আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিরাট কোহলি বা রোহিত শর্মা নন, ইরফান পাঠানকে আইপিএলের ধারাভাষ্য থেকে সরাতে চেয়েছিলেন হার্দিক পাণ্ডিয়া।
২০২৫ সালের আইপিএলের ধারাভাষ্য প্যানেল থেকে বাদ পড়েন পাঠান। ভারতের প্রাক্তন অলরাউন্ডার ধারাভাষ্য দেওয়ার সময়ে ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত ভাবে সমালোচনা করেন। এমনটাই অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। সেই পাঠান এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ''১৪ টা ম্যাচের মধ্যে যদি সাতটা ম্যাচে আমি পাণ্ডিয়াকে সমালোচনা করে থাকি, তাহলেও বলব আমি নম্রই। ধারাভাষ্যকার হিসেবে এটাই তো আমাদের কাজ।''
পাণ্ডিয়া ও তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিগত কোনও রেষারেষি নেই। নেই সমস্যাও। পাঠান বলছেন, ''কোনও শত্রুতা নেই আমাদের মধ্যে। আমার পরে বরোদার যে সব খেলোয়াড় এসেছে-দীপক হুদা, ক্রুণাল পাণ্ডিয়া বা হার্দিক পাণ্ডিয়া-কেউই বলতে পারবে না যে ইরফান ও ইউসুফ সাহায্য করেনি।''
২০১২ সালে পাঠানই সানরাইজার্স হায়দরাবাদের কাছে পাণ্ডিয়ার নাম তদ্বির করেন। স্টার স্পোর্টস চ্যানেলে দেশের প্রাক্তন ক্রিকেটার ভিভিএস লক্ষ্মণ বলেছিলেন, সেই সময়ে পাঠানের কথা শুনিনি। তাই হায়দরাবাদও নেয়নি হার্দিককে। সেই সময়ে হার্দিককে নিলে হায়দরাবাদের হয়েই খেলত হার্দিক।
পাঠান জানান, পাণ্ডিয়ার কঠিন সময়ে তিনি তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। ব্যাখ্যা করে দেশের প্রাক্তন ক্রিকেটার বলছেন, ''খেলোয়াড়ের সমালোচনা করা অন্যায় কিছু নয়। খেললে সমালোচনা তো হবেই। সুনীল গাভাসকরের সমালোচনা হয়েছে। গ্রেট শচীন তেণ্ডুলকরেরও হয়েছে। খেলার ঊর্ধ্বে কেউ নয়, এটাই ওরা বুঝিয়েছিলেন। পাণ্ডিয়ার বিরুদ্ধে খারাপ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছিল, আমি সেটাকে সমর্থন করতে পারি না।''
এহেন পাঠান মজার এক গল্প শুনিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ''২০০৬ সালের সফরে আমরা করাচি থেকে লাহোর যাচ্ছিলাম। দুই দল একই ফ্লাইটে ছিল। আফ্রিদি আমার চুল এলোমেলো করে দিয়ে বলল, কেমন আছো বাচ্চা ছেলে? শিশুর মতো আচরণ করছিল আফ্রিদি।''
আফ্রিদিকে দারুণ জবাব দেন পাঠান। তিনি গল্প করছিলেন পাকিস্তানের অলরাউন্ডার আবদুল রজ্জাকের সঙ্গে। রজ্জাককে পাঠান বলেন, '' আমি রজ্জাককে জিজ্ঞাসা করলাম, পাকিস্তানে কোন ধরনের মাংস পাওয়া যায়। রজ্জাক আমাকে বিভিন্ন ধরনের মাংসের কথা বলে। আমি জানতে চাই, কুকুরের মাংস পাওয়া যায় কি না। রজ্জাক তা শুনে অবাক হয়ে গিয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করে, এরকম বলছো কেন?''
পাঠান জানান, “আফ্রিদি কুকুরের মাংস খেয়েছে। এই কারণেই ঘেউ ঘেউ করছে।'' পাঠানের এই কথা শুনে আফ্রিদি চুপ করে যান। কথা বলতে পারেননি। কথার লড়াইয়ে পাঠান সেদিন হারিয়ে দিয়েছিলেন আফ্রিদিকে।
রামধনুর মতো বাঁক খাওয়ানো সুইংয়ে পাকিস্তানের তারকা ব্যাটাররা কুপোকাত। ২০০৬ সালে করাচির ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে সলমন বাট, ইউনিস খান ও মহম্মদ ইউসুফকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ইরফান পাঠান। তবুও সেটা নাকি তাঁর পছন্দের মুহূর্ত নয়। প্রথম ওভারেই হ্যাটট্রিক একমাত্র পাঠানই করেছেন। সেই রেকর্ড এখনও পর্যন্ত কেউ ভাঙতে পারেননি।
কিন্তু স্মরণীয় মুহূর্তের ঝাঁপি খুলতে বসলে পাঠান অন্য পারফরম্যান্সের কথা তুলে ধরলেও করাচি টেস্টের প্রথম ওভারে হ্যাটট্রিকের প্রসঙ্গ টানেন না। কেন? বাঁ হাতি প্রাক্তন পেসার বলেন, ''পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওই হ্যাটট্রিক আমার জীবনের মোটেও স্মরণীয় মুহূর্তগুলোর মধ্যে পড়ে না। ওই ম্যাচ নিয়ে আমি বেশি কথাও বলি না। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল নিয়ে আমি খুশি মনে কথা বলি। ২০০৪ সালে ১৯ বছর বয়সে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজ নির্ণায়ক ম্যাচে আমি তিন উইকেট নিয়েছিলাম। সেটা অন্যতম স্মরণীয় মুহূর্ত। সেই ম্যাচের কথা বলি আমি। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে পারথ টেস্টে ম্যাচের সেরা হয়েছিলাম। সেই ম্যাচ নিয়ে কথা বলি। কারণ ওই ম্যাচগুলোয় আমরা জিতেছিলাম।''
আরও পড়ুন: 'ইস্টবেঙ্গলকে পরোয়া করি না, ডার্বির টিকিট কোথায় পাব?' সাংবাদিকদের প্রশ্ন কামিন্সের
