তর প্রদেশের ঝাঁসিতে হাড়হিম কাণ্ড। এক যুবতীর মস্তকবিহীন মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় রাজ্যজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সূত্রে জানা গিয়েছে যুবতীর নাম রচনা যাদব। বয়স ৩৫ বছর। রচনা যাদবকে হত্যা করেছে তাঁরই প্রেমিক। অভিযুক্ত প্রেমিক সঞ্জয় প্যাটেল। তিনি প্রাক্তন মহেবা গ্রামের প্রধান । হত্যাকাণ্ডে তাকে সহায়তা করে তার ভাতিজা সন্দীপ প্যাটেল এবং বন্ধু প্রদীপ ওরফে দীপক আহিরওয়ার। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়৷ প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে জানিয়েছে উত্তর প্রদেশ পুলিশ। শুরু করে তদন্ত৷ 

ঘটনার জেরে ঝাঁসি রেঞ্জের সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (SSP) বি.বি.জি.টি.এস মুর্থি জানিয়েছেন, রচনার সঙ্গে সঞ্জয়ের দীর্ঘ দিন প্রেমের সম্পর্ক ছিল। জানা গিয়েছে কিছুদিন পর রচনা তাঁকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। অপরদিকে অভিযুক্ত সঞ্জয় ইতিমধ্যেই বিবাহিত এবং দুই সন্তানের পিতা। স্বভাবতই তিনি এই প্রস্তাবে নারাজ ছিলেন, এবং যুবতী রচনা কে বিয়ে করতে রাজি হননি। পুলিশ জানিয়েছে, এরপর ৯ আগস্ট রচনাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। হত্যার পর তাঁর মৃতদেহ সাত টুকরো করে দুটি বস্তায় ভরে একটি কুয়োতে ফেলে দেয় অভিযুক্তরা। মৃতদেহ যাতে শনাক্ত করা না যায়, তার জন্য মাথা ও পা আলাদা করে ফেলে দেওয়া হয় লক্ষেরি নদীতে।

ঘটনার জেরে পুলিশি তদন্ত শুরু হয়৷ অবশেষে পুলিশ রচনার মৃতদেহ খুঁজে পায়। ১৩ আগস্ট কুয়ো থেকে উদ্ধার হয় রচনার বিকৃত মৃতদেহ। এরপর পুলিশকর্মীরা পুরো কুয়ো খালি করলেও মাথা উদ্ধার করা যায়নি। জানা গিয়েছে, স্থানীয়রা মৃতদেহ দেখে সন্দেহ করেন এটি রচনার হতে পারে। তাঁরাই খবর দেন রচনার ভাই দীপক যাদবকে। দীপক মধ্যপ্রদেশের টিকমগড় জেলার বাসিন্দা।

পুলিশ রচনার মোবাইল কল রেকর্ড থেকে জানতে পারে, রচনার সঙ্গে সঞ্জয়ের ঘন ঘন কথা হতো। এই সূত্র ধরে সঞ্জয়ের বাড়িতে রাতের অন্ধকারে হানা দেয় পুলিশ এবং জিজ্ঞাসাবাদে সে শেষমেশ প্রেমিকা কে হত্যার কথা স্বীকার করে।

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, রচনা মালওয়ারা উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসির এক গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। জানা গিয়েছে, তিনিও এর আগে দু’বার বিয়ে করেন। প্রথম পক্ষের বিয়ে থেকে তাঁর দুটি সন্তান আছে। দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গেও বিচ্ছেদ হলে তিনি মহেবা গ্রামের শিবরাজ যাদবের সঙ্গে বসবাস শুরু করেন। খবর অনুযায়ী, ২০২৩ সালে রচনা শিবরাজ ও তাঁর দাদার বিরুদ্ধে যৌতুক নিপীড়ন, ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেন। চলতি বছরের জুন মাসে শিবরাজ মারা গেলে, সঞ্জয়ের ওপর বিয়ের চাপ বাড়ান রচনা।

আরও পড়ুনঃ টানতে টানতেও বেরোচ্ছিল না, 'ওইটা'র জন্য ইউটিউবের শরণাপন্ন যুবতী! ভিডিও ভাইরাল হতেই চোখ ছানাবড়া ...

রচনা হত্যার মামলায় পুলিশ সঞ্জয় ও সন্দীপকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করেছে। অভিযুক্ত তৃতীয় ব্যক্তি প্রদীপ এখনও পলাতক। তার খোঁজে পুরস্কার হিসেবে ২৫,০০০ টাকা নগদ ঘোষণা করেছেন এস এস পি মুর্থি। 

আরও পড়ুনঃ 'এ কী চাচা এটা কী করছেন?', চারিদিকে জল থৈ থৈ, এরই মাঝে প্রৌঢ় যা করে বসলেন, দাঁড়িয়ে দেখল শহরবাসী, ভিডিও ভাইরাল 

খবর অনুযায়ী, মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য পুলিশ দলকে পুরস্কৃত করেছেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। ঝাঁসি রেঞ্জের ডিআইজি কেশব চৌধুরী ৫০,০০০ টাকা, এসপি আরএ ড. অরবিন্দ কুমার ২০,০০০ টাকা এবং এসএসপি মুর্থি আরও ২০,০০০ টাকা পুরস্কার দেন। এই পুলিশ দলে ছিলেন এস ডব্লিউ এ টি (SWAT) ইনচার্জ জিতেন্দ্র তাক্কার, রাজত সিংহ, শৈলেন্দ্র, হর্ষিত, দুর্গেশ কুমার, রাজনীশ এবং আতুল রাজপুত। তাঁরা টোডি ফতেহপুর থানার সদস্য।